চন্দননগর জুড়ে সারারাত ধরে চলল শোভাযাত্রা  

চন্দননগর এবং ভদ্রেশ্বর মিলিয়ে এ বার মোট ২৩৯টি বারোয়ারি পুজো হচ্ছে। এ দিন সন্ধ্যায় বিসর্জনের শোভাযাত্রায় যোগ দেয় ৭৬টি পুজো। তবে পুজোর প্রতিমা বিসর্জনের পালা শুরু হয়েছিল সকাল থেকেই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

চন্দননগর ও পান্ডুয়া শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:৪২
Share:

শেষবেলায়: বির্সজনের আগে শোভাযাত্রা চন্দননগর স্ট্র্যান্ডে। ছবি: তাপস ঘোষ

ট্রাকের উপরে বিশাল প্রতিমা। সঙ্গে মায়াবী আলোর খেলা। দু’য়ে মিলে বৃহস্পতিবার চন্দননগরের বিভিন্ন রাস্তা হয়ে উঠল ‘জগদ্ধাত্রী সরণী’। ঐতিহ্যের এই শোভাযাত্রা দেখতে ভিড় ভেঙে পড়ল। কার্যত সারা রাত ধরে শহর জুড়ে চলল এই পরিক্রমা।

Advertisement

চন্দননগর এবং ভদ্রেশ্বর মিলিয়ে এ বার মোট ২৩৯টি বারোয়ারি পুজো হচ্ছে। এ দিন সন্ধ্যায় বিসর্জনের শোভাযাত্রায় যোগ দেয় ৭৬টি পুজো। তবে পুজোর প্রতিমা বিসর্জনের পালা শুরু হয়েছিল সকাল থেকেই। দুপুরে চন্দননগরের রানিঘাটে একটি দুর্ঘটনায় উৎসবের তাল কাটে। একটি ট্রাক প্রতিমা নিয়ে গঙ্গায় নামার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অনেকটাই গড়িয়ে যায়। বাঁশের ব্যারিকেড ভেঙে বিপত্তি ঘটে। একটি বৈদ্যুতিন মাধ্যমের সাংবাদিক-সহ অন্তত দু’জন জখম হন। চন্দননগর কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘ট্রাকটি যে ভাবে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিল, তাতে বড় বিপদ হতে পারত। ওই জায়গায় তখন বহু মানুষ ছিলেন। কপাল ভাল যে বড় কিছু হয়নি।’’ বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত রানিঘাটে ৫৫টি প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। চন্দননগর এবং ভদ্রেশ্বরের অন্যান্য ঘাটেও প্রতিমা বিসর্জন

দেওয়া হয়।

Advertisement

সুষ্ঠুভাবে ভাসান শেষ করতে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়। গঙ্গায় পুলিশের লঞ্চ ছিল। জলে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে যাতে দ্রুত পদক্ষেপ করা যায়, সে জন্য গঙ্গায় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের বোট চক্কর কেটেছে। গঙ্গার দূষণ রোধ করতে বিসর্জনের সঙ্গে সঙ্গেই পুরকর্মীরা প্রতিমার কাঠামো জল থেকে তুলে ফেলেছেন।

জগদ্ধাত্রী পুজোকে কেন্দ্র করে পান্ডুয়া ব্লকের বৈঁচিও কার্যত উৎসবের চেহারা নেয়। বেশ কয়েকটি ‘থিম’-এর পুজো হয়েছে এখানে। জীবন সঙ্ঘ, গ্রিন স্টার, সবুজ সংঘ, পশ্চিমায়ন, রায়পাড়া, নিউ স্টার, নেতাজি সঙ্ঘ প্রভৃতি মণ্ডপে ভালই ভিড় হয়েছিল। আজ, শুক্রবার প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে শোভাযাত্রা সহকারে। প্রশাসন সূত্রের খবর, আগে বিসর্জন হত সন্ধ্যার পরে। কয়েক বছর আগে বিসর্জনের রাতে দু’টি ক্লাবের সদস্যদের মধ্যে অশান্তি হয়েছিল। পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল। তার পরে সিদ্ধান্ত হয়, রাতে নয়, বিসর্জন হবে দিনে। পরের বছর থেকে সেই নিয়মই চলে আসছে। বৈঁচি জগদ্ধাত্রী কেন্দ্রীয় পুজো কমিটির সম্পাদক সঞ্জয় রায় বলেন, ‘‘সূর্যাস্তের আগেই নুনিয়াডাঙার একটি পুকুরে সব প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে।’’

হুগলি জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, সুষ্ঠু ভাবে বিসর্জনের জন্য পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে। সকাল সাতটা থেকে রাত এগারোটা পর্যন্ত জিটি রোডে যান চলাচল বন্ধ থাকবে। সঞ্জয়বাবু বলেন, ‘‘প্রতিটি কমিটিকে বলা হয়েছে, তারা যাতে ডিজে না বাজায়। ডিজে বাজানো আইনবিরুদ্ধ। পরিবেশের পক্ষে তা অত্যন্ত ক্ষতিকর।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন