এত বড় রসগোল্লা! থ মৌসুমি-জিয়াউল

রবিবার দুপুরে ওরা একসঙ্গে কেক কাটল। একসঙ্গে লজেন্স খেল। মাথায় লম্বা ঝলমলে টুপি পরল। তার পরে একসঙ্গেই বসে পড়ল খেতে। ভাত, ডাল, আলুর চিপস্, মুরগির মাংস, চাটনি, পাঁপড়, রসগোল্লা।

Advertisement

সুশান্ত ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৮ ০১:০৭
Share:

পরিবেশন: নিজে হাতে রসগোল্লা খাওয়াচ্ছে সুচিতা। নিজস্ব চিত্র

কে বলবে শনিবারও ওরা কেউ মেয়েটাকে চিনত না!

Advertisement

রবিবার দুপুরে ওরা একসঙ্গে কেক কাটল। একসঙ্গে লজেন্স খেল। মাথায় লম্বা ঝলমলে টুপি পরল। তার পরে একসঙ্গেই বসে পড়ল খেতে। ভাত, ডাল, আলুর চিপস্, মুরগির মাংস, চাটনি, পাঁপড়, রসগোল্লা।

পান্ডুয়ার সিমলাগড় মাঠপাড়ার ছোট্ট সাগির, জিয়াউল, মৌসুমি, বিট্টুদের দু’বেলা ঠিকমতো খাবার জোটে না। তারা পথশিশু। বাবা-মায়েরা টুকটাক কাজ করেন। সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। সেই জায়গায় রবিবার সিমলাগড় রেল স্টেশনের ধারে খাবারের ওই আয়োজন!

Advertisement

কে জানত ত্রিবেণীর চার বছরের সুচিতা চক্রবর্তী তাদের জন্য এমন চমক নিয়ে হাজির হবে!

এ দিন ছিল সুচিতার জন্মদিন। তার বাবা সঞ্জয় ক্রীড়া সরঞ্জাম ব্যবসায়ী। পথশিশুদের নিয়ে মেয়ের জন্মদিন পালনের ভাবনাটা স্ত্রী চৈতালির সঙ্গে কয়েকদিন আগেই নিয়েছিলেন সঞ্জয়। এরমধ্যে এলাকার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মী সুস্মিতা পালের সঙ্গে আলাপ হয় সঞ্জয়ের।

সুস্মিতারা প্রতি রবিবার সিমলাগড় স্টেশনে সাগির, জিয়াউলদের প়ড়াশোনা শেখান, দুপুরে খাওয়ান। সেই সূত্রেই এ দিন মেয়ের জন্মদিন পালন করতে সঞ্জয়ের ওই স্টেশনে আসা।

সুচিতা কেক কাটা শুরু করতেই মৌসুমি-বিট্টুরা হাততালি দিল। সব মিলিয়ে ওরা অন্তত চল্লিশ জন। সমস্বরে বলে উঠল, ‘‘হ্যাপি বার্থ ডে।’’ এ ভাবে শুভেচ্ছা জানানো ওরা শিখল কোথায়?

মৌসুমির উত্তর, ‘‘টিভিতে দেখেছি।’’ দু’-একটি শিশু ছাড়া বেশির ভাগই এই প্রথম রসগোল্লা খেল। জিয়াউল তো বলেই ফেলল, ‘‘রসগোল্লা এত বড়! খুব আনন্দ হল।’’ সঞ্জয় প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, আগামী বছরও পথশিশুদের নিয়েই মেয়ের জন্মদিন পালন করবেন। আর দিনের শেষে সুচিতা খুশি নতুন বন্ধু পাওয়ায়। সে-ও মেতে উঠেছিল আনন্দে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement