বেআইনি ভাবে মজুত আটা উদ্ধার, গ্রেফতার

জেলা খাদ্য দফতরের এক পদস্থ কর্তা জানান, মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁদের খবর দেওয়া হয় যে ফতেপুরে একটি গুদামে বেআইনি ভাবে আটা মজুত করা হচ্ছে। তারপরেই জেলা খাদ্য দফতর উলুবেড়িয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৫:১৪
Share:

চক্র: উদ্ধার হওয়া আটার প্যাকেট। আদালতে ধৃত ছবি: সুব্রত জানা

হাওড়া জেলায় বেআইনি ‘আটাচক্র’ ভাঙতে মাঠে নামল প্রশাসন। মঙ্গলবার রাতে উলুবেড়িয়ার ফতেপুরে একটি গুদামে হানা দিয়ে পুলিশ কয়েকশো বস্তা আটা এবং গম আটক করেছে। গ্রেফতার করা হয়েছে গুদাম-মালিক আজিজুল মণ্ডলকে। গুদামটিও ‘সিল’ করা হয়েছে। পুলিশ হানা দেওয়ার সময়ে আটা এবং গম একটি ট্রাকে বোঝাই করা হচ্ছিল। ট্রাকটিও পুলিশ কে বাজেয়াপ্ত করে। পুলিশের অনুমান, ওই আটা রেশন দোকান থেকে গরিব মানুষের দেওয়ার কথা ছিল। কারণ, আটার বস্তায় ‘ভারত সরকারের জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন’ লেখা ছিল।

Advertisement

জেলা খাদ্য দফতরের এক পদস্থ কর্তা জানান, মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁদের খবর দেওয়া হয় যে ফতেপুরে একটি গুদামে বেআইনি ভাবে আটা মজুত করা হচ্ছে। তারপরেই জেলা খাদ্য দফতর উলুবেড়িয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করে। হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, গুদামটির মালিক রেশন ডিলার বা ডিস্ট্রিবিউটর নন। তা সত্ত্বেও বেআইনি ভাবে অত আটা কী ভাবে গুদামে মজুত করা হল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোথা থেকে ওই আটা এসেছিল এবং কোথায় পাঠানো হচ্ছিল সেটাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আরও কেউ জড়িত থাকলে তাকেও ধরা হবে। উল‌ুবেড়িয়ার মহকুমাশাসক তুষার সিংলা বলেন, ‘‘কোথাও বেআইনি ভাবে আটা মজুত করা হচ্ছে, এই খবর পাওয়া গেলেই সেখানে হানা দেওয়া হবে।’’

‘অতি গরিব’ ও ‘মাঝারি গরিব’ মানুষদের কার্ডপ্রতি কেন্দ্র সরকার রেশন দোকানের মাধ্যমে যথাক্রমে কেজিপ্রতি ২ টাকা দরে মাসে ২০ কেজি এবং সাড়ে তিন টাকা দরে মাসে তিন কেজি আটা দেয়। জেলার বহু গ্রাহকের অভিযোগ, আটার মান এতটাই খারাপ যে তা খাওয়া যায় না। বহু গ্রাহকই রেশন দোকান থেকে ওই আটা সংগ্রহ করার পরে ফড়েদের কাছে কেজিপ্রতি ৫ টাকা দরে বিক্রি করে দেন। অভিযোগ, ফড়েদের থেকে সেই আটার একাংশ চলে যায় পশুখাদ্য বিক্রেতাদের হাতে। অন্য অংশ চলে যায় আটাকলগুলিতে। সেখান থেকে ফের এই আটা চলে যায় রেশন দোকানে। এ ভাবেই রেশনের আটাকে কেন্দ্র করে চলে ‘দুষ্টচক্র’।

Advertisement

ক’দিন আগে আনন্দবাজারে এই ‘আটাচক্র’-এর খবর প্রকাশিত হতে প্রশাসন ও খাদ্য দফতর নড়েচড়ে বসে। ফড়েদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে রেশন দোকান-মালিকদের একাংশও গ্রাহকদের কাছ থেকে আটা কিনে তা আটাকলে চালান দেন বলে অভিযোগ ওঠে। মহকুমাশাসক জানান, রেশন দোকানগুলিতেও নিয়মিত হানা দেওয়া হবে। যদি কোনও রেশন দোকানে আটা মজুত থাকে এবং রেশন দোকানের মালিক যদি সেই আটা মজুত করে রাখার কোনও যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখাতে না-পারেন, তা হলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া-সহ লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন