অবশেষে হাওড়া সাবওয়ে ও স্টেশন চত্বরের হকার তুলতে উদ্যোগী হল পুরসভা। হাওড়া পুরসভার বক্তব্য, স্টেশনের সাবওয়ে ও স্টেশন চত্বরের বসা হকারদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এক শ্রেণির লোকজন টাকা নিয়ে হকারদের বসানোর ফলে ওই এলাকা দিয়ে হাঁটাচলার পথই কার্যত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পরিস্থিতি ঠিক কী পর্যায়ে গিয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে পুরসভার উদ্যোগে ৮ সদস্যের একটি কমিটি গড়া হয়েছে। রাজ্য সরকার যেহেতু যে কোনও উচ্ছেদের বিরুদ্ধে, তাই ওই হকারদের পুর্বাসন কোথায় দেওয়া যায়, তার সমীক্ষাও করবে ওই কমিটি।
হাওড়া স্টেশনকে কেন্দ্র করে হকাররাজ চলছে গত তিন দশক ধরে। পুলিশ সূত্রের খবর, সব মিলিয়ে প্রায় ৬০০ জন হকার ওই এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসেন। মাঝেমাঝে পুলিশি ধরপাকড় হলে সাময়িক ভাবে বন্ধ থাকে বিক্রিবাটা। কিন্তু কিছু দিন পরেই পুলিশের সামনেই হকারেরা ফের বসতে শুরু করে ডালা সাজিয়ে।
সম্প্রতি হাওড়া স্টেশন চত্বর ঢেলে সাজতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। তার ফলেই পুরসভার এই পদক্ষেপ বলে মনে করছে জেলা প্রশাসন। গত সপ্তাহেই পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে হাওড়া পুরকর্তাদের বৈঠকের পরে স্টেশন চত্বরে একটি আধুনিক মানের বহুতল বাস টার্মিনাল তৈরির জন্য ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য। ওই টার্মিনাল তৈরি করতে গেলে হকারদের সরানো একান্ত প্রয়োজন।
হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রতিদিন বিকেলের পরে সাবওয়ে কার্যত ফল, সব্জির বাজারে পরিণত হচ্ছে। এমন ভাবে রাস্তা দখল করা হচ্ছে যে, মানুষের হাঁটাচলা করতে সমস্যা হচ্ছে। এলাকার উন্নয়নের কাজেও সমস্যা হবে।’’ মেয়র জানান, রাজ্য সরকার কারও রুজিরুটি বন্ধ করতে চায় না। কিন্তু পথ আটকে হকারদের বসাটাও সমর্থন করে না। তাই স্টেশনের হকারদের পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করা যায় কি না, তা দেখা হবে। এ জন্য প্রতি মাসে হাওড়ার উন্নয়নের জন্য মেয়রের নেত়ত্বে যে কমিটি তৈরি হয়েছে, সেটি আবার এই সমস্যা মেটাতে জেলা প্রশাসন, সিটি পুলিশ ও কেএমডিএকে নিয়ে একটি সমীক্ষা কমিটি তৈরি করেছে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কমিটিতে রয়েছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ), আইসি হাওড়া স্টেশন ট্র্যাফিক গার্ড, আইসি গোলাবাড়ি, পুরসভার চারটি দফতরের চার জন ইঞ্জিনিয়ার ও কেএমডিএ-র প্রতিনিধি। হাওড়ার পুর কমিশনার নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায় জানান, ঠিক হয়েছে এই কমিটি আগামী ১১ তারিখ প্রথম দফায় হাওড়া সাবওয়ে ও হাওড়া স্টেশন চত্বর পরিদর্শনে যাবেন। এর পরে ওই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।