সংগঠনের কর্মীকে মার, ধৃত টিএমসিপি নেতা

বার বার হুঁশিয়ারি দেওয়া সত্ত্বেও হুগলিতে গোষ্ঠীকোন্দল, ছাত্র সংঘর্ষ কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না। ছাত্র সংঘর্ষ রুখতে বুধবার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় পতাকার রং না দেখে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:৫১
Share:

বার বার হুঁশিয়ারি দেওয়া সত্ত্বেও হুগলিতে গোষ্ঠীকোন্দল, ছাত্র সংঘর্ষ কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না। ছাত্র সংঘর্ষ রুখতে বুধবার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় পতাকার রং না দেখে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলেছেন। তার ২৪ ঘণ্টা কাটেনি। ছাত্র সংঘর্ষ না হলেও গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে গ্রেফতার হলেন এক টিএমসিপি নেতা। ঘটনাটি ঘটে শ্রীরামপুরে। পুলিশ জানায়, ধৃত সঞ্জিত রামের বিরুদ্ধে তাঁদের সংগঠনের এক কর্মী কৌশিক দাসকে বাঁশ দিয়ে মারধর করার অভিযোগ রয়েছে। প্রহৃত ওই কর্মী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জেলা টিএমসিপির আহ্বায়ক রিঙ্কু চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কোনও ছাত্রনেতা আইনের ঊর্ধ্বে নন। পুলিশ আইন মতো ব্যবস্থা নিয়েছে। এ ব্যাপারে আমাদের কিছু বলার নেই।’’

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কৌশিকের বাড়ি শ্রীরামপুরের রাজমোহন গোস্বামী স্ট্রিটে। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মেরে তিনি মঙ্গলবার রাত ১২টা নাগাদ মোটরবাইকে করে বাড়িতে ফিরছিলেন। বাড়ির কাছে পৌঁছে মোবাইলে কথা বলছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় সঞ্জিত তাঁর এক সাগরেদকে নিয়ে কৌশিকের উপর চড়াও হন। কৌশিকের অভিযোগ বলেন, ‘‘কিছু বুঝে ওঠার আগেই সঞ্জিত মাথায় বাঁশের বাড়ি মারে। সে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিল। ওর সঙ্গীর হাতেও লাঠি ছিল। মাথায় আর ঘাড়ে আঘাত লাগে। হেলমেট থাকায় প্রাণে বেঁচে গিয়েছি।’’

তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, ছাত্রভোট নিয়ে শ্রীরামপুর কলেজে টিএমসিপি দু’টি গোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে যায়। কাউন্সিলর সন্তোষ সিংহের অনুগামী বলে পরিচিত সঞ্জিত কলেজে ছড়ি ঘোরাতে শুরু করেন। সঞ্জিত ওই কলেজে গত বারের ছাত্র সংসদের সভাপতি ছিলেন। দলের গোষ্ঠী সমীকরণে সঞ্জিতের নেতৃত্বেই এ বার সন্তোষ-গোষ্ঠী জয়ী হয়। অন্য দিকে, কৌশিক ঝুমদেবীর গোষ্ঠীকে সমর্থন করেছিলেন। অভিযোগ, অপর গোষ্ঠীকে সমর্থন করার বদলা নিতে সঞ্জিত কৌশিকের উপর হামলা চালান। কৌশিকের কথায়, ‘‘সঞ্জিতের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই। মনে হচ্ছে, হামলার পিছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে।’’ বুধবার সন্ধ্যায় তিনি শ্রীরামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

Advertisement

পুলিশ জানায়, অভিযোগের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় অভিযোগ হওয়ার পর থেকে অভিযুক্ত ছাত্রনেতা পলাতক ছিলেন। তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েও হদিস মেলেনি। বৃহস্পতিবার বিকেলে শ্রীরামপুর কলেজের কাছ থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। গোটা বিষয়টি নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। শ্রীরামপুর শহর তৃণমূল সভাপতি গৌরমোহন দে বলেন, ‘‘বিষয়টি জেলা টিএমসিপি নেতারা দেখছেন।’’ সন্তোষ সিংহ অবশ্য বলেন, ‘‘অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কাউন্সিলরদের তরফে পুলিশকে বলা হয়েছে।’’

কিন্তু কঠোর সিদ্ধান্তের পরেও ফল কতটা মিলবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে দলের অন্দরে। কারণ, রং না দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আগেও হুগলিতেই দলের বর্ষীয়ান কর্মীকে জুতোপেটা করার অভিযোগে দলীয় নেতৃত্বের সাজার মুখে পড়তে হয়েছে শ্রীরামপুরের তৃণমূল কাউন্সিলরকে। তার পরেও কোন্দল থেমে নেই, মঙ্গলবারের ঘটনায় প্রমাণ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন