—প্রতীকী ছবি।
কুকুর কামড়ালে তার চিকিৎসার জন্য প্রতিটি হাসপাতালে একটি করে ‘অ্যান্টি র্যাবিস ক্লিনিক’ খোলার জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু হাওড়া জেলায় সেই কাজ বিন্দুমাত্র হয়নি বলে অভিযোগ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের।
জেলা হাসপাতাল থেকে শুরু করে গ্রামীণ হাসপাতাল এবং ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে প্রতিদিন অন্তত এক চতুর্থাংশ মানুষ আসেন কুকুর ও বেড়ালে কামড়ানোর প্রতিষেধক নিতে। এই অবস্থায় অ্যান্টি র্যাবিস ক্লিনিক খোলার প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে বলেই জানান জেলার চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস বলেন, ‘‘আলাদা করে অ্যান্টি র্যাবিস ক্লিনিক খোলা না হলেও কুকুর কামড়ানো ব্যক্তিদের চিকিৎসার সব ব্যবস্থা আছে। ফলে কোনও অসুবিধা হচ্ছে না।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, কুকুর কামড়ালেই প্রতিষেধক টিকা দেওয়ার দরকার নেই। কুকুরটিকে পর্যবেক্ষণ করতে হয়। তারপরে আসে প্রতিষেধক দেওয়ার প্রশ্ন। সম্প্রতি দেশজুড়ে এরআরভি-র যোগান কমছে। সেই কারণে থাকায় গণহারে প্রতিষেধক দেওয়ার ব্যাপারে চিকিৎসকদের ভেবে সিদ্ধান্ত নিতে বলছে কেন্দ্র ও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। শুধু তাই নয়, এরআৱভি-দেওয়ার পরেও যদি কোনও ব্যক্তি পরবর্তীকালে জলাতঙ্কে আক্রান্ত হন তাহলে তিনি স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন। সেক্ষেত্রে আদালতে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় রেকর্ড দাখিল করতে হয়। সেই কারণে কাউকে এআরভি দেওয়া হলে তার প্রয়োজনীয় রেকর্ড হাসপাতালে রাখতে হয়। এর জন্য প্রতিষেধক দেওয়ার আগে নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করতে হয় ফার্মাসিস্টকে। ফর্ম পূরণের কাজটি বেশ সময় সাপেক্ষ।
কিন্তু জেলার কোনও হাসপাতালে আলাদা করে অ্যান্টি র্যাবিস ক্লিনিক না থাকায় আক্রান্তদের হাসপাতালের বহির্বিভাগের অন্যান্য রোগীদের সঙ্গেই লাইন দিতে হয়। বহির্বিভাগ খোলা থাকে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত। বহির্বিভাগের সময় পেরিয়ে গেলে তাঁদের আসতে হয় পরের দিন। চিকিৎসককে দেখানোর পরে এআরভি সংগ্রহ করার জন্য যেতে হয় ফার্মাসিতে। সেখান থেকে নার্সদের কাছে যেতে হয় প্রতিষেধক নেওয়ার জন্য। ফার্মাসিতে কোনও আক্রান্ত যখন আসেন তখন ফার্মাসিস্টকে রেকর্ড রাখার জন্য ফর্ম পূরণ করতে হয়। এতে অনেকটা সময় চলে যায়।
শুধু তাই নয়, জখম ব্যক্তি চিকিৎসকের কাছে এলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে প্রতিষেধক নেওয়ার জন্য প্রেশক্রিপশন লিখে দেন। আলাদা করে ‘অ্যান্টি র্যাবিস ক্লিনিক’ খোলা হলে সেখানে চিকিৎসক রোগীর প্রতি বেশি মনোযোগ দিতে পারতেন। সব ক্ষেত্রে হয়ত প্রতিষেধক না দেওয়ার নিদানও দিতে পারতেন। কিন্তু বহির্বিভাগে অনেক রোগীর ভিড় থাকায় চিকিৎসকের পক্ষে আলাদা করে ওই জখম ব্যক্তির প্রতি মনোযোগ দেওয়া সম্ভব হয় না।