মাঝেরহাটে বিপর্যয়ের জের যানজটের গ্রাসে হাওড়াও

এ দিন বিদ্যাসাগর সেতু থেকে শুরু হওয়া যানজট এক দিকে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে ছাড়িয়ে জাতীয় সড়ক পর্যন্ত পৌঁছে যায়। অন্য দিকে বিদ্যাসাগর সেতুর সব অ্যাপ্রোচ রোডে যানবাহন সার দিয়ে দাঁড়িয়ে যাওয়ায় নবান্ন থেকে আন্দুল রোড সংলগ্ন সব রাস্তায় যানবাহন দাঁড়িয়ে পড়ে

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:১৫
Share:

স্তব্ধ: যানজট দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

এক দিকে মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয় আর অন্য দিকে জলের পাইপ লাইনের কাজের জন্য রাতে আন্দুল রোড বন্ধ থাকার নির্দেশ— এই জোড়া ফলায় বৃহস্পতিবার ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত তীব্র যানজটে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ল হাওড়া। যার জের ছড়াল কলকাতা পর্যন্ত।
যাত্রীদের অভিযোগ, এ দিন বিদ্যাসাগর সেতু থেকে শুরু হওয়া যানজট এক দিকে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে ছাড়িয়ে জাতীয় সড়ক পর্যন্ত পৌঁছে যায়। অন্য দিকে বিদ্যাসাগর সেতুর সব অ্যাপ্রোচ রোডে যানবাহন সার দিয়ে দাঁড়িয়ে যাওয়ায় নবান্ন থেকে আন্দুল রোড সংলগ্ন সব রাস্তায় যানবাহন দাঁড়িয়ে পড়ে। সামগ্রিক ভাবে এই যানজটের জন্য হাওড়া সিটি পুলিশ মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয়কে প্রধান কারণ হিসাবে দাবি করেছে।
হাওড়া সিটি পুলিশের বক্তব্য, ভোরে হাওড়া থেকে ট্রাক ও লরি ছাড়ার পরে কলকাতা গাড়ির চাপ নিতে না পারায় যানজট শুরু হয়। সেই যানজট ছাড়তে প্রায় ছ’ঘণ্টা লেগে যায়। হাওড়ার ট্র্যাফিক পুলিশকর্তাদের একাংশের আশঙ্কা, শহরে ট্রাক ঢোকা বন্ধ না করলে আপাতত যানজট থেকে রেহাই পাওয়ার উপায় নেই।
হাওড়া ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যানজট মূলত শুরু হয়েছে মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার দিন থেকেই। সেই রাত থেকেই কলকাতায় বিভিন্ন দিকে ট্র্যাফিক ঘুরিয়ে দেওয়ার শুরু হলে তার রেশ গিয়ে পড়ে হাওড়াতে। এক দিকে বিদ্যাসাগর সেতুতে কলকাতামুখী ট্রাক, লরির লাইন হয়ে যায়। অন্য দিকে আন্দুল রোড দিয়ে সবরকম যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় চাপ গিয়ে পড়ে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের উপরে। রাত বাড়ার সঙ্গে বাড়তে থাকে যানজটও।
হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘এমনিতেই স্বাভাবিকের তুলনায় পাঁচ গুণেরও বেশি গাড়ি কোনা এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে যাতায়াত করে। তার উপরে সাঁতরাগাছি রেল সেতু চার লেনের হওয়ায় গাড়ির গতি কমে যায়। ফলে একটা সময় সেতুর দু’দিকেই গাড়ির লম্বা লাইন তৈরি হয়ে যাচ্ছে।’’
হাওড়া সিটি পুলিশের কর্তাদের দাবি, হাওড়ায় ট্রাক রাখার তেমন ব্যবস্থা নেই। শুধুমাত্র কোনা ট্রাক টার্মিনাসের উপরে নির্ভর করতে হয়। তাও বেশির ভাগ সময় ভর্তি থাকে। সে ক্ষেত্রে ট্রাকগুলিকে কলকাতায় কোথাও রাখার ব্যবস্থা করতে পারলে ভাল হয়। পাশাপাশি তাঁরা আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যারাকপুর দিয়ে কিছু ট্রাক প্রবেশ করানোরও পক্ষে।
এক পুলিশকর্তা জানান, ব্যারাকপুরের বিভিন্ন জায়গায় ‘নো এন্ট্রি’ থাকায় ট্রাকগুলি সে দিক দিয়ে ঢুকতে না পেরে হাওড়ার পথ ধরে। ফলে চাপ বাড়ে মধ্য কলকাতায়। সমস্যার সমাধানে কলকাতা পুলিশের পাশাপাশি ব্যারাকপুর ও বিধাননগর কমিশনারেট এবং অন্য জেলা পুলিশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি উচ্চপর্যায়ের মিটিং প্রয়োজন। ওই পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘নিবেদিতা সেতুতে টোলের টাকার অঙ্ক বেশি হওয়ায় বেশির ভাগ ট্রাক বিদ্যাসাগর সেতু ধরে আসার চেষ্টা করে। এতেও যানজট বেড়ে যায়।’’
হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (সাউথ, ট্র্যাফিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত) সুমনজিৎ রায় বলেন, ‘‘আমরা সবরকম ভাবে গাড়ি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে যানজট আয়ত্তে রাখার চেষ্টা করছি। আশা করছি আগামী দিনে পরিস্থিতি কিছুটা ভাল হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন