বছর শেষে ভিড় জমল না গড়চুমুকে

মঙ্গলবার সেখানে গিয়ে দেখা গেল, হাতে গোনা কয়েকজন বনভোজন করেছেন।

Advertisement

সুব্রত জানা

গড়চুমুক শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:৪৩
Share:

সুনসান: হাতে গোনা পর্যটক গড়চুমুকে। নিজস্ব চিত্র

সারা বছর ধরে তালপাতা ও খেজুর পাতা দিয়ে টুপি আর খেলনা তৈরি করেন দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার শেখ হোসেন। শীতের মরসুমে বিভিন্ন জেলায় ঘুরে ঘুরে সেগুলো বিক্রি করেই রোজগার। মঙ্গলবার, বছর শেষের দিনে পসরা সাজিয়ে তিনি এসেছিলেন হাওড়ার শ্যামপুরে গড়চুমুক পর্যটন কেন্দ্রে। কিন্তু এখানে এসে হতাশ হয়েই ফিরতে হল তাঁকে। কারণ, বছর শেষের ভিড় হালকা গড়চুমুকে।

Advertisement

মঙ্গলবার সেখানে গিয়ে দেখা গেল, হাতে গোনা কয়েকজন বনভোজন করেছেন। পর্যটনকেন্দ্রের কাছেই যে দোকান রয়েছে, খদ্দের নেই সেখানেও। তবে রয়েছে পুলিশের টহল। পরিবেশ দূষণ বন্ধ করতে পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষ থেকে চলছে মাইক প্রচার।

শ্যামপুরে হুগলি নদী ও দামোদরের সংযোগস্থলে সাতের দশকে ১০৬ একর জমিতে তৈরি হয়েছিল এই পর্যটনকেন্দ্র। দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে হাওড়া জেলা পরিষদ। পর্যটনকেন্দ্রে রয়েছে হরিণ প্রকল্প ও তৈরি হয়েছে মিনি চিড়িয়াখানা। আছে বেশ কয়েকটি গেস্ট হাউস। সারা বছর মানুষ ছুটি কাটানোর জন্য চলে আসে এই পর্যটনকেন্দ্রে।

Advertisement

পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া থেকে এ দিন এসেছিলেন শিক্ষিকা কোয়েল গোস্বামী। তিনি বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম, এসে আর গাড়ি রাখার জায়গা পাব না। এসে দেখছি, কী ফাঁকা। এমন ফাঁকা জায়গায় বনভোজনে মজা নেই।’’

গড়চুমুক পর্যটনকেন্দ্রের কর্মীরা জানালেন, অন্যান্য বছর ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি থেকে গড়চুমুকে উপচে পড়ে ভিড়। তবে এ বছরের ছবি একেবারেই আলাদা। এক কর্মীর কথায়, ‘‘এত ঠান্ডা পড়েছে বলেই লোকজন আর আসেননি মনে হয়।’’

হাওড়া জেলা পরিষদের বন,ভূমি ও পর্যটন কর্মাধ্যক্ষ অন্তরা সাহা বলেন, ‘‘পর্যটনকেন্দ্রের পরিকাঠামো যথেষ্ট উন্নত করা হয়েছে। ফলে, পরিকাঠামো নিয়ে মানুষের অভিযোগ নেই। কেন ভিড় হল না, সেটা খতিয়ে দেখা হবে।’’

হাওড়া জেলার আর এক পিকনিক স্পট, হুগলি নদীর ধারে ফুলেশ্বরে সিজবেড়িয়া সেচ বাংলোর ছবি কিন্তু একই। দেখা গেল নদীর চরে আবর্জনায় ভর্তি। তার মধ্যেই কয়েকটি দল চড়ুইভাতি করছে। এ দিন এখানেও ভিড় জমেনি। সেচ বাংলোর মাঠে প্রতি বছর মানুষ আসেন বনভোজনে। বছর শেষের চেনা ভিড় উধাও এখানেও।

এখানে মাঠে ও নদীর চরে পড়ে রয়েছে থার্মোকলের থালা-বাটি ও প্লাস্টিকের গ্লাস। বাগনান থেকে এসেছিলেন গৃহবধূ শিপ্রা দে। তিনি বলেন, ‘‘একটাও শৌচাগার নেই। পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই।’’

হাওড়া জেলা সেচ দফতরের আধিকারিক রঘুনাথ চক্রবর্তীর অবশ্য দাবি, ‘‘ওই এলাকা তো নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়। কেন এ দিন পরিষ্কার করা হয়নি, খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন