আগুন নেভার পরে। শুক্রবার। — নিজস্ব চিত্র
মাত্র ২০ ঘণ্টা আগে আগুন লেগেছিল। তাতেও হুঁশ ফেরেনি। দ্বিতীয় বার আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হল হাওড়ার টাউন হলের একটি অংশ। ছাই হয়ে গেল হলের পিছনে থাকা পুরনো ফার্স্ট ক্লাস মিউনিসিপ্যাল কোর্টের রেকর্ড রুম ও এজলাস। এর পিছনে অন্তর্ঘাত রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখতে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য দমকলমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছে হাওড়া পুরসভা।
পুরসভা সূত্রে খবর, হাওড়া পুর ভবনের ভিতরে টাউন হলের দোতলার একাংশে দীর্ঘ দিন ধরে মিউনিসিপ্যাল কোর্ট বসে। হাওড়া আদালতের বর্ধিত (এক্সটেন্ডেড) ওই অংশে পুরসভার মামলা ও ফৌজদারি মামলার বিচার হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালত সংলগ্ন শৌচাগারের আবর্জনায় প্রথম আগুন লাগে। ধোঁয়ায় ভরে যায় মেয়র পারিষদ-সহ পুরসভার বিভিন্ন ঘর। কিছুক্ষণের মধ্যে পুরকর্মীরা আগুন নেভান।
শুক্রবার ফের আগুন লাগে ওই কোর্টেরই রেকর্ড রুমে। আদালত সূত্রে খবর, ঘটনার সময়ে এজলাসে বিচারপতি উপস্থিত ছিলেন। রেকর্ড রুম থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখে আতঙ্কে সকলে বেরিয়ে আসেন। আগুন ছড়ায় এজলাসের মধ্যে। রেকর্ড রুমের ফাইল, পুরসভার নথি, কম্পিউটার-সহ আলমারি পুড়ে যায়। পুরসভার বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পুর-ট্যাঙ্কার থেকে জল এনেও আগুন নির্বাপণের চেষ্টা হয়। পরে দমকলের দু’টি ইঞ্জিন যায়। এক ঘণ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
নিরাপত্তার কারণে পুরসভায় বিচ্ছিন্ন করা হয় বিদ্যুৎ সংযোগ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুরসভার এক অফিসার বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার আগুন লাগার পরে তদন্তের প্রয়োজন ছিল। কেন হল না, বুঝতে পারছি না। আগুন লাগার সঠিক তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।’’
পুর কমিশনার নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের সর্তক হওয়া উচিত ছিল। অগ্নিকাণ্ডের পিছনে অন্তর্ঘাতও থাকতে পারে। কেউ আগুন লাগিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নথি নষ্ট করার চেষ্টা করেছে কি না, খতিয়ে দেখতে ফরেন্সিক পরীক্ষা হবে।’’ হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তীও অন্তর্ঘাতের তত্ত্বকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না। তিনি বলেন, ‘‘আগুন লাগিয়ে পুরসভার অগ্রগতি বানচাল করতে কেউ এটা করেছে কি না দেখতে হবে। এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে পুর ভবনগুলির বৈদ্যুতিক ও ইমারতি ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে সংস্কারে হাত দেব।’’