শুধু বয়সের প্রাচীনত্ব নিয়ে নয়, হুগলির খানাকুলের রাজহাটির সেনহাট গ্রামের মিত্রবাড়ির দুর্গাপুজো বৈশিষ্ট্যেও অনন্য। দুশো বছরের বেশি পুরনো এই পুজোয় এখনও বলির প্রথা রয়েছে।
বাংলার ১২১০ সালে পুজো শুরু করেছিলেন পূবর্পুরুষ নন্দলাল মিত্র। সেই থেকেই মিত্রবাড়ির সন্ধিপুজো গ্রামের মানুষের কাছে একটা অন্যতম আকর্ষণ। একটি মাটির পাত্র বা হাঁড়িতে জল দেওয়া হয়। তারপর তার মধ্যে একটা ছিদ্র করা তামার পাত্র বা বাটি (তাম্বু) ভাসিয়ে দেওয়া হয়। জলভর্তি হয়ে ওই পাত্রটি ডুবতে ২৪ মিনিট সময় লাগে। দিনের বেলায় সন্ধিপুজো হলে সূর্যোদয় থেকে ওই সময় হিসাব করা হয়। আর রাতে হলে সূর্যাস্ত থেকে সময় হিসাব করা হয়। বলাবাহুল্য এর জন্য কোনও ঘড়ির সাহায্য নেওয়া হয় না। সন্ধিপুজোয় বলি দেওয়া হয় কালো রঙের পাঁঠা। বলির পর যার মাথাটি নবমীর গভীর রাতে পরিবারের দুই সদস্যের উপস্থিতিতে বাড়ির পিছনে পুকুরে ঈশান কোণে বুকসমান জলে দাঁড়িয়ে মাটিতে পুঁতে দেওয়া হয়। নবমীতে ৯টি পাঁঠা বলি দেওয়া হয়। দশমীতে নয়, মিত্রবাড়িতে মহিলারা সিঁদুর খেলেন সন্ধিপুজোর পর। পুজোর খরচ আসে দেবোত্তর সম্পত্তি থেকে। পুজোর আয়োজনে রয়েছে কমিটি। যার সম্পাদক রামমোহন মিত্র। দশমীতে গান গেয়ে দেবীকে নিয়ে গ্রাম পরিক্রমার পর বিসজর্ন দেওয়া হয় দেবীর নিজস্ব পুকুরে। ভারাক্রান্ত মনে গ্রামবাসী ঘরে ফিরে অপেক্ষায় থাকে পরের বছরের জন্য।