নথি চাইতেই উধাও চিকিৎসক, শুরু তদন্ত

চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ থাকা নিয়ে অবশ্য সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত এলাকার বোড়াল, ভান্ডারহাটি, গাবতলা, ইলামপুর ইত্যাদি ১৬টি গ্রামের মানুষের ক্ষোভ নেই। বরং তাঁরা অনেকেই ভুয়ো চিকিৎসক নিয়ে তদন্তের দাবি করেছেন। পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষও দাবি করেছেন ব্লক প্রশাসনের কাছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আরামবাগ শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৭ ১৩:০০
Share:

প্রতীকী ছবি।

জেলা প্রশাসন নথিপত্র চেয়ে পাঠাতেই হুগলির এক আয়ুষ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গা ঢাকা দেওয়ার অভিযোগ উঠল। হুগলির জাঙ্গিপাড়ার দিলাকাশ পঞ্চায়েতের শিশির চক্রবর্তী নামে ওই আয়ুষ চিকিৎসক সপ্তাহ খানেক ধরে পলাতক জানিয়ে ব্লক প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানালেন প্রধান রহুল আমিন। জাঙ্গিপাড়া বিডিও জামির আক্তার বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক তদন্ত করছেন।’’

Advertisement

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হুগলি পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর থেকে গত ১৬ জুন জেলার ১৮টি ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েতের আয়ুষ চিকিৎসকদের নথি চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়। আজ, শুক্রবার সেই রিপোর্ট জমা দেওয়ার শেষ দিন। সেই মতো প্রতি ব্লকের বিডিও এবং ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বাক্ষর করে পঞ্চায়েত প্রধানদের কাছে পাঠিয়ে দেন। দিলাকাশ পঞ্চায়েত প্রধান রহুল আমিনের অভিযোগ, ‘‘আয়ুষ চিকিৎসক শিশির চক্রবর্তী চিঠি নিচ্ছি বলে সেই যে পালালেন, আর দেখা যায়নি। বাড়িতে নোটিশ পাঠেয়েছি। সেখানে তালা বন্ধ।’’ পঞ্চায়েতে চিকিৎসা পরিষেবাও বন্ধ রয়েছে বলে তিনি জানান।

চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ থাকা নিয়ে অবশ্য সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত এলাকার বোড়াল, ভান্ডারহাটি, গাবতলা, ইলামপুর ইত্যাদি ১৬টি গ্রামের মানুষের ক্ষোভ নেই। বরং তাঁরা অনেকেই ভুয়ো চিকিৎসক নিয়ে তদন্তের দাবি করেছেন। পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষও দাবি করেছেন ব্লক প্রশাসনের কাছে। ব্লক প্রশাসন একটি সূত্রে জানতে পেরেছে শিশির চক্রবর্তী নামে ওই চিকিৎসক যে শংসাপত্র দেখিয়ে পঞ্চায়েতে নিয়োগ হয়েছেন সেই “কাউন্সিল অব হোমিওপ্যাথি মেডিসিন(পশ্চিমবঙ্গ)” নামাঙ্কিত শংসাপত্রটি ইস্যু হয়েছে ২০০৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি। রেজিস্ট্রেশন নম্বর ২৮৬৩০। তাঁর শিক্ষগত যোগ্যতায় লেখা ডিএইচএমএস। এদিকে ওই নম্বর কাউন্সিল অব হোমিওপ্যাথি মেডিসিন ওয়েবসাইটে সার্চ করলে দেখা যাচ্ছে ওই রেজিস্ট্রেশন নম্বর ছন্দা বিশ্বাস নামে নদিয়ার এক চিকিৎসকের।

Advertisement

বিষয়টি নিয়ে তদন্তকারী অফিসার তথা জাঙ্গিপাড়া ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভাশিষ শী বলেন, ‘‘ব্লকের অন্য পঞ্চায়েত থেকে আয়ুষ চিকিৎসকদের রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত নথি পাওয়া গেলেও দিলাকাশ পঞ্চায়েতের থেকে কোনও নথি আসেনি। শিশির চক্রবর্তী নামে ওই চিকিৎসক হাজিরাও দেননি। তাঁর রেজিস্ট্রেশন নিয়ে আমাদের সন্দেহ রয়েছে।”

আয়ুষ চিকিৎসকদের সংগঠন ‘প্রোগ্রেসিভ ডক্টর্স অ্যাসোশিয়েশন’-এর রাজ্য সম্পাদক তথা ভান্ডারহাটি-২ পঞ্চায়েতের আয়ুষ চিকিৎসক সমীর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযোগ সত্যি হলে প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘আয়ুষ চিকিৎসক নিয়োগ করেছে পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ দু’দফা সাক্ষাৎকার ডেকে চিকিৎসক নিয়োগ করেছে। তখন কেন খতিয়ে দেখা হয়নি!’’’ বিষয়টা নিয়ে জেলা পরিষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মৃদুল হালদার বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন