টানা বৃষ্টি, কপালে ভাঁজ চাষিদের

আগের বৃষ্টিতে ভেঙে যাওয়া বাঁধ এখনও মেরামত করা হয়নি। তার মধ্যেই ফের নিম্নচাপের বৃষ্টি। তিন দিন ধরে প্রায় একটানা বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হাওড়া, হুগলিতে। চিন্তায় মাথায় হাত পড়েছে চাষিদেরও।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:০১
Share:

আগের বৃষ্টিতে ভেঙে যাওয়া বাঁধ এখনও মেরামত করা হয়নি। তার মধ্যেই ফের নিম্নচাপের বৃষ্টি। তিন দিন ধরে প্রায় একটানা বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হাওড়া, হুগলিতে। চিন্তায় মাথায় হাত পড়েছে চাষিদেরও।

Advertisement

এই পরিস্থিতির মধ্যে জল ছাড়তে শুরু করেছে ডিভিসি। এতে ফের বন্যার আশঙ্কা করছেন উদয়নারায়ণপুর এলাকার বাসিন্দারা। সেচ দফতর সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ডিভিসি ৫৩ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছে। সেই জল বুধবার বিকেলে উদয়নারায়ণপুরে পৌঁছতেই দামোদর ফুলে উঠছে। তবে এ দিন ডিভিসি জল ছাড়ার পরিমাণ কমিয়েছে। তারা ৪৪ হাজার কিউসেক জল ছাড়ছে বলে সেচ দফতর সূত্রে খবর। তবে ফের বৃষ্টি হলেই জল ছাড়ার পরিমাণ ডিভিসি বাড়ালেই সমস্যা বাড়বে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।

গত বর্ষায় উদয়নারায়ণপুরে মনশুকা, কুর্চি-শিবপুর, হরিহরপুর. সেনপুর, শিবানীপুর, ঠাকুরানিচক, ঘোলা, ডিহিভুর-সহ ৭-৮টি জায়গায় দামোদরের বাঁধ ভেঙে গিয়েছিল। এখনও সেই সব জায়গার বাঁধ সারানোর কাজ শুরু হয়নি। ফলে ডিভিসির জল ওই সব ভাঙা জায়গা থেকে লোকালয়ে ঢুকতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সেচ দফতর ও স্থানীয় বাসিন্দারা। ফলে উদয়নারায়ণপুরে ফের বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আগের বৃষ্টিতে আমতা, উদয়নারায়ণপুরে চাষবাসে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যে সব জায়গায় ক্ষতি হয়নি সেখানে এ বার বৃষ্টিতে সব্জি-সহ বিভিন্ন চাষে ক্ষতির মুখে পড়ছেন এলাকাবাসী। প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বাঁধ সারানোর ব্যাপারে সেচ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘কয়েকটি জায়গায় বাঁধ সারানোর কাজ শুরু করা হয়েছে। কিন্তু টানা বৃষ্টির জেরে কাজ ব্যাহত হচ্ছে। তা ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় বাঁধ ভাঙার ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটাই বিচ্ছিন্ন। এই অবস্থায় বাঁধ মেরামতির জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আনার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সেচ দফতরকে।’’

Advertisement

বিডিও দেবাশিস চৌধুরী ও বিধায়ক সমীর পাঁজা বলেন, ‘‘বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’

প্রায় একই অবস্থা আরামবাগ মহকুমার খানাকুলেও। এ ক’দিন টানা বৃষ্টি এবং একই সঙ্গে রূপনারায়ণ নদীতে জল বাড়ায় খানাকুল ২ ব্লকের মাড়োখানা, ধান্যগোড়ী, জগৎপুর এবং রাজহাটি ১ পঞ্চায়েত এলাকা ফের জলমগ্ন হয়েছে। মাঠের জমি ইতিমধ্যেই ডুবে গিয়েছে। ক্রমশ রাস্তায় উঠছে জল। দিন পনেরো আগের বৃষ্টির জমা জল নামার পরে যাঁরা নতুন করে সব্জি চাষের উদ্যোগ নিচ্ছিলেন তা ফের জলের তলায় চলে গিয়েছে।

খানাকুল ২ ব্লকের বিডিও সুজিতকুমার রায় বলেন, ‘‘বুধবার বিকেল পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, নন্দনপুর ও বারনন্দনপুর এলাকার কিছু জায়গায় জল জমেছে। তবে তা আশঙ্কাজনক পরিস্থিতিতে এখনও পৌঁছয়নি।’’

হুগলি জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, রূপনারায়ণ ছাড়া মুণ্ডেশ্বরী, দামোদর, দ্বারকেশ্বরে তেমন জলের চাপ নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন