বৃহস্পতিবার হুগলির প্রশাসনিক বৈঠকে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এবং এক শ্রেণির নেতার ‘কমিশন’ খাওয়া নিয়ে তোপ দেগেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ঠারেঠোরে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, জেলা স্তরে দলের বড়ো-মাঝারি-ছোট নেতাদের গতিবিধির খবর তাঁর কাছে রয়েছে। তার পরেই হুগলি জেলার পুরসভাগুলির কাজে নজরদারি শুরু করে দিয়েছে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব।
জেলা প্রশাসন থেকে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর সভার পরেই রাতে তারকেশ্বর পুর কর্তৃপক্ষকে ফিরহাদ হাকিম জানিয়ে দিয়েছেন, নিকাশি নালা সংস্কারের পুরসভাকে কাজ করতে হবে না। ওই কাজ করবে সদ্যগঠিত তারকেশ্বর ডেভেলভমেন্ট অথরিটি। সেই সংস্থার চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম নিজেই।
জেলা তৃণমূল সূত্রে খবর, তারকেশ্বর পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন সামন্তের সঙ্গে ভাইস-চেয়ারম্যান উত্তম কুণ্ডুর দ্বন্দ্ব অনেক দিনের। তার ফলে ওই পুরসভার উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ। নিকাশি নালা সংক্রান্ত নির্দেশের পিছনে সেই সব কারণই রয়েছে বলে অনুমান তারকেশ্বরের তৃণমূল নেতাদের।
শুধু তারকেশ্বর নয়, দলনেত্রীর বার্তার পরে চাপে রয়েছেন চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত (তপন) মজুমদার, কোন্নগরের পুরপ্রধান বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায়-সহ হুগলি জেলার বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতা। বৃহস্পতিবার বৈঠকে চুঁচুড়ার স্টেডিয়াম তৈরির জন্য বাড়তি টাকা চেয়েছিলেন অসিতবাবু। তখন মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে সবার সামনেই ভর্ৎসনা করে বলেন, ‘‘কমিশন খেও না। তা হলেও স্টেডিয়ামটা হয়ে যাবে।’’ আবার কোন্নগরের পুরপ্রধান বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায়কেও তিনি বলেছেন, “ ইদানীং তোমার ব্যাপারে নানা অভিযোগ পাচ্ছি।”
মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের পরে হুগলি জেলা তৃণমূলের কেউই প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাইছেন না। আড়ালে তাঁরা বলছেন, পঞ্চায়েত স্তরের যে সব জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে তাদের অনেককেই টিকিট দেবে না দল। প্রয়োজনে সংগঠনেও বদল আসতে পারে।
সেই বাদ যাওয়া তালিকায় কাদের নাম আসবে সেই নিয়েই এখন জোর জল্পনা শুরু হয়েছে হুগলি জেলা তৃণমূলের মধ্যে।