হাওড়ায় জঞ্জাল সাফাইয়ে নজর রাখতে জিপিএস

জঞ্জাল সাফাইয়ে নজরদারি করতে এ বার আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নিতে চলেছে হাওড়া পুরসভা। ঠিক হয়েছে, জঞ্জাল বহনের গাড়িগুলিতে জিপিএস যন্ত্র লাগানো হবে।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:৩০
Share:

ডাঁই: এই ভাবে জমছে জঞ্জাল। নিজস্ব চিত্র

জঞ্জাল সাফাইয়ে নজরদারি করতে এ বার আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নিতে চলেছে হাওড়া পুরসভা। ঠিক হয়েছে, জঞ্জাল বহনের গাড়িগুলিতে জিপিএস যন্ত্র লাগানো হবে। গাড়িগুলি কোন কোন ভ্যাট পরিষ্কার করল, তা চিহ্নিত করা যাবে ওই যন্ত্রের সাহায্যে। পরিষ্কার না করলে শাস্তিরও ব্যবস্থা করা যাবে। পাশাপাশি, সাফাই ঠিক মত হচ্ছে কি না, তা সরেজমিন দেখতে সোমবার থেকেই পথে নামছে পুর অফিসারদের একটি দল।

Advertisement

সম্প্রতি বীরভূমের একটি সভায় হাওড়ার জঞ্জাল সাফাই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কিন্তু তার পরেও ভ্যাটগুলি ঠিক মতো পরিষ্কার হচ্ছে না বলে অভিযোগ ওঠে। এর পরেই নড়েচড়ে বসেন হাওড়ার পুরকর্তারা। শনিবার হাওড়ার পুর প্রশাসক বিজিন কৃষ্ণ বলেন, “দিনে কতবার জঞ্জাল তুলছে তা দেখতে জঞ্জাল বহনের গাড়িগুলিতে জিপিএস ডিভাইস লাগানো হচ্ছে। এ জন্য অ্যাপও তৈরি হয়ে গিয়েছে। ভ্যাট পরিষ্কার করে বেলগাছিয়া ভাগাড়ে জঞ্জাল ফেলে আসার পরে অ্যাপে জানিয়ে দিতে হবে উপস্থিতি।’’

হাওড়ায় সময়মত ভ্যাট পরিষ্কার না হওয়া বা অপরিষ্কার নর্দমা নিয়ে বাসিন্দাদের ক্ষোভ দীর্ঘদিনের। সেই ক্ষোভেরই প্রতিধ্বনি মিলেছিল মুখ্যমন্ত্রীর কথায়। তাই এ বার জঞ্জাল সাফাই নিয়ে কোমর বেঁধে পথে নামছেন হাওড়ার পুর কর্তারা। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরসভা এলাকায় বর্তমানে ভ্যাটের সংখ্যা ৩০০টি। ভ্যাটে আবর্জনা ফেলার জন্য রয়েছেন ৪০০০ সাফাইকর্মী। আর ভ্যাট থেকে আবর্জনা তুলে ভাগাড়ে ফেলার জন্য দায়িত্ব দেওয়া রয়েছে সাতটি ঠিকাদার সংস্থাকে। সংস্থাগুলির তরফে ছোট গাড়ি চলে ৩০-৩৫টি এবং বড় ডাম্পার জাতীয় গাড়ি চলে ১৯টি।

Advertisement

পুরসভা সূত্রের খবর, পুর প্রশাসকের কড়া নির্দেশের পরেও ঠিকাদার সংস্থার গাড়িগুলি ভ্যাট থেকে ঠিক মতো আবর্জনা তুলছে না। অথচ সরকারি ভাবে খাতাপত্রে দেখানো হচ্ছে ঠিক উল্টো। ভ্যাট সুপারভাইজারদের গত এক সপ্তাহের রিপোর্টের ভিত্তিতে কয়েকটি ঠিকাদার সংস্থাকে এ জন্য কালো তালিকাভুক্ত করা হবে বলে ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন হাওড়ার পুর প্রশাসক। তিনি বলেন, ‘‘আগামী দিনে ওই ঠিকাদার সংস্থাগুলিকে বাতিল করে নতুন সংস্থাকে বরাত দেওয়া হবে।’’

এ দিন বিজিন কৃষ্ণ জানান, সোমবার থেকে তাঁর নেতৃত্বে ডেপুটি কমিশনার, বরো ইন-চার্জ, কন্ট্রোলার অব ফিনান্স রাস্তায় নেমে দেখবেন, সাফাই কর্মীরা হাজির থাকছেন কি না বা বাড়ি বাড়ি গিয়ে আবর্জনা নিয়ে আসার সময়ে ভ্যাট সুপারভাইজাররা উপস্থিত রয়েছেন কি না। কেউ উপস্থিত না থাকলে প্রয়োজনে কড়া ব্যবস্থাও নেবেন তাঁরা। একই সঙ্গে নর্দমা বা জঞ্জাল পরিষ্কারের সরঞ্জাম ঠিক মতো আছে কি না, তা-ও দেখবেন তাঁরা। পুরসভা সূত্রের খবর, হাওড়া শহরের সাফাই পরিষেবা নিয়ন্ত্রণ করেন ১৬টি সেক্টর অফিস থেকে ১৬ জন ভ্যাট সুপারভাইজার।

পুর প্রশাসক জানান, ভ্যাটগুলির উপরে বিশেষ নম্বর ও পরিষ্কারের সময় লেখা থাকবে। এর ফলে ঠিক মতো ভ্যাট পরিষ্কার হচ্ছে কি না, বোঝা যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন