আশায় হিন্দমোটর

বকেয়া টাকা মেটানোর আশ্বাস

শিল্প আর্থিক পুনর্গঠন পর্ষদ (বিআইএফআর) আগেই সি কে বিড়লা গোষ্ঠী পরিচালিত ওই কারখানার কর্তাদের শ্রমিকদের পাওনাগণ্ডা মেটাতে নির্দেশ দিয়েছিল। সে কথায় কর্ণপাত করেননি কর্তৃপক্ষ। কারখানার ১৩০৯ জন শ্রমিক প্রভিডেন্ড ফান্ড, গ্র্যাচুইটি-সহ অন্যান্য বকেয়া পাননি।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

হিন্দমোটর শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৭ ০৪:০৫
Share:

হিন্দুস্থান মোটরস-এর কারখানা হিন্দমোটরে। ফাইল চিত্র।

রাজ্যের একমাত্র মোটরগাড়ি তৈরির কারখানা হিন্দুস্থান মোটরস-এর ঝাঁপ বন্ধ হয়ে গিয়েছে বছর তিনেক আগে। কিন্তু এখনও সেখানকার অন্তত ২০০৯ জন শ্রমিক বকেয়া পাননি। তবে, গত রবিবার কিছুটা আশার আলো দেখতে পেলেন সেখানকার অন্তত ৩৫ জন শ্রমিক। সে দিন শ্রীরামপুর লোক আদালতে এ নিয়ে মামলার শুনানিতে কারখানা কর্তৃপক্ষের আইনজীবী জানিয়েছেন, শ্রমিকদের বকেয়া মোটানো হবে। প্রথম দফায় ৩৫ জনকে তা দেওয়া হবে।

Advertisement

শিল্প আর্থিক পুনর্গঠন পর্ষদ (বিআইএফআর) আগেই সি কে বিড়লা গোষ্ঠী পরিচালিত ওই কারখানার কর্তাদের শ্রমিকদের পাওনাগণ্ডা মেটাতে নির্দেশ দিয়েছিল। সে কথায় কর্ণপাত করেননি কর্তৃপক্ষ। কারখানার ১৩০৯ জন শ্রমিক প্রভিডেন্ড ফান্ড, গ্র্যাচুইটি-সহ অন্যান্য বকেয়া পাননি। ৭০০ শ্রমিককে স্বেচ্ছাবসর নিতে হয়েছে। তাঁদেরও বেশির ভাগেরই বকেয়া ঝুলে রয়েছে। হাতেগোনা কয়েক জন আদালতের নির্দেশে শুধু গ্র্যাচুইটির টাকা পেয়েছেন।

এর মধ্যে দিল্লি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ একটি রায়ে জানিয়েছিল, হিন্দুস্থান মোটরস তাদের উত্তরপাড়া এবং দক্ষিণ ভারতের কারখানা মিলিয়ে ৫০ একরের বেশি জমি বিক্রি করতে পারবে না। তার পরে মাস কয়েক আগে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তী কারখানার জমি-সহ সমস্ত সম্পত্তি বিক্রির উপর স্থগিতাদেশ জারি করেন। তবে, কলকাতা হাইকোর্ট দিল্লি হাইকোর্টের ওই রায়ের প্রসঙ্গটি ছাড় দিয়েছিল।

Advertisement

তাঁরা বকেয়া কী ভাবে পাবেন, এই দুশ্চিন্তায় বিপাকে পড়া উত্তরপাড়া কারখানার শ্রমিকেরা চন্দননগরের ‘আইনি সহায়তা কেন্দ্র’-এর দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সেই কেন্দ্রের আবেদনমতো রাজ্যের শ্রম দফতরের এ সংক্রান্ত মামলা যায় লোক আদালতে।

বিষয়টি জেনে লোক আদালত নির্দেশ দেয়, আগামী ৩১ অগস্টের মধ্যে কারখানার ৩৫ জন শ্রমিকের বকেয়া মেটাতে হবে। আইনি সহায়তা কেন্দ্রের কর্ণধার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সি কে বিড়লা গোষ্ঠীর মনোনীত আইনজীবী আদালতে মুচলেকা দিয়ে শ্রমিকদের বকেয়া দেওয়ার ব্যাপারে সম্মতি জানিয়েছেন।’’

এ কথা জানতে পেরেই আশার আলো দেখছেন শ্রমিকেরা। কারখানার ‘বডি শপ’ বিভাগে কাজ করতেন শিবসাধন মজুমদার। তিনি বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশে আমরা আশার আলো দেখছি। কেননা, আমরা নিশ্চিত, কারখানা কর্তৃপক্ষ আর শ্রমিকদের আবেদন-নিবেদনে সাড়া দেবেন না। এখন আদালতই একমাত্র ভরসা।’’

রবিবার ওই লোক আদালতেই কোন্নগরের বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রিলাক্সন কারখানার শ্রমিকদের বকেয়ার মামলাটিও উঠেছিল। কারখানা কর্তৃপক্ষ লোক আদালতকে, তাঁদের উৎপাদন দীর্ঘদিন বন্ধ। তাই কিছুটা সময় দেওয়া হোক তাঁদের। আদালত পররর্তী শুনানির দিন পর্যন্ত কর্তৃপক্ষকে সময় দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন