দড়ির ফাঁসে আটকেছে ছানা, উদ্ধারে হাজির দুই হনুমান। বৃহস্পতিবার,বালিতে। নিজস্ব চিত্র
গৃহস্থের বাড়ির ছাদে দড়ির ফাঁসে আটকে গিয়েছিল একটি বাচ্চা হনুমান। তাকে উদ্ধার করতে কয়েক মিনিটের মধ্যেই ছাদ-সহ গোটা এলাকা ঘিরে ফেলল হনুমানের দল!
আর হনুমানের ‘ভয়ে’ প্রায় চার ঘণ্টা কার্যত ঘরে খিল এঁটে বসে রইলেন এলাকাবাসী। শেষে পটকা ফাটিয়ে হনুমান তাড়াতে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন বালির আনন্দনগরের বাসিন্দারা।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টায় ছাদে ধুপধাপ শব্দ শুনে ভয়ে ধড়মড়িয়ে উঠে পড়েছিলেন এলাকার বাসিন্দা অনুপ সামন্ত। কে লম্ফঝম্প করছে দেখতে ছাদে যেতেই তিনি দেখেন, একটি বাচ্চা হনুমানের গলায় জড়িয়ে রয়েছে রেলিংয়ের সঙ্গে বাঁধা দড়ি। লাফালাফি করেও তা খুলতে পারছে না বাচ্চাটি। পাশে বসে দুই বড় হনুমান। ফাঁস খোলার জন্য এগোতেই অনুপের দিকে দাঁত-মুখ খিঁচিয়ে তেড়ে আসে ওই হনুমানেরা। কোনও মতে তিনি দরজা বন্ধ করে পিঠটান দেন।
ততক্ষণে ওই বাড়ি সংলগ্ন এলাকা কার্যত ঘিরে ফেলেছে ২০টি হনুমান। বাড়ির ছাদ, রাস্তার পঁচিল সর্বত্র হনুমান। রাস্তা দিয়ে কাউকে যেতে দেখলেই তাড়া করছে। কখনও এক বাড়ির ছাদ থেকে আর এক বাড়িক ছাদে, জানলায় লাফ দিচ্ছে। আর ভয়ে অনুপের মতোই দরজা-জানলা বন্ধ করে বসে এলাকাবাসী। শেষে খবর পেয়ে এল নিশ্চিন্দা থানার পুলিশ।
কিন্তু লাঠি উঁচিয়ে হনুমান তাড়াতে গিয়েও বিপত্তি। পুলিশের দিকেও মারমুখী হয়ে তেড়ে এল তারা। কোনও মতে একটি বাড়িতে ঢুকে জানলা দিয়ে লাঠি উঁচিয়ে হুস-হাস করতে শুরু করলেন পুলিশকর্মীরা। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরেও হনুমানের দলকে কাবু করতে না পেরে রণে ভঙ্গ দিল পুলিশও। শেষমেশ সাড়ে ১০টা নাগাদ বন্দুক হাতে হাজির হলেন বন দফতরের কর্মীরা। পরপর কয়েকটা পটকা ফাটাতেই পালাল হনুমানের দল। তখনই অনুপের ছাদে গিয়ে বাচ্চা হনুমানটির ফাঁস খুলে দেন বন দফতরের কর্মীরা।
দূরে বসে সবটাই লক্ষ্য করছিল মা হনুমান। বাচ্চাটিকে ছাদে লাফাতে দেখেই সেখানে এসে সন্তানকে বুকে জড়িয়ে বড়সড় লাফ মেরে গাছের আড়ালে মিলিয়ে যেতেই স্বস্তির নিঃশ্বাস পড়ল আনন্দনগরে।