খবর পেয়ে বন্ধ করল হাওড়া জেলা প্রশাসন

আচরণবিধি উড়িয়ে চেক বিলির নালিশ

 আদর্শ নির্বাচনী আচরণ বিধি চালু হয়ে যাওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পরও চেক বিলির অভিযোগ উঠল উলুবেড়িয়া-২ ব্লক কৃষি দফতরে।

Advertisement

নুরুল আবসার ও  সুব্রত জানা

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৯ ০৫:১০
Share:

চলছে নামের তালিকা দেখা

আদর্শ নির্বাচনী আচরণ বিধি চালু হয়ে যাওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পরও চেক বিলির অভিযোগ উঠল উলুবেড়িয়া-২ ব্লক কৃষি দফতরে। মঙ্গলবার সকাল থেকে তেহট্ট-কাঁটাবেড়িয়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার চাষিদের হাতে রাজ্য সরকারের কৃষক বন্ধু প্রকল্পের চেক তুলে দেওয়া হচ্ছে বলে খবর আসে। তত ক্ষণে বেশ কয়েকজন চেক পেয়ে গিয়েছেন। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরে চেক বিলি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

Advertisement

গোটা ঘটনাটি অবশ্য অস্বীকার করেছেন মহকুমা কৃষি আধিকারিক অভিমন্যু বারুই। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের এখানে কোনও চেক বিলি হচ্ছে না। কে রটাল এ সব কথা?’’ তাঁকে যখন বলা হয় এখানে যাঁরা এসেছেন তাঁরাই বলছেন চেক দেওয়ার জন্য ডাকা হয়েছিল। তখন অভিমন্যুবাবু বলেন, ‘‘কেউ তাঁদের ডাকেননি।’’

বেশ কয়েকজন কৃষক চেক পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। শেখ আব্বাস নামে এক যুবক বলেন, ‘‘অনেক আগে ফর্ম পূরণ করেছিলাম। মোবাইলে মেসেজ পাঠিয়ে বলা হয় চেক নেওয়ার জন্য মঙ্গলবার যেতে হবে ব্লক কৃষি অফিসে।’’ সেই মতো লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন শেখ আব্বাস। তিনি বলেন, ‘‘প্রথমে যাঁরা ছিলেন তাঁদের চেক দেওয়া হয়। কিন্তু আমার পালা আসতেই বলে দেওয়া হল নির্বাচনী আচরণবিধি চালু হয়ে গিয়েছে। আর চেক দেওয়া হবে না।’’ শেখ জালাল নামে আর এক ব্যক্তিও বলেন, ‘‘আমাকে পাড়ার একজন মাতব্বর বললেন কৃষি অফিসে যেতে। এসে দেখি চেক নেওয়ার লম্বা লাইন। কয়েকজন চেক পাওয়ার পর সব বন্ধ হয়ে গেল।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

দুপুর ১২টা নাগাদ চেক বিলির বিষয়টি সংবাদমাধ্যমের নজরে আসে বিষয়টি। ব্লক কৃষি আধিকারিকদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলা হলে তাঁরা জানান, চেক বিলি বন্ধ করার জন্য কোনও নির্দেশ আসেনি। উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসক তুষার সিংলা বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখব।’’ কিছুক্ষণ পরে মহকুমা প্রশাসন থেকে একজন পদস্থ আধিকারিক আসেন। সাড়ে ১২টা নাগাদ বন্ধ হয়ে যায় চেক বিলি এবং ফর্ম পূরণ। যাঁরা চেক নেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁদের বলে দেওয়া হয়, নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত চেক দেওয়া হবে না।

কৃষক বন্ধু প্রকল্পে চাষিদের বছরে পাঁচ হাজার টাকা করে চাষের খরচ দিচ্ছে রাজ্য সরকার। দু’টি পর্যায়ে‌ আড়াই হাজার টাকা করে চাষিদের দেওয়ার কথা। এই ব্লকে প্রথম কিস্তির আড়াই হাজার টাকা দেওয়া শুরু হয়েছে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে। প্রথমে চাষিদের ফর্ম পূরণ করিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তারপরে তাঁদের দেওয়া হচ্ছে রসিদ। কয়েকদিন পরে সেই রসিদ-সহ ডাকা হচ্ছে চেক দেওয়ার জন্য।

এ দিন প্রায় আড়াইশো চাষি রশিদ-সহ আসেন চেক নিতে। অনেকে আসেন ফর্ম পূরণ করতে। মুখ্যমন্ত্রীর ছবি লাগানো কৃষক বন্ধু প্রকল্পের ব্যানার ঝুলিয়ে চেক বিলির কাজ চলতে থাকে। প্রায় ৫০ জন চাষিকে চেক দেওয়া হয়। একইসঙ্গে চলতে থাকে ফর্ম পূরণ।

উলুবেড়িয়া-২ ব্লক কৃষি আধিকারিকের দফতরের সঙ্গেই উলুবেড়িয়া মহকুমা কৃষি আধিকারিকের দফতর। জেলার উপ মুখ্য কৃষি আধিকারিক বিকাশচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমার কিছু জানা নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন