তপনের কাজে অসন্তোষ মমতার

প্রবীর-অসীমার গুরুত্ব বাড়ল হুগলি তৃণমূলে

শুক্রবার কলকাতায় দলের কোর কমিটির বৈঠকে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুগলিতে দলের জেলা সভাপতি ও মন্ত্রী তপন দাশগুপ্তের কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তার পরেই কার্যকরী সভাপতি হিসেবে উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল এবং ধনেখালির বিধায়ক অসীমা পাত্রের নাম জানান।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:২৪
Share:

এতদিন হুগলিতে দিলীপ যাদবই ছিলেন তৃণমূলের একমাত্র কার্যকরী সভাপতি। এ বার একই পদে যুক্ত হল আরও দু’টি নাম— প্রবীর ঘোষাল এবং অসীমা পাত্র।

Advertisement

শুক্রবার কলকাতায় দলের কোর কমিটির বৈঠকে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুগলিতে দলের জেলা সভাপতি ও মন্ত্রী তপন দাশগুপ্তের কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তার পরেই কার্যকরী সভাপতি হিসেবে উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল এবং ধনেখালির বিধায়ক অসীমা পাত্রের নাম জানান। ওই দু’টি নাম জানানো মাত্র হুগলিতে দলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্তের বিরোধীরা উৎসাহিত হয়ে ওঠেন। তাঁরা মনে করছেন, এতে তপনবাবুর গুরুত্ব কমল। তপন-বিরোধী হিসেবে পরিচিত এক বিধায়ক তো বলেই দেন, ‘‘দলের সভাপতির ডানা ছাঁটা হল। তিনি নিয়মিত জেলায় কোর কমিটির বৈঠক ডাকেন না। কলকাতায় ২১ জুলাইয়ের সভার আগের কয়েক মাস ওই বৈঠকই হয়নি।’’

তপনবাবু অবশ্য দলে তাঁর বিরোধী শিবিরের জল্পনা উড়িয়ে দাবি করেন, ‘‘ডানা ছাঁটা হল কোথায়? ডানা তো জুড়ল। কেউ যদি অনুযোগ করেন আমি কোর কমিটির বৈঠক ডাকি না, সেটা ভুল। জুলাই মাসের ৮ তারিখে বৈঠক করেছি।’’ এমনকী, বন্যার সময়ে তিনি যে নিজের উদ্যোগে ১০ লক্ষ টাকার ত্রাণ বিলি করেছিলেন, সে কথাও জানাতে ভোলেননি তপনবাবু।

Advertisement

তবে, তৃণমূলের অন্দরের খবর, মমতা এ দিন তপনবাবুর কাছে জানতে চান, মন্ত্রিত্ব না জেলার দায়িত্ব— কোনটা তিনি করতে পারবেন। দু’টো একসঙ্গে না পারলে যে কোনও একটা ছেড়ে দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন মমতা। সংগঠনের কাজে আরও সময় দেওয়ার জন্যেও নেত্রী তপনবাবুকে সতর্ক করেন। হুগলিতে সাম্প্রতিক কিছু গোলমালে অসন্তুষ্ট হয়েই দলনেত্রী প্রবীরবাবু এবং অসীমাদেবীকে জেলার কার্যকরী সভাপতির দায়িত্ব দেন। এখন হুগলির পর্যবেক্ষক ফিরহাদ হাকিম। সেই দায়িত্ব অরূপ বিশ্বাস সামলাবেন বলে নেত্রী জানান।

তৃণমূলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, জেলায় মাসে একবার করে কোর কমিটির বৈঠক করতে হবে। সেই বৈঠকে বিধায়কেরা ছাড়াও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এবং সভাধিপতির উপস্থিত থাকার কথা। কিন্তু হুগলিতে সেই বৈঠকই অনিয়মিত হয় বলে অভিযোগ তপন-বিরোধী শিবিরের। তা ছাড়া, দলনেত্রী বারবার হুঁশিয়ারি দিলেও জেলার নানা প্রান্তে দলের গোষ্ঠী-কোন্দল তপনবাবু ঠিকমতো সামলাতে পারছেন না বলেও মনে করছেন অনেকে। তপন-বিরোধী জেলার আর এক বিধায়কের কথায়, ‘‘সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তারকেশ্বর, গোঘাট, জাঙ্গিপাড়া, বলাগড়, ডানকুনি-সহ বিভিন্ন এলাকায় গোষ্ঠী বিবাদ তুঙ্গে। মনে হয় শক্ত হাতে জেলার হাল ধরতে চাইছেন দিদি (মুখ্যমন্ত্রী)। তাই দলে কিছু পরিবর্তন ঘটালেন।’’

এই পরিবর্তনকে ঘিরেই এখন সরগরম জেলা তৃণমূলের অন্দরমহল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement