পরিবেশ বাঁচান, আবেদন নেতাদের কাছে 

ভোটের আবহে পরিবেশ বাঁচাতে নির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি এবং তা কার্যকর করতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে আবেদন জানিয়েছে চন্দননগরের পরিবেশ অ্যাকাডেমি।

Advertisement

প্রকাশ পাল

চন্দননগর শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৯ ০৩:০৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

ভোটের বাজারে নানা প্রতিশ্রুতির ফোয়ারা ছোটায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। কিন্তু পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয় নির্বাচনী ইস্তাহারে সে ভাবে ঠাঁই পায় না। যদিও বা পায়, তা সীমাবন্ধ থাকে কাগজের মোড়কেই। ভোট মিটলে তা পূরণ নিয়ে কারও মাথাব্যথা থাকে না।

Advertisement

এই অভিযোগ পরিবেশ নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংস্থার। ভোটের আবহে পরিবেশ বাঁচাতে নির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি এবং তা কার্যকর করতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে আবেদন জানিয়েছে চন্দননগরের পরিবেশ অ্যাকাডেমি।

পরিবেশপ্রেমীদের উদ্বেগ, গোটা বিশ্বেই উষ্ণায়নের প্রভাব পড়ছে। এ দেশ, এ রাজ্যও তার ব্যতিক্রম নয়। মানুষের অসচেতনা এবং অজ্ঞতার কারণে নানা ভাবে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। প্রতিদিন বাড়ছে দূষণের মাত্রা। এমন চললে আগামী দিনে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে, মনে করছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। পরিবেশ অ্যাকাডেমি মনে করে, এ দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলি পরিবেশ বাঁচাতে উপযু্ক্ত ভূমিকা নিতে পারে। কিন্তু বহু ক্ষেত্রেই অসাধু উপায়ে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করার পিছনে রাজনৈতিক নেতাদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদতের অভিযোগ ওঠে।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ওই সংগঠনের বক্তব্য, গঙ্গা-সহ অন্য নদীর দূষণ বর্তমানে চিন্তার কারণ। গঙ্গা দূষণ রোধে কেন্দ্রীয় সরকার মন্ত্রক গড়ে নানা আশ্বাস দিলেও তা কার্যকর হয়নি। মাছ-সহ জলজ প্রাণীর অস্তিস্ব সঙ্কটে। কল-কারখানা, মানব বর্জ্য গঙ্গায় মিশছে। সমূদ্র উপকূল ভাঙছে। বনাঞ্চল ধ্বংস হওয়ায় বন্যপ্রাণও দ্রুত অবলুপ্তির দিকে এগোচ্ছে। পশুদের থাকার জায়গা এবং খাদ্যের সঙ্কট হচ্ছে। তাদের সঙ্গে মানুষের সংঘাত হচ্ছে। বনবাসী ভাল নেই। সামাজিক বনসৃজন কর্মসূচি যথাযথ ভাবে চলছে না। কখনও রেল স্টেশনে প্ল্যাটফর্মের শেড তৈরি বা সড়কপথ সম্প্রসারণের প্রয়োজনে নির্বিচারে গাছ কাটা হয়। তার পরিবর্তে যথেষ্ট সংখ্যক গাছ লাগানো হয় না বলে অভিযোগ।

দৈনন্দিন জীবনে কয়লা পুড়িয়ে বিদ্যুতের ব্যবহার করা হচ্ছে। শিল্পেও তাই। ফলে বাতাসে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ বাড়ছে। সৌরশক্তির ব্যবহার বাড়ালে এই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে। পরিবেশ অ্যাকাডেমির সভাপতি এবং পরিবেশবিদ তথা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রাক্তন মুখ্য আইন আধিকারিক বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পরিবেশ দূষণ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে রাজনৈতিক দলগুলিকেই সচেষ্ট হতে হবে। সেই আবেদনই আমরা জানিয়েছি।’’ পরিবেশকর্মীদের অভিযোগ, বহু ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থেকে আইন ভাঙার অভিযোগ ওঠে।

বিশ্বজিৎবাবুর ক্ষোভ, ‘‘গ্রাম-শহরে নির্বিচারে পুকুর ভরাট, গাছ কাটা চলছে। আবাসনের নির্মাণ গঙ্গার সীমানায় ঢুকছে। পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। নেতারা যেন‌ দূষণ সৃষ্টিকারীদের রাজনৈতিক আশ্রয় না দেন এবং ব্যক্তিগত লাভের জন্য এমন কাজে উৎসাহ না দেন, তা নিশ্চিত করা উচিত।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘প্লাস্টিকের পরিবর্তে চটের জিনিসের ব্যবহার যাতে বাড়ে, সে দিকটাও ওঁরা দেখুন।’’

পরিবেশপ্রেমী এক ব্যক্তির কথায়, ‘‘বিভিন্ন দল অভিনেতা-অভিনেত্রী, প্রাক্তন আমলা বা অন্যান্য ব্যক্তিদের ভোটের প্রার্থী করেন। কিন্তু পরিবেশবিদদের কথা ভাবেন না। সে ক্ষেত্রে কিন্তু সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা সংসদে বা বিধানসভায় পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন