মন্ত্রীর ঘোষণা, তবু কাজ পাননি ৪১৯ জন

মাস তিনেক আগে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অর্থ দফতরের অনুমোদন ছাড়াই ৪১৯ জনকে চাকরিতে নিয়োগ করায় ধমকেছিলেন হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র রথীন চক্রবর্তীকে।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৫০
Share:

—ফাইল চিত্র।

হাওড়া পুরসভায় কাজ হারানো ৪১৯ জন অস্থায়ী কর্মীকে পুরমন্ত্রী ‘মৌখিক ভাবে’ পুনর্নিয়োগের কথা ঘোষণা করেছিলেন গত ১৩ নভেম্বর। কিন্তু এক সপ্তাহ পরেও সম্পূর্ণ অন্ধকারে ওই ৪১৯ জন কর্মী। তাঁরা না ফিরে পেয়েছেন চাকরি, না পেয়েছেন আশ্বাস। তবে সূত্রের খবর, পুরমন্ত্রীর নির্দেশ মতো পুর কমিশনার বিজিন কৃষ্ণ পুনর্নিয়োগের ব্যাপারে আট দিন পরে বৃহস্পতিবার একটি প্রকল্প-প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। সেই প্রস্তাব পুর দফতরের অনুমোদন পাওয়ার পরে অর্থ দফতরের অনুমোদন পেলে নিয়োগ শুরু হবে।

Advertisement

মাস তিনেক আগে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অর্থ দফতরের অনুমোদন ছাড়াই ৪১৯ জনকে চাকরিতে নিয়োগ করায় ধমকেছিলেন হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র রথীন চক্রবর্তীকে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘মৌখিক ভাবে’ সরকারি কোনও কাজ করা যায় না। কিন্তু গত ১৩ নভেম্বর পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম হাওড়া পুরসভায় এসে মৌখিক ভাবেই জানিয়েছিলেন, ওই ৪১৯ জনকে বিশেষ ‘স্কিম’ করে স্পেশাল সুপারভাইজার পদে নিয়োগ করা হল। স্বাস্থ্য ও সাফাই বিভাগে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণ-সহ বিভিন্ন কাজে লাগানো হবে তাঁদের।

মন্ত্রীর এই ঘোষণার পরের দিনই হাওড়ার শরৎ সদনে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের নেতৃত্বে ডেঙ্গি সংক্রান্ত একটি কর্মশালা হয়। সেখানে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয় ওই ৪১৯ জনকে। কিন্তু তার পর থেকেই পুরসভার সিঁড়িতে বসে থাকা ওই কর্মীদের আর কোনও কাজ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।

Advertisement

অস্থায়ী কর্মীদের তরফে শ্রীনিবাস বসু বলেন, “আমরা গোটা বিষয়টি নিয়ে অন্ধকারে। আমাদের নিয়োগের ব্যাপারে ঘোষণা হল। প্রশিক্ষণও দেওয়া হল। কিন্তু তার পরে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, তা জানতে পারছি না।”

এ বিষয়ে রাজ্য সরকার ও পুরসভার ভূমিকায় ক্ষুব্ধ পুর কর্মচারীরাও। তাঁদের ইউনিয়নের এক নেতা বলেন, “ওই ৪১৯ জনের মধ্যে অনেেকই উচ্চশিক্ষিত। তাঁদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা ঠিক হচ্ছে না।’’

ওই কর্মীদের অভিযোগ, প্রায় এক বছরের বেশি কাজ করার পরে মাত্র চার মাসের বেতন দেওয়া হয়েছে তাঁদের। এর পরেই তাঁদের চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়ায় কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়। কাজ হারানো ওই কর্মীদের প্রশ্ন, মন্ত্রী তা হলে পুনর্নিয়োগের কথা ঘোষণা করলেন কেন? আগাম কোনও পরিকল্পনা না করে বা অর্থ দফতরের অনুমতি না নিয়ে তিনি কী করে মৌখিক ভাবে নিয়োগের কথা ঘোষণা করলেন?

এ ব্যাপারে পুর কমিশনার বলেন, “ওই ৪১৯ জনের ব্যাপারে একটা স্কিম তৈরি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সেটি পুর দফতরে পাঠানো হয়েছে। রাজ্য সরকারের কাছ থেকে সবুজ সঙ্কেত পেলেই ওই অস্থায়ী কর্মীদের নিয়োগ করব।’’ কিন্তু সেটির অনুমোদন আসতে কত দিন লাগবে, তা জানাননি তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন