হাওড়ার সংযুক্ত এলাকায় জলসঙ্কট

সাত মণ ঘি পুড়ল, রাধা তবু নাচল না! কার্যত এমনই অবস্থা হাওড়া পুরসভার সংযোজিত বিভিন্ন এলাকার। পাঁচ বছর ধরে বড় বড় ওভারহেড ট্যাঙ্ক তৈরি করে তাতে জল ভরার জন্য রাস্তা খুঁড়ে পাইপলাইন নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৭ ০২:৫৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

সাত মণ ঘি পুড়ল, রাধা তবু নাচল না!

Advertisement

কার্যত এমনই অবস্থা হাওড়া পুরসভার সংযোজিত বিভিন্ন এলাকার। পাঁচ বছর ধরে বড় বড় ওভারহেড ট্যাঙ্ক তৈরি করে তাতে জল ভরার জন্য রাস্তা খুঁড়ে পাইপলাইন নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বছরের পর বছর সেই খন্দপথ ধরে যাতায়াত করতে গিয়ে নাজেহাল হয়েছেন মানুষ। তৈরি হয়েছে দু’টি বুস্টার পাম্পিং স্টেশন। খরচ হয়েছে কয়েক কোটি টাকা। তার পরেও জলের জন্য হাহাকার ঘোচেনি ৪৫-৫০ নম্বর ওয়ার্ডে। কারণ, বাড়ি বাড়ি জল সরবরাহের জন্য যে পাইপলাইন সংযোগের পরিকল্পনা ছিল, তা যেমন বাস্তবায়িত হয়নি, পর্যাপ্ত জলের উৎপাদন না হওয়ায় সরবরাহের ব্যবস্থাও করা যায়নি।

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সংযোজিত ছ’টি ওয়ার্ডে জল সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে মূলত ‘কলকাতা মেট্রোপলিটন ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটেশন অথরিটি’ (কেএমডব্লিউএসএ)। ওই সংস্থা সংযোজিত এলাকাগুলিতে আটটি ওভারহেড ট্যাঙ্ক ও ১৬টি গভীর নলকূপের মাধ্যমে জল সরবরাহ করে থাকে। তবে, গলির ভিতরে পাইপলাইন না থাকায় সেই জল বাড়ি বাড়ি সরবরাহ করা যেত না। জল পাওয়া যেত মূলত রাস্তার ধারে পুরসভার কল থেকে।

Advertisement

১৯৮৭ সালে হাওড়া পুরসভা থেকে পুর নিগমে উন্নীত হওয়ার প্রায় ২০ বছর পরে সংযোজিত ছ’টি ওয়ার্ডে পানীয় জল সরবরাহে উদ্যোগী হয়েছিল তৎকালীন বাম সরকার তথা বাম পুর বোর্ড। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পানীয় জল সরবরাহের জন্য ২০০৫ সালে জেএনএনইউআরএম প্রকল্পের আওতায় ২০ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয় রাজ্য। ২০০৭ সালে সেই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই টাকায় ছ’টি ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছানোর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের ছ’বছর পরেও কাজ শেষ হয়নি।

পুরসভা সূত্রের খবর, কেএমডব্লিউএসএ-র আটটি ওভারহেড ট্যাঙ্কে পদ্মপুকুর জলপ্রকল্প থেকে তিন ভাগে মোট সাড়ে চার ঘণ্টা জল সরবরাহ করা হয়। কিন্তু ওই সংযোজিত এলাকার আয়তন ও জনসংখ্যার বিচারে তা যে প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়, তা মানছেন হাওড়া পুরসভার জল দফতরের দায়িত্বে থাকা এক অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার। তিনি জানান, বর্তমান বোর্ড ওই এলাকাগুলিতে আরও ছ’টি গভীর নলকূপ বসালেও এখনও তা চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। এই জল সরবরাহ স্বাভাবিক করতে গেলে প্রথমত ৩০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে পাইপলাইন বসাতে হবে। পাশাপাশি, জলের উৎপাদনও বাড়াতে হবে।

সংযুক্ত ওয়ার্ডগুলিতে জলের সমস্যা যে আছে, তা মানছেন হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তীও। তিনি বলেন, ‘‘বর্তমানে রাজ্য সরকার অম্রুত প্রকল্পে দিনে ১০ মেট্রিক গ্যালন জল উৎপাদন করার মতো একটা প্রকল্প তৈরির টাকা দিয়েছে। সেই কাজ শুরু হয়েছে। শেষ হলে আশা করা যায়, ওই এলাকার সমস্যা অনেকটা মিটবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন