মদ খাওয়া নিয়ে ঝগড়া, শ্যালককে খুনের অভিযোগ

শ্বশুরবাড়িতে মদ খাওয়া নিয়ে বিবাদের জেরে শ্যালককে খুন করার অভিযোগ উঠল জামাইবাবুর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সকালে চুঁচুড়ার আনন্দমঠ এলাকায় শ্বশুরবাড়ি থেকে শ্যালক বাবলু বাগ (২৫) এর হাত বাঁধা অবস্থা ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শাশুড়ি আরতি দেবী জামাইয়ের বিরুদ্ধে ছেলেকে খুন করার অভিযোগ দায়ের করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৬ ০৪:১০
Share:

শ্বশুরবাড়িতে মদ খাওয়া নিয়ে বিবাদের জেরে শ্যালককে খুন করার অভিযোগ উঠল জামাইবাবুর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সকালে চুঁচুড়ার আনন্দমঠ এলাকায় শ্বশুরবাড়ি থেকে শ্যালক বাবলু বাগ (২৫) এর হাত বাঁধা অবস্থা ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শাশুড়ি আরতি দেবী জামাইয়ের বিরুদ্ধে ছেলেকে খুন করার অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে অমর শী নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃত যুবক খুনের কথা কবুল করেছে। একটি খুনের মামলা রজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।”

Advertisement

একচালা টালির বাড়িতে মা আরতীদেবীর সঙ্গে থাকতেন বাবলু। তিনি রঙের কাজ করতেন। মাঝেমধ্যে কাজ পেতেন। ছেলের কাজকর্ম ঠিকমত হত না বলে মাঝেমধ্যে মেয়েদের বাড়িতে গিয়ে থাকতেন তিনি। চুঁচুড়ার কাপাসডাঙার বাসিন্দা অমর ওরফে গঙ্গা এক ইমারতি দ্রব্যের গোলায় ট্রলিতে মাল সরবরাহের কাজ করতেন। মাঝেমধ্যে এসে শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে বাবলুর বনিবনা ভাল ছিল না বলে প্রতিবেশীরা জানান। তাঁরা জানান, কাজের শেষে মদ খেয়ে অমরের বাড়ি ফেরা নিয়ে প্রায়ই জামাই-শ্যালক ঝগড়া হতো। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত ৩০শে এপ্রিল নির্বাচনের দিন সারাদিন ঘরেই ছিলেন বাবলু। সেদিনও রাতে জামাইবাবুর মদ খাওয়া নিয়ে বাবলুর রাগারাগি শুনেছিলেন তাঁরা। কিন্তু পরদিন সকাল থেকেই বাবলুকে আর দেখেননি তাঁরা। তা ছাড়া আরতি দেবীও তখন বড় মেয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন।

এ দিন সকালে বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ বেরোতে দেখে প্রতিবেশীরা জড়ো হয়ে দেখেন দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। তাঁরা জানলার ফাঁক দিয়ে দেখেন ঘরের মধ্যে হাত বাঁধা, গলায় দড়ির ফাঁস লাগানো অবস্থায় বসিয়ে রাখা আছে বাবলুর দেহ। তাঁরাই পুলিশে খবর দেন। স্থানীয় বাসিন্দা ছবি বাগ জানান, ‘‘ছেলেটা খুব ভাল ছিল। জামাই যেদিন থেকে এই বাড়িতে থাকা শুরু করেছে সেইদিন থেকেই তার সঙ্গে মদ খাওয়া নিয়ে তর্কাতর্কি শুনতে পেতাম। কিন্তু তার জন্য ছেলেটাকে মেরে ফেলবে, ভাবতে পারছি না। জামাইয়ের যেন শাস্তি হয়।’’

Advertisement

পুলিশের অনুমান, কয়েকদিন আগেই হাত বেঁধে শ্বাসরোধ করে বাবলুকে খুন করা হয়। তারপর মৃতদেহের গলায় দড়ির ফাঁস লাগিয়ে ঘরের বাঁশের সাথে ঝুলিয়ে বসা অবস্থায় খাটের উপর রেখে দেওয়া হয়। এরপর দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে টালির চাল খুলে বেরিয়ে যায় অমর। কারণ, ঘরের চালের কয়েকটি টালি ভাঙা ছিল।

এ দিন ছেলের দুঃসংবাদ শুনে মেয়ের বাড়ি থেকে চলে আসেন আরতিদেবী। তিনি বলেন, ‘‘ছেলের কাজকর্ম ঠিকমত হতো না বলেই মাঝেমধ্যে মেয়েদের কাছে গিয়ে থাকতাম। ছেলে একাই বাড়িতে থাকত। মাঝেমধ্যে দিদিদের বাড়িতে খেতে যেত। কিন্তু কয়েকদিন আর যাচ্ছিল না। এদিন পাড়ার লোকেরা খবর দিলে জানতে পারি। জামাইয়ের মদ খাওয়া নিয়ে ওর আপত্তি ছিল। তা নিয়ে রাগারাগিও করত। কিন্তু জামাই ওকে কেন প্রাণে মেরে ফেলল বুঝতে পারলাম না। ওর যেন শাস্তি হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন