Lok Sabha Election 2019

প্রচারে হাত পড়েনি গাছে, খুশি পরিবেশকর্মীরা

গাছের ক্ষতি রুখতে গত মাসে হাওড়া গ্রামীণ এলাকায় ঘুরে প্রচার চালিয়েছেন পরিবেশকর্মীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৯ ০৯:৫৭
Share:

আগে-পরে: এই গাছ থেকে খুলে নেওয়া হয়েছে ব্যানার। নিজস্ব চিত্র

প্রচারে ফল মিলেছে।

Advertisement

এতদিন নির্বাচন এলেই হাওড়ার গ্রামীণ এলাকায় গাছে পেরেক-বিদ্ধ অবস্থায় বিভিন্ন দলের পোস্টার-হোর্ডিং দেখা যেত। নির্বাচনের বহুদিন পরেও সে সব ঝুলত। খোলা হতো না। এ বার কিন্তু সেই দৃশ্য চোখে পড়ছে না।

গাছের ক্ষতি রুখতে গত মাসে হাওড়া গ্রামীণ এলাকায় ঘুরে প্রচার চালিয়েছেন পরিবেশকর্মীরা। তাঁদের দাবি, প্রচারে সাড়া মিলেছে। এলাকার গাছকে অক্ষত রেখে এ বার লোকসভা নির্বাচনের প্রচার চলছে। অনেক গাছ থেকেই ব্যানার খুলে নেওয়া হয়েছে। আর নতুন করে কোনও গাছে ব্যানার-পোস্টার সাঁটা হয়নি।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

পরিবেশকর্মীদের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেকেই। সমাজসেবী অম্লান সাঁতরা বলেন, ‘‘আমরাও লক্ষ্য রাখছি গাছের গায়ে যেন পেরেক মারা না হয়।’’ একই কথা জানিয়েছেন নাট্যকর্মী শ্যামল দত্ত। মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠন হ্যান্ডবিল ছেপে দিয়েছে। সেই সংগঠনের উলুবেড়িয়া শাখার কর্তা মসিয়র রহমান বলেন, ‘‘গাছেরও বেঁচে থাকার অধিকার আছে। তা মানবাধিকারের থেকে কিছু কম নয়। আমাদের কাছেও খবর আছে গাছের গায়ে পেরেক মারা হচ্ছে না। এটা প্রচারের সাফল্য বলেই মনে হয়।’’

পরিবেশবিদরা জানান, গাছের গায়ে পেরেক পোঁতা দণ্ডনীয় অপরাধ। বছরের অধিকাংশ সময় নানা বিজ্ঞাপনী প্রচারে ঢেকে থাকে অধিকাংশ গাছ। আর ভোটের সময় এলে গাছে পেরেক পুঁতে ঝোলানো হয় প্রাথী আর দলের ব্যানার। পুলিশ-প্রশাসন সেই ব্যানার খোলানোর বিষয়ে তৎপর নয় বলে অভিযোগ পরিবেশবিদদের।

এমন ঘটনার প্রতিবাদেই পথে নেমেছিলেন হাওড়ার পরিবেশকর্মীরা। জয়িতা কুণ্ডু কুঁতি এবং যুথি পাত্র নামে দুই পরিবশকর্মী মোটরবাইকে হাওড়া গ্রামীণ এলাকার উলুবেড়িয়া, বাগনান, রাজাপুর, পাঁচলা, বাউড়িয়া এবং সাঁকরাইলে গত মার্চ মাস জুড়ে প্রচার চালান। বিলি করেন হ্যান্ডবিল। উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতের সামনে থেকে শুরু হয়েছিল প্রচার। একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরাও হাজির ছিলেন সূচনা-পর্বে।

জয়িতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি আমাদের আবেদন নির্বাচনী প্রচারের সময়ে কোনও ভাবেই গাছের ক্ষতি করবেন না। এ বিষয়ে যাতে গ্রামবাসীরাও সচেতন হন সে জন্যই আমাদের প্রচার। গ্রামবাসীরা সচেতন হলে রাজনৈতিক দলের কর্মীদের তাঁরাই বাধা দেবেন।’’ কালীনগর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ ফারুক বলেন, ‘‘আমাদের ছাত্রেরা ওই প্রচারের জেরে অনেক সচেতন হয়েছে। ওরা জানিয়েছে, গ্রামে কেউ গাছে পেরেক মারতে এলে বাধা দেবে।’’

কী বলছে রাজনৈতিক দলগুলি?

হাওড়া গ্রামীণের তৃণমূল জেলা সভাপতি পুলক রায় বলেন, ‘‘আমরা কখনও কোনও গাছে ব্যানার লাগাতে বলি না। যদি কেউ সেই কাজ করেন, আমরা খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিই।’’ সিপিএমের হাওড়া জেলা সম্পাদক বিপ্লব মজুমদার বলেন, ‘‘গাছে পোস্টার বা ব্যানার লাগানো আমাদের নীতিবিরুদ্ধ। আমরা এ বিষয়ে বরাবরই সচেতন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন