ঘুপচি ঘরে জাল ওষুধের শিশি

ঠিক এ ভাবেই এক ছোট্ট ঘুপচি ঘরে চলছিল ভেজাল সিরাপ তৈরির ব্যবসা। শুক্রবার হুগলির রিষড়ায় এমনই ‘ওষুধ’ তৈরির কারবারের চক্র ফাঁস হল পুলিশের অভিযানে

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রিষড়া শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৭ ০২:১০
Share:

ভেজাল: এই ভাবেই রাখা ছিল জাল ওষুধ। ছবি: প্রকাশ পাল।

মেরেকেটে আট ফুট বাই দশ ফুট একটা ঘর। অন্ধকার, স্যাঁতসেঁতে। সেখানে থরে থরে সাজানো শিশি। গায়ে নামী ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার লেবে‌ল। এক কোণে কয়েকটি বড় জ্যারিকেনে ভর্তি তরল। প্রচুর ফাঁকা শিশি, ছিপি, লেবেলও মজুত।

Advertisement

ঠিক এ ভাবেই এক ছোট্ট ঘুপচি ঘরে চলছিল ভেজাল সিরাপ তৈরির ব্যবসা। শুক্রবার হুগলির রিষড়ায় এমনই ‘ওষুধ’ তৈরির কারবারের চক্র ফাঁস হল পুলিশের অভিযানে। বাড়ির মালিক-সহ তিন জনকে আটক করা হয়েছে। তবে পলাতক অভিযুক্ত কারবারি। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রিষড়ার এনএস রোডের একটি দোতলা বাড়িতে ওই কারবার চলছিল।

শুক্রবার বেলা ১টা নাগাদ চন্দননগর কমিশনারেটের এসিপি কামনাশিস সেন এবং রিষড়া থানার ওসি প্রবীর দত্ত বাহিনী নিয়ে সেখানে হানা দেন। এক তলায় ঘরে ঢুকেই পুলিশকর্তাদের চক্ষু চড়কগাছ! ভর্তি এবং খালি মিলিয়ে কয়েক হাজার শিশি, ছিপি, লেবেল, জ্যারিকেন বাজেয়াপ্ত করা হল।

Advertisement

বাড়ির মালিক করুণা সাউয়ের দাবি, দিন কয়েক আগে তাঁর পরিচিত এক যুবকের মাধ্যমে রাকেশ নামে বছর সাইত্রিশের এক যুবক আলতা-সিঁদুরের ব্যবসা করবেন বলে ঘরটি ভাড়া নেন। করুণাদেবী বলেন, “উনি আমার সঙ্গে চুক্তি করেননি, নথি জমা দেননি। অগ্রিমও দেননি। পরিচিত যুবকের ভরসায় সেগুলো না নিয়েই ঘর খুলে দিয়েছিলাম। কিন্তু ঘরে যে এই সব হচ্ছিল, বুঝতে পারিনি।” ঘটনাস্থলে গিয়ে কামনাশিসবাবু বলেন, “যে পরিমাণ ভেজাল ওষুধ মজুত ছিল, তাতে অন্তত ৬ থেকে ৭ লক্ষ টাকার লেনদেন হতে পারত বলেই আমাদের ধারণা। চক্রটি কারা চালাচ্ছিল, আর কে কে জড়িত ছিল, সে সবই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” রিষড়া থানায় এফআইআর করে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশকর্তাদের বক্তব্য, লোক ঠকানোর কাজ তো চলছিলই, উপরন্তু যে পরিবেশে ও প্রক্রিয়ায় কাজ হচ্ছিল, তা অস্বাস্থ্যকর। বাজেয়াপ্ত হওয়া তরলে কী কী উপাদান রয়েছে, তা জানার চেষ্টা চলছে।

দু’মাস আগে ডানকুনিতে দিল্লি রোডে একটি ছোট ট্রাক থামিয়ে প্রচুর পরিমাণে ভেজাল ওষুধ বাজেয়াপ্ত করেছিল পুলিশ। এক জনকে গ্রেফতার করা হয়। প্রায় আট হাজার খালি শিশি, কয়েক হাজার ছিপি, ড্রামভর্তি প্রায় ১০০ লিটার লাল রঙের তরল বাজেয়াপ্ত হয়। শিশিতে দু’টি ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার লেবেল সাঁটা ছিল। কয়েক মাস আগে এনফোর্সমেন্ট ব্র্যাঞ্চ এবং ড্রাগ কন্ট্রোল শ্রীরামপুরের একটি দোকানে যৌথ অভিযান চালিয়ে ভেজাল ওষুধ বাজেয়াপ্ত করে। দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন