আতঙ্ক: হরিণখালি নদীবাঁধে। নিজস্ব চিত্র
নদীবাঁধে ফাটল দেখা গিয়েছিল শনিবার। রবিবার ভোরে ভাঙনের জেরে খানাকুল-১ ব্লকের হরিণাখালি নদীবাঁধে গড়ে ওঠা ছত্রশাল বাজারের একাংশ চলে গেল নদীগর্ভে।
বাজারের অস্তিত্ব এবং নিজেদের জীবিকা নিয়ে উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ীরা ব্লক প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। ব্যবসায়ীদের দাবি, বাঁধটি অবিলম্বে বোল্ডার দিয়ে পাকাপোক্ত করার ব্যবস্থা করা হোক। বাঁধের তলার মাটি কেন নরম বা আলগা হয়ে যাচ্ছে তা বিশেষজ্ঞরা খতিয়ে দেখে বাজারটিকে বাঁচানো হোক। ব্লক প্রশাসন জানিয়েছে, নদীবাঁধে নির্মাণ কী ভাবে গড়ে উঠেছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বি়ডিও অমর বিশ্বাস বলেন, ‘‘নদীবাঁধ থেকে সব ব্যবসায়ীদের সরে যেতে বলা হয়েছে। বিষয়টা জেলা প্রশাসনে জানানো হয়েছে।”
বন্যাপ্রবণ এই গ্রামে নদীবাঁধ সংলগ্ন বাজারটি গড়ে ওঠে প্রায় ৮০ বছর আগে। প্রায় ২২০টি দোকান রয়েছে। বাঁধ দিয়েই প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় তৈরি রাস্তাটি ছত্রশাল থেকে স্থানীয় চব্বিশপুর গ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত। রবিবার সকালে দোকানপাট খুলতে গিয়ে ব্যবসায়ীরা দেখেন, বাঁধের প্রায় ৫০ ফুট লম্বা এলাকা ভেঙে গিয়েছে। একটি দোতলা ব্যবসাকেন্দ্র-সহ অন্তত ১২টি দোকানঘর নদীগর্ভে অনেকটা ঢুকে গিয়েছে। ঘটনাস্থলে যান তৃণমূল পরিচালিত বালিপুর পঞ্চায়েতের প্রধান গোপীনাথ হাম্বির এবং উপপ্রধান সাবির আলি খন্দকার।
এলাকার লোকজনের অভিযোগ, রাস্তা এবং বাঁধ তদারকির দায়িত্ব জেলা পরিষদের। কিন্তু জেলা পরিষদ কিছুই করছে না। মাঝেমধ্যে পঞ্চায়েত থেকে ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ হলেও তা বাঁধ মজবুত রাখতে কোনও কাজে লাগে না। এ দিন ভাঙনের জেরে অনেক ব্যবসায়ী সঙ্কটে পড়লেন। ব্লক প্রশাসনের একাংশ অবশ্য জানিয়েছে, নদীবাঁধে যে কোনও নির্মাণ বেআইনি। পঞ্চায়েত প্রধানও মানছেন, ‘‘অনুমতি ছাড়া কিছু নির্মাণ হয়েছে।’’ জেলা সভাধিপতি মেহবুব রহমান জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাঁধে অবৈধ নির্মাণ নিয়েও কড়া পদক্ষেপ করা হবে।
ছত্রশাল বাজার কমিটির সম্পাদক গোপাল চট্টরাজ বলেন, ‘‘বাজারে অবৈধ নির্মাণ থাকলে প্রশাসন ব্যবস্থা নিক। কিন্তু এটা তো শুধু বাঁধ নয়, প্রায় ২০টি গ্রামের সঙ্গে বাইরে যোগাযোগের একমাত্র পথও। এই রাস্তা তথা বাঁধটির তদারকি নিয়ে প্রশাসন কেন উদাসীন থাকবে?”