ব্যবস্থা: মশার লার্ভা মারতে ছড়ানো হচ্ছে তেল। —নিজস্ব িচত্র
দিন কয়েক আগে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল চণ্ডীতলার গঙ্গাধরপুর পঞ্চায়েতের স্কুলছাত্র সুমন দাসের। এলাকায় আবর্জনা সাফাই, পুকুর সংস্কারে পঞ্চায়েতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তারপরেও সেই কাজে গতি আসেনি বলে অভিযোগ। এলাকার অনেকেই জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। শনিবারই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত সুমনের জেঠিমা সুলেখাদেবীকে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে বলে পরিবার জানিয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এ দিন গঙ্গাধরপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৪০ জনের রক্তের নমুনা নেওয়া হয়েছে ডেঙ্গি পরীক্ষার জন্য। সুলেখাদেবীও কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। শুক্রবার শিয়াখালার একটি নার্সিংহোমে তাঁর রক্তের ‘ম্যাক এলাইজা’ পরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পড়ে বলে পরিবারের দাবি। শনিবার স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য জ্যোতি আদকের উদ্যোগে গ্রামে মশা মারার তেল, ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো হয়। পরে পঞ্চায়েতের তরফেও লোক পাঠানো হয়। পঞ্চায়েতের দাবি, আবর্জনায় ভর্তি একটি পুকুরও পরিষ্কার করানো হয়েছে।
কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সার্বিক ভাবে পুকুর সংস্কারে এখনও উদ্যোগী হয়নি পঞ্চায়েত। মশা মারার ব্যবস্থাও করা হয়নি। সেই কারণেই ডেঙ্গির জীবাণুবাহী মশা জন্মাচ্ছে। সুমনের বাবা স্বপনবাবু বলেন, ‘‘এলাকার বেশিরভাগ পুকুর অপরিষ্কার। পঞ্চায়েত আবর্জনা পরিষ্কার করে না।’’
পঞ্চায়েত প্রধান কাবেরী দাস এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি স্থানীয় বিএমওএইচ বিশ্বজিৎ দাসও। জেলা স্বাস্থ্য দফতররের কর্তাদের বক্তব্য, এলাকায় মশা মারার তেল ছড়ানো, জলের উৎস পরিস্কার রাখা, জল জমতে না-দেওয়া— এই সব কাজে পঞ্চায়েতের ভূমিকা জরুরি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ওখানে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে কাজ শুরু হয়েছে।
অন্য দিকে, পোলবার ভাটুয়া এলাকাতেও কয়েক জন জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। এ দিন ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে ওই গ্রামে যান স্থানীয় বিধায়ক অসিত মজুমদার। তিনি জানান, তিন জন হাসপাতালে ভর্তি। তাঁদের বাড়িতেও যান বিধায়ক। তিনি বলেন, ‘‘আমি প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলছি। মশা মারার তেল ছড়ানো-সহ সমস্ত পদক্ষেপ যাতে করা হয়, সেই ব্যবস্থা করা হবে।’’
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওখানে কয়েক জন জ্বরে আক্রান্ত, এটা ঠিক। তবে ডেঙ্গির খবর নেই।’’ তিনি জানান, পঞ্চায়েত এবং পুরসভার তরফে সংশ্লিষ্ট এলাকায় ডেঙ্গি রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতর পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে।