ধাবা মালিকের সাহায্যে অসহায় শিশু হোমে

মেয়েটার বয়স মেরেকেটে তিন থেকে সাড়ে তিন বছর। ধাবার বেঞ্চে তাকে বসিয়ে রেখেই উধাও হয়ে যান সঙ্গে থাকা ব্যক্তি। ধাবা মালিক অবশ্য বাচ্চাটিকে ফেলে দেননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ভদ্রেশ্বর শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৭ ০১:৪৭
Share:

নিরাপদে: অর্চনা। নিজস্ব চিত্র।

মেয়েটার বয়স মেরেকেটে তিন থেকে সাড়ে তিন বছর। ধাবার বেঞ্চে তাকে বসিয়ে রেখেই উধাও হয়ে যান সঙ্গে থাকা ব্যক্তি। ধাবা মালিক অবশ্য বাচ্চাটিকে ফেলে দেননি। তাকে যত্নআত্তি করে পুলিশের হাতে তুলে দেন তিনি। চাইল্ড লাইন শিশুটির পরিজনদের খোঁজ চালাচ্ছে।

Advertisement

হুগলির ভদ্রেশ্বরের বালাজি গেট এলাকায় দি‌ল্লি রোডের ধারে সঞ্জীব হাজরার ধাবা। তিনি জানান, গত শুক্রবার দুপুরে এক ব্যক্তি মেয়েটিকে নিয়ে ধাবায় যান। তবে কিছু কেনেননি। কিছুক্ষণ পরেই বাচ্চাটিকে বসিয়ে রেখে তিনি চলে যান।

সঞ্জীববাবু বলেন, ‘‘বাচ্চাটার পোশাক অপরিষ্কার ছিল। দেখে মায়া হল। স্নান করিয়ে খেতে দিই। তবে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরেও লোকটি ফিরে আসেননি।’’ শেষ পর্যন্ত সাতপাঁচ ভেবে সঞ্জীববাবু বাচ্চাটিকে বাড়িতে নিয়ে যান।

Advertisement

ওই দিন মেয়েটিকে নিজেদের বাড়িতেই রেখে দেন। পরের দিন দুপুরে তিনি এবং তাঁর স্ত্রী বাসন্তীদেবী মেয়েটিকে ভদ্রেশ্বরে থানায় নিয়ে যান। পুলিশ চাইল্ড লাইনে যোগাযোগ করে। চাইল্ড লাইনের লোকজন মেয়েটিকে সেখান থেকে নিয়ে যান। জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটিতে নিয়ে যাওয়া হলে তাদের নির্দেশে মেয়েটিকে হোমে পাঠানো হয়।

চাইল্ড লাইন সূত্রের খবর, মেয়েটি ভোজপুরি ভাষায় কথা বলছে। নিজের নাম বলছে অর্চনা। বাড়ির ঠিকানা বারাণসী। তবে সবকিছু পরিষ্কার করে বলতে পারছে না। সঙ্গের লোকটি মেয়েটির বাবা বলে ওই দফতরের লোকজনের ধারণা। চাইল্ড লাইনের আধিকারিকরা ওই ধাবা মালিক এবং তাঁর স্ত্রীর ভূমিকার প্রশংসা করছেন। তাঁদের বক্তব্য, ওই দম্পতি সচেতনতার পরিচয় দিয়েছেন। অসহায় শিশুটিকে ছেড়ে না দিয়ে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে গিয়েছেন। না হলে শিশুটির ক্ষতি হতে পারত। হুগলি জেলা চাইল্ড লাইনের আধিকারিক গোপীবল্লভ শ্যামল বলেন, ‘‘মেয়েটার পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। হোমে যত্নতেই রাখা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় ওর ছবি পাঠানো হয়েছে।’’

সঞ্জীববাবু বলছেন, ‘‘একরত্তি মেয়েটা যাতে বাবা-মায়ের কাছে ফিরতে পারে, আমরা সেটাই চাই। আমার এক ছেলে এক মেয়ে। তেমন হলে মেয়েটাকে আমরা দত্তক নিতেও রাজি। আমাদের সঙ্গে খুব মানিয়ে নিয়েছিল। একটি বারও কাঁদেনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন