কলকাতা লন্ডন হওয়ার পথে কতটা এগোল, সেই বিতর্কের মীমাংসা হওয়ার আগেই এ বার জাপানের পথে পা বাড়াল হাওড়া। এবং তা-ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগেই। জাপানের ইয়োকোহামা শহরের সঙ্গে হাওড়ার সিটি-টু-সিটি সংযোগ স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী বৃহস্পতিবার ফেসবুকে এ কথা জানিয়ে বলেন, দু’টি ঐতিহাসিক শহরের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মাধ্যমে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও আর্থিক আদানপ্রদান হবে। এর ফলে দু’টি শহরের পরিকাঠামোগত, প্রশাসনিক সমন্বয় তৈরি হবে। তাতে সব মিলিয়ে নতুন শহর হয়ে ওঠার দিকে হাওড়া পা বাড়াবে বলেই মমতা মনে করছেন।
হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তী জানান, ইয়োকোহামা শহরের সঙ্গে সংযোগ তৈরির ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীই। রথীনবাবু বলেন, ‘‘সি-৪০ বলে চল্লিশটি শহরের একটি গোষ্ঠী রয়েছে। তার মধ্যে ইয়োকোহামা পড়ে। ইন্টারনেটে ওই গোষ্ঠী দেখে মুখ্যমন্ত্রীই তার মধ্যে থেকে ইয়োকোহামাকে এই সংযোগের জন্য বেছে নেন।’’ বাছাইয়ের কারণ হল, ইয়োকোহামার সঙ্গে হাওড়ার ভৌগোলিক এবং অর্থনৈতিক ইতিহাসের মিল। হাওড়ার মতো ইয়োকোহামাও ছিল ছোট ও মাঝারি শিল্পের শহর। পরে হাওড়ার মতোই দৈন্যদশা হয়েছিল জাপানের ওই শহরটিরও। সেখান থেকেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে ইয়োকোহামা। হাওড়ার ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রেও সেই মডেল অনুসরণের কথাই ভাবা হচ্ছেবলে দাবি রথীনবাবুর।
হাওড়ার মেয়র বলেন, ‘‘মাসখানেক আগে ‘সি-৪০’র এক প্রতিনিধি দল এখানে ঘুরে গিয়েছে। তার পরেই ওই শহরের সঙ্গে হাওড়ার একটি সম্পর্ক তৈরির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এক বার সম্পর্ক তৈরি হলে আমরা বিভিন্ন দিকে লাভবান হব।’’
রাজ্য প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে ইয়োকোহামার ধাঁচে হাওড়ার পরিকাঠামো এবং বিভিন্ন নাগরিক পরিষেবার উন্নয়ন ঘটানোর কথা ভাবা হচ্ছে। মেয়রের কথায়, ‘‘আমাদের প্রথম ভাবনা হাওড়ায় একটি রিং রোড তৈরি করা যায় কি না, যেটি বালি থেকে সাঁকরাইল পর্যন্ত যাবে। এর পরে ধাপে ধাপে জনবসতি এলাকার মধ্যে রাস্তা বাড়ানো এবং জঞ্জাল সাফাইয়ে আর উন্নতি ঘটানোর ভাবনা রয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা জাপানের ওই শহরটির সাহায্য নেব।’’ তবে কবে, কী ভাবে, কত দিনের মধ্যে এই ভাবনা কার্যকর করা হবে, তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলেই জানিয়েছেন মেয়র। শুধু বলেছেন, ‘‘এই তো সবে শুরু। হাওড়ার পরিকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটিয়ে আমরাও এক দিন বিশ্বব্যাঙ্কের সাহায্য পাওয়ার দিকে এগিয়ে যাব।’’