ধৃত চিকিৎসক। নিজস্ব চিত্র
শহরের নানা প্রান্তে ঝুলছে তাঁর সাইনবোর্ড। নামের পাশে লেখা এমবিবিএস (এইচডি)। এবং প্রসূতি ও শিশু বিশেষজ্ঞ।
এতদিন রোগীদের কোনও সন্দেহ হয়নি। চেম্বারে গর্ভপাতও হতো। ভিড়ও হতো ভালই। কিন্তু সন্দেহ হয় পুলিশের। ভুয়ো ডাক্তারি ডিগ্রি ব্যবহার করে প্র্যাকটিসের অভিযোগে বুধবার রাতে হাওড়ার জগৎবল্লভপুরের বড়গাছিয়ার মতিয়ার রহমান মল্লিক নামে ওই ‘চিকিৎসক’কে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশের দাবি, জেরায় মতিয়ার জানিয়েছেন, তিনি মাধ্যমিক পাশ। এই নিয়ে চার দিনে হাওড়া গ্রামীণ এলাকা থেকে ভুয়ো ডিগ্রি ব্যবহারের অভিযোগে দুই চিকিৎসককে গ্রেফতার করা হল।
জেলা পুলিশ সুপার সুমিতকুমার বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে আমাদের মনে হয়েছে ধৃত ব্যক্তি ভুয়ো এমবিবিএস ডিগ্রি ব্যবহার করে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছিলেন। তাঁর কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা সব কাগজপত্র যাচাইয়ের জন্য বিশেষজ্ঞ সংস্থার কাছে পাঠানো হয়েছে।’’ ধৃতকে বৃহস্পতিবার হাওড়া আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁকে পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
তার চেম্বারের হোর্ডিং।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পঞ্চাশের মতিয়ার বড়গাছিয়ারই রায়দেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। অন্তত ১০ বছর ধরে সকাল বাজার এলাকায় ‘ন্যাশনাল ক্লিনিক’ নামে চেম্বার খুলে প্র্যাকটিস করছিলেন। ডোমজুড় এবং হুগলির জনাইতেও তাঁর চেম্বার রয়েছে। বড়গাছিয়ার চেম্বার থেকে তিনি সাধারণ মানুষের ‘প্যান কার্ড’ও করিয়ে দিতেন। এ সংক্রান্ত সাইনবোর্ডও রয়েছে।
তদন্তকারীদের দাবি, মতিয়ারের কাছ থেকে যে সব কাগজপত্র মিলেছে, তাতে দেখা গিয়েছে, তাঁর আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় একটি ডিপ্লোমা আছে। ১৯৮২ সালে সেই ডিপ্লোমা তিনি পেয়েছেন কলকাতার শাঁখারিতলা স্ট্রিট এলাকার একটি সংস্থা থেকে। চেম্বারে হানা দিয়ে এমবিবিএস (এইচডি) ডিগ্রি লেখা কিছু লেটারহেড মিলেছে। গর্ভপাত করানোর মতো উপযুক্ত ডিগ্রি সংক্রান্ত কোনও শংসাপত্র মেলেনি।