প্রতীকী ছবি।
বিক্ষোভের ছবি তুলতে গিয়ে সিঙ্গুর থানার সামনে সাংবাদিকের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় নিন্দা জানালেন সব রাজনৈতিক দলের নেতারা। দোষীদের শাস্তির দাবিও তুলেছেন তাঁরা।
শনিবার দুপুরে ওই থানার সামনে একটি বিক্ষোভের ছবি তুলতে গিয়ে আক্রান্ত হন সাংবাদিক দীপঙ্কর দে। ক্যামেরার সব ছবি ‘ডিলিট’ করতে না-চাওয়ায় বিক্ষোভকারীদের কয়েকজন তাঁকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। তাঁর মুখ ফুলে যায়। সিঙ্গুর গ্রামীণ হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা হয়। সিঙ্গুর থানায় ওই ঘটনার লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই মারধরের ঘটনায় যুক্ত কয়েকজনের নাম ইতিমধ্যেই পাওয়া গিয়েছে। আরও যারা যুক্ত ছিল, তাদের নাম জানার চেষ্টা চলছে। সিসিটিভি-র ফুটেজ খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার চেষ্টাও হচ্ছে। হুগলি জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন বলেন, ‘‘পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় পুলিশ কড়া পদক্ষেপ করবে।’’
এ দিন ঘটনার কথা চাউর হতেই প্রতিবাদ জানান সব রাজনৈতিক দলের নেতেরা। জেলা তৃণমূল সভাপতি সভাপতি তথা কৃষি বিপণনমন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘নিন্দনীয় ঘটনা। সাংবাদিকেরা পেশার তাগিদে যে কোনও জায়গায় যেতে পারেন। ছবি তুলতে পারেন। কারও বাধা দেওয়ার অধিকার নেই। আমি নিজে পুলিশের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলব। দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘রাজ্য জুড়েই নৈরাজ্যের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। সাংবাদিকেরা তাঁদের কাজ করতে পারবেন না? এ কোথায় বাস করছি আমরা? অবিলম্বে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনসম্মত ব্যবস্থা নিতে হবে।’’
স্থানীয় সমস্যা নিয়ে এ দিন সিঙ্গুর থানার সামনে ওই বিক্ষোভ হচ্ছিল। বিক্ষোভকারীদের অনেকের কপালেই ছিল গেরুয়া টিপ, গলায় গেরুয়া ওড়না, মুখে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি। দু’এক বিজেপি নেতাকেও ওই বিক্ষোভে দেখা গিয়েছে। তবে, ওই কর্মসূচির সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেছেন বিজেপি নেতা তথা দলের ওবিসি মোর্চার রাজ্য সম্পাদক স্বপন পাল। তিনি বলেন, ‘‘সাংবাদিকের গায়ে হাত তোলা খুব অনুচিত কাজ। দোষীদের শাস্তি দাবি করছি। ওখানে দলের কেউ ছিলেন কিনা, খোঁজ নিচ্ছি।’’
আক্রান্ত দীপঙ্করকে থানার সিভিক ভলান্টিয়াররাই উদ্ধার করেন। পুলিশকর্মীরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। তবু থানার কাছেই যখন হামলা হল, তখন ঘটনাস্থল থেকেই কেন অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা গেল না, এ প্রশ্নও অনেকে তুলেছেন। পুলিশ অবশ্য দাবি করেছে, ঘটনার কথা জানামাত্র ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ যাওয়া মাত্র হামলাকারীরা পালায়।