কোথাও থমকাল ট্রেন, কোথাও বা বিদ্যুৎহীন হাসপাতাল

বৃষ্টির দাপট, নাস্তানাবুদ দুই জেলাই

প্রবল বৃষ্টিতে উত্তরপাড়া থেকে বাঁশবেড়িয়ার বিভিন্ন পুরসভার নীচু এলাকায় জল দাঁড়িয়ে যায়। তারকেশ্বর, আরামবাগ ও ডানকুনির মতো গ্রামীণ পুর এলাকাগুলির হাল আরও খারাপ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

হাওড়া ও হুগলি শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৭ ০২:১৩
Share:

বিদ্যুৎ তারে গাছ পড়ে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালের সামনে রাস্তা বন্ধ। এলাকায় ছিল না বিদ্যুৎ সংযোগও। ছবি: প্রকাশ পাল

বন্যার দুর্ভোগ মিটতে না মিটতেই ফের নিম্নচাপের ভ্রুকূটি। আর তার জেরে বিপর্যস্ত হাওড়া-হুগলির জনজীবন।

Advertisement

রবিবার রাত থেকে শুরু হয় টানা বৃষ্টি। সোমবার সকাল থেকেই সড়ক ও রেললাইনে গাছ পড়ে ব্যাহত হয় যান চলাচল। গাছ পড়ে শ্রীরামপুরের হাসপাতাল-সহ বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। হাওড়া মেন ও কর্ড শাখার বিভিন্ন স্টেশনে গাছ পড়ে ট্রেন চলাচল বহুক্ষণ বন্ধ থাকে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, “মেন শাখার বর্ধমানের বিভিন্ন স্টেশনে গাছ ভেঙে পড়ে। বেগমপুর-সহ বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন হয়। রেল কর্মীরা গাছ সরিয়ে দেওয়ায় ট্রেন চলাচল শুরু হয়।”

প্রবল বৃষ্টিতে উত্তরপাড়া থেকে বাঁশবেড়িয়ার বিভিন্ন পুরসভার নীচু এলাকায় জল দাঁড়িয়ে যায়। তারকেশ্বর, আরামবাগ ও ডানকুনির মতো গ্রামীণ পুর এলাকাগুলির হাল আরও খারাপ। শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালের সামনে একটি বড় বটগাছ বিদ্যুৎবাহী তারের উপর ভেঙে পড়ে। তার জেরে হাসপাতাল-সহ ওই এলাকা দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। রোগীদের পরিষেবা ব্যাহত হয়। জেনারেটর চালিয়ে জরুরি পরিষেবার কাজ সামাল দেওয়ার চেষ্টা হলেও মানুষের দুর্ভোগ ঠেকানো যায়নি। উত্তরপাড়ায় জিটি রোডে, দোলতলা, রামসীতা ঘাট স্ট্রিট এলাকায় বিদ্যুৎবাহী তারে গাছ পড়ে একই পরিস্থিতি হয়। পুজোর পর সরকারি ছুটির শেষে আজই ছিল অফিস ও স্কুল খোলার প্রথম দিন। টানা বৃষ্টিতে সর্বত্রই উপস্থিতির হার ছিল কম।

Advertisement

হাওড়ার বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা কম ছিল। অনেক দোকানপাট বন্ধ ছিল। রাস্তায় লোকও ছিল কম। বাগনানের বেড়াবেড়িয়া, এনডি ব্লক, হাসপাতালের সামনের মাঠ প্রভৃতি এলাকায় জল জমে যায়। আন্দুল-সাঁকরাইলের বেশ কয়েকটি রাস্তা নিয়ে বহুদিন ধরেই অভিযোগ জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ দিন রাস্তার বড় গর্তগুলো জলে ভরে সমস্যা আরও বাড়ায়। এমনকী সিসি পাল রোডে গর্তে পড়ে উল্টে যায় একটি গাড়ি।

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া খড়্গপুর বিভাগে এ দিন লোকাল ট্রেনগুলি বেশ দেরিতে চলেছে। দক্ষিণ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘বৃষ্টির সময়ে যাত্রীদের ট্রেন থেকে ওঠা-নামার জন্য প্ল্যাটফর্মে বেশিক্ষণ ট্রেন দাঁড়ায়। সেই কারণেই ট্রেন চলাচলে সামান্য দেরি হয়েছে।’’

এমন অকাল বৃষ্টির জেরে চাষে ক্ষতির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না কৃষিবিদরা। কৃষি দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, বৃষ্টি চলতে থাকলে আনাজ ও ধান গাছের গোড়ায় জল জমে চাষের ক্ষতি করতে পারে। তবে যে সব ধান গাছ এখনও পরিণত হয়নি এই বৃষ্টি সেই চাষের পক্ষে ক্ষতিকর হবে না।

প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রবল বৃষ্টিতে জেলার প্রতি নদীতে জল বাড়ছে। নদী লাগোয়া গ্রামীণ এলাকায় মূলত আরামবাগ এবং বলাগড়ে জল জমেছে। তবে তা বিপদসীমা ছাড়ায়নি। বন্যার আশঙ্কা নেই। এখনই বাসিন্দাদের সরানোর পরিস্থিতি হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন