polba

কামদেবপুরে রান্না বন্ধ অনেক বাড়িতে

তাঁর আক্ষেপ, ‘‘আমার চোখের সামনেই দুর্ঘটনাটা ঘটেছিল। চিৎকার করে সকলকে ডেকে এনেছিলাম। পুরুষদের সঙ্গে আমরাও উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছিলাম। ওদের খোঁজ রাখতাম। ঋষভের মৃত্যুর খবরটা পাওয়ার পরে মন খারাপ হয়ে গেল। রান্নাবান্না করতে ইচ্ছে করছিল না।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পোলবা শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:৫২
Share:

মনমরা: বিমর্ষ গ্রামবাসী।

ঋষভ বাঁচেনি। তাই, আফশোস যাচ্ছে না ওঁদের।

Advertisement

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পোলবার কামদেবপুরে পুলকার দুর্ঘটনার পর থেকেই ওঁরা নিয়মিত খোঁজ নিয়েছেন জখম কচিকাঁচাদের। শনিবার ঋষভের মৃত্যুর খবর জেনেই তাঁরা ভেঙে পড়লেন। কাজে বেরোলেন না অনেকে। অনেক বাড়িতে রান্না বন্ধ রইল।
ওঁরা কামদেবপুরের বাসিন্দা। ওই দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁরা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন নয়ানজুলিতে। উদ্ধার করেছিলেন আটকে পড়া ছাত্রছাত্রী এবং চালককে। তাঁদেরই একজন মানসী শীল। দুর্ঘটনার সময়ে মেয়েকে কোলে নিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘আমার চোখের সামনেই দুর্ঘটনাটা ঘটেছিল। চিৎকার করে সকলকে ডেকে এনেছিলাম। পুরুষদের সঙ্গে আমরাও উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছিলাম। ওদের খোঁজ রাখতাম। ঋষভের মৃত্যুর খবরটা পাওয়ার পরে মন খারাপ হয়ে গেল। রান্নাবান্না করতে ইচ্ছে করছিল না।’’

বুকাই সোরেনও দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। উদ্ধারকারীও। ঋষভের মৃত্যু-সংবাদে তিনিও স্থির থাকতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘‘ছেলেটা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিলে মনটা সান্ত্বনা পেত। এত চেষ্টা করেও ওকে বাঁচানো গে‌ল না। অনেক দুর্ঘটনার সাক্ষী থেকেছি। কিন্তু ঋষভের মৃত্যুটা চিরকালের আক্ষেপ হয়ে থাকবে।’’ স্থানীয় গ্রামবাসীরা ঝাঁপিয়ে না-পড়লে সে দিন বিপত্তি আরও বাড়ত বলে মনে করেন দুর্ঘটনাগ্রস্ত পুলকারে থাকা শিশুদের অভিভাবকেরা।

Advertisement

ওই এলাকার অনেকেরই সংসার চলে দিনমজুরি করে। কাজে না-যাওয়ায় একদিনের মজুরি মিলল না। তাতে আক্ষেপ নেই তাঁদের। আক্ষেপ শুধু ঋষভ না-ফেরায়। রূপা সোরেন নামে এক মহিলা বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম শ্রীরামপুরে গিয়ে ঋষভকে শেষবার দেখে আসব। স্বামী কাজে না গিয়ে মন খারাপ করে ঘরে বসে রইল। রান্না করতে ইচ্ছে করল না। পাঁউরুটি কিনে বাচ্চাদের খাওয়ালাম। আমাদের খাবার মুখে তোলার অবস্থা ছিল না। একজন মা হয়ে বুঝতে পারছি, মায়ের কোল ফাঁকা হলে কত দুঃখ, কত যন্ত্রণা!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন