বাগনান: চিঠিপত্র

বাড়ছে দখলদারি, শহরে কমছে রাস্তা

শহরে রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়্গপুর শাখার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন বাগনান। শহরের মধ্যে দিয়েই গিয়েছে মুন্বই রোড। বেড়েছে রুট ও গাড়ির সংখ্যা। ফলে, শহর এখন আরও জমজমাট। কিন্তু সমস্যাও অনেক রয়ে গিয়েছে। যানবাহন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেই।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৫ ০১:১৩
Share:

বর্ষার বাগনান। নিজস্ব চিত্র।

শহরে রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়্গপুর শাখার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন বাগনান। শহরের মধ্যে দিয়েই গিয়েছে মুন্বই রোড। বেড়েছে রুট ও গাড়ির সংখ্যা। ফলে, শহর এখন আরও জমজমাট। কিন্তু সমস্যাও অনেক রয়ে গিয়েছে। যানবাহন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেই। আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়, ব্লক অফিস, হাসপাতালে যাওয়ার রাস্তাটির বেহাল অবস্থা। দখলদারির কারণে রাস্তাটি অপরিসর। বহু জায়গায় ভাঙাচোরা। জেলা পরিষদের এই রাস্তাটি সারানোর কোনও চেষ্টা নেই। রাস্তায় আলো নেই। সন্ধ্যা নামলেই তা অন্ধকারে ডুবে যায়। ফলে, বেড়েছে দুষ্কৃতীদের উৎপাত। নাগরিকেরা, বিশেষ করে মহিলারা ওই রাস্তা দিয়ে যেতে ভয় পান। এ ছাড়া নিকাশি সমস্যা তো রয়েছেই। লোকেরা নিয়ম না মেনে বাড়ি করায় নিকাশির সমস্যা হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টিতেই পথঘাট জলে ডুবে যায়। বাগনান ক্রমশ বড় শহর হচ্ছে। জনসংখ্যা বাড়ছে। শহরে বড় কোনও শ্মশানঘাট বা কবরস্থান নেই। ফলে, সমস্যায় পড়তে হয়। লোকেরা অনেকে শিবপুরে ছোটেন দাহ করতে। একটা ইলেকট্রিক চুল্লি এখানে হলে ভাল হয়। মুম্বই রোডের ধারে কাছাকাছি কোনও স্থানে তৈরি করা দরকার।

Advertisement

প্রতাপনারায়ণ চৌধুরী। এনডি ব্লক

Advertisement

শহরে নেই পার্ক

স্টেশনেই বসে আড্ডা।

শহর হিসেবে বাড়ছে বাগনান। ফলে, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বহুতল। কিন্তু শহরের বিস্তার হচ্ছে অপরিকল্পিত ভাবে। বেহাল নিকাশি। সেই সঙ্গে আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় নর্দমাগুলিই হচ্ছে ময়লা ফেলার জায়গা। ছোট গাড়িগুলি চলাচলের বিকল্প রাস্তা দরকার। বর্তমানে উড়ালপুল হয়েছে রেললাইনের উপরে। কিন্তু লেভেল ক্রসিংয়ে সাধারণ যাত্রী বা সাইকেল আরোহীদের যাওয়ার রাস্তা নেই। বিপদের ঝুঁকি নিয়েই তাঁরা রেললাইন টপকে যাতায়াত করেন। তাই চাই আন্ডারপাস। শিশু ও বয়স্কদের জন্য পার্ক দরকার। ছোট মাঠগুলি প্রোমোটিংয়ের দাপটে বহুতলে মুখ ঢেকেছে। শিশুদের কোনও খেলার মাঠ বা বয়স্কদের বসার কোনও জায়গা নেই।

দেবজ্যোতি বাজানি। বেড়াবেড়িয়া

চাই প্রেক্ষাগৃহ

যোগাযোগের সুবিধার কারণে এ শহর এখন বহু মানুষের পছন্দের। বিভিন্ন জায়গা থেকে সমাজের বুদ্ধিজীবী শিক্ষিত মানুষের ভিড় বাড়ছে। কর্মব্যস্ততার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটি মানুষই চাইছেন একটু বিনোদন। এর জন্য মানুষ ঝুঁকছেন নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের দিকে। যেখানে তাঁরা সংস্কৃতিচর্চার মাধ্যমে নিজেদের ও অন্যদেরও মনোরঞ্জন করতে পারেন। বাগনানে বিভিন্ন সময়েই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হচ্ছে। কিন্তু সেই সব অনুষ্ঠানগুলি আরও ভাল ভাবে করার জন্য একটি অডিটোরিয়াম চাই। এটা খুবই দরকার। আর একটা কথা বলব যে, বাগনান-১, ২, শ্যামপুর-১, ২ ও আমতা-১, ২ ব্লকে প্রচুর চাষবাস হয়। সেই চাষের উন্নতির জন্য বিজ্ঞানভিত্তিক চাষাবাদ দরকার।

চন্দ্রনাথ বসু। কাছারিপাড়া

কমছে ফুটপাথ

বাগনানের বাসিন্দা হিসেবে কয়েকটা জিনিস আরও দরকার বলে মনে করছি। বাগনান পুরসভা হয়ে গেলে নিকাশি, রাস্তা, পরিষেবার প্রতি নজর বাড়বে। এটা খুবই দরকার। বাগনানের যে ভাবে গুরুত্ব বাড়ছে, সে দিকে লক্ষ্য রেখে শহরে একটি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দরকার। যোগাযোগের সুবিধার কারণে এখানে আসাটা ছাত্রছাত্রীদের পক্ষে সহজ হবে। শহরের বড় রাস্তাগুলি দোকানদাররা যে ভাবে দখল করে নিয়েছেন, তাতে পথচারীদের চলার জায়গা নেই। রাস্তার দু’পাশে অবশ্যই ফুটপাথ দরকার। সেই সঙ্গে যান নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা দরকার।

হাফিজুর রহমান খান। বেড়াবেড়িয়া

বাড়ছে বহুতল

শহরে একের পর এক বহুতল উঠছে। প্রোমোটারদের উন্মুক্ত ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে বাগনান। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি এবং স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল সবই কাছাকাছি থাকার ফলে বহু মানুষ ওই সব বহুতলে বসবাস শুরু করেছেন। ফলে, বাগনানের জনবসতি বাড়ছে। অনেক ক্ষেত্রে পুকুর বুজিয়ে তৈরি হচ্ছে বহুতল। অনেক ক্ষেত্রে আবার সংস্কারের অভাবে পুকুর মজে যাচ্ছে। তার ফলে, কখনও বাগনানে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড ঘটলে আগুন নেভানোর জন্য পর্যাপ্ত জল সহজে মিলবে না। বিশেষ করে বহু বহুতলই ঘিঞ্জি এলাকায় তৈরি। আশপাশে পুকুরও নেই। প্রশাসনের উচিত যে সব জায়গায় বড় জলাশয় রয়েছে, শুধু তার কাছাকাছি এলাকাতেই বহুতল তৈরির অনুমতি দেওয়া। তা হলে অগ্নিকাণ্ড হলেও বড় বিপর্যয় এড়ানো যাবে।

প্রসূন রায়। বেড়াবেড়িয়া

রাস্তার প্রয়োজন

বাগনানে লেভেল ক্রসিং‌য়ের উপরে উড়ালপুল হয়েছে। তাতে যান চলাচলে গতি বেড়েছে। কিন্তু রেললাইন পারপার করতে পথচারী এবং সাইকেল আরোহীদের ওই উড়ালপুল ব্যবহার করা কষ্টসাধ্য। ওই লেভেল ক্রসিং থেকে দুর্লভপুর লেভেল ক্রসিং পর্যন্ত দক্ষিণ দিকে সমান্তরালে রাস্তা তৈরি করলে ভাল হয়। পথচারী ও সাইকেল আরোহীরা তা হলে দুর্লভপুর লেভেল ক্রসিং হয়ে পারাপার করতে পারবেন।

রতনচন্দ্র ঘোষ। খালোড়

আরও বাস চাই

বাগনান বাসস্ট্যান্ড থেকে আরও বেশি দূরপাল্লার বাস চালানোর প্রয়োজন। বাসস্ট্যান্ডে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য নেই বললেই চলে। বাসস্ট্যান্ডের ঢোকা ও বের হওয়ার রাস্তার সম্প্রসারণ চাই। বাগনান গ্রামীণ হাসপাতালে বেশ কয়েকটি আধুনিক পরিষেবা পাওয়া যায় না।

আক্রামূল হক, খালোড়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন