ডুমুরজলা স্টেডিয়াম, এখন যে অবস্থায়। — নিজস্ব চিত্র
প্রায় তিন দশক পরে নিজের আসল চেহারায় ফিরতে চলেছে হাওড়ার একমাত্র ইন্ডোর স্টেডিয়াম। এমনই দাবি হাওড়া পুরসভার।
বছর পঁচিশ আগে হাওড়ার ডুমুরজলায় তৈরি হওয়া স্টেডিয়ামটি খেলাধুলোর বদলে গান-বাজনার রিয়্যালিটি শো অথবা পড়ুয়াদের জন্য রাজ্য সরকারের দেওয়া নতুন সাইকেল রাখার গুদাম হিসেবে ভাড়া দেওয়া হচ্ছিল। কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হওয়া এই ইন্ডোর স্টেডিয়ামটিকে এ বার নতুন ভাবে গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার।
হাওড়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ওই স্টেডিয়াম পরিদর্শনে যান রাজ্যের পূর্ত ও ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। স্টেডিয়ামটিকে নতুন করে গড়ে তুলতে হাওড়া পুরসভাকে একটি সবিস্তার প্রকল্প-রিপোর্ট বা ডিপিআর তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তী জানান, ডুমুরজলা স্টেডিয়ামের ডিপিআর-এর জন্য রাজ্য সরকার পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। সেই টাকা পেয়ে পুরসভা সবিস্তার রিপোর্ট তৈরি করেছে। সেটি রাজ্য সরকারের কাছে জমা পড়ে গিয়েছে। এ বার অর্থ দফতরের অনুমোদন মিললেই শুরু হয়ে যাবে কাজ। রথীনবাবু বলেন, ‘‘শুধু ইন্ডোর স্টেডিয়ামটিই আন্তর্জাতিক মানের খেলার উপযুক্ত করে গড়ে তোলা হচ্ছে না, হাওড়া জুড়ে খেলাধুলোর উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করার উদ্দেশ্যে একটি ক্রিকেট অ্যাকাডেমি ও ফুটবল অ্যাকাডেমিও করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী এবং ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী তথা উত্তর হাওড়ার বিধায়ক লক্ষ্মীরতন শুক্ল— দু’জনেই উদ্যোগী হয়েছেন।’’
রাজ্যের পূর্ত ও ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘পুরসভার কাছে ডিপিআর চাওয়া হয়েছে। আমি বলেছি, স্টেডিয়ামে আসন-সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে। ডুমুরজলা স্টেডিয়াম গড়ে তুলতে হবে অনেকটা নেতাজি ইন্ডোরের ধাঁচে। তার জন্য সমস্ত খরচ দেবে রাজ্য সরকার।’’
হাওড়া পুরসভা সূত্রে খবর, স্টেডিয়ামের বর্তমান হাল গুদামঘরের মতো। সব চেয়ার ভেঙে গিয়েছে বা চুরি গিয়েছে। মেঝের কাঠের পাটাতন খোলা। ছাদ দিয়ে জল পড়ে। সর্বত্র আবর্জনা। পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি, এ কারণেই স্টেডিয়ামটি খোলনলচে বদলানো হবে। থাকবে আধুনিক মানের মেঝে, শীতাতপ-নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র। নতুন করে তৈরি হবে চেয়ার ও সিলিং। থাকবে প্রেস বক্সও। এ ছাড়া, অগ্নি-নিরাপত্তায় গড়ে তোলা হবে আধুনিক মানের নির্বাপণ ব্যবস্থা।
মেয়র জানান, ডুমুরজলা স্টেডিয়ামকে যাবতীয় আধুনিক সুবিধাযুক্ত করে গোড়া তোলা হচ্ছে, যাতে আন্তর্জাতিক মানের যে কোনও ইন্ডোর গেমস এখানে অনুষ্ঠিত হতে পারে। রাজ্য সরকারও তাই চায়। ডিপিআর-ও সে ভাবেই তৈরি করা হয়েছে। রথীনবাবু বলেন, ‘‘হাওড়ার রিং রোডকে ঘিরে এই স্টেডিয়াম ছাড়া যে ক্রিকেট অ্যাকাডেমি তৈরি হচ্ছিল, তার কাজও প্রায় শেষের মুখে। এ ছাড়া আরও একটি ফুটবল অ্যাকাডেমি এবং ওলাবিবিতলার বেজপুকুরে একটি আন্তর্জাতিক মানের সুইমিং পুল তৈরির কাজও শুরু হয়েছে।’’