আইটিসির সাড়ে ৪ হাজার কোটির প্রকল্পের উদ্বোধন মমতার

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চেই কারখানা সম্প্রসারণের জন‌্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জমি চাইলেন আইটিসি-র কর্ণধার। মুখ্যমন্ত্রীও তাঁকে দেখিয়ে দিলেন জমি ব্যাঙ্ক। যদিও অনুষ্ঠানের পরে সাংবাদিক সম্মেলনে জমি ব্যাঙ্ক দিয়ে তাঁদের সমস্যার সমাধান হবে কিনা তা নিয়ে কার্যত সংশয়ই প্রকাশ করলেন আইটিসির কর্ণধার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাঁচলা শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০১:২৬
Share:

প্রকল্পের উদ্বোধন করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার পাঁচলায়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চেই কারখানা সম্প্রসারণের জন‌্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জমি চাইলেন আইটিসি-র কর্ণধার। মুখ্যমন্ত্রীও তাঁকে দেখিয়ে দিলেন জমি ব্যাঙ্ক। যদিও অনুষ্ঠানের পরে সাংবাদিক সম্মেলনে জমি ব্যাঙ্ক দিয়ে তাঁদের সমস্যার সমাধান হবে কিনা তা নিয়ে কার্যত সংশয়ই প্রকাশ করলেন আইটিসির কর্ণধার।

Advertisement

বুধবার হাওড়ার পাঁচলা থেকে আইটিসি-র তিনটি বড় প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনটি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে উলুবেড়িয়া এবং পাঁচলায় দু’টি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ কারখানা এবং রাজারহাটে তথ্য প্রযুক্তি পার্ক। এই তিন প্রকল্পে আইটিসি-র বিনিয়োগ প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা। সংস্থার দাবি, উলুবেড়িয়ার কারখানাটি চালু হয়ে যাবে চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে। পাঁচলার কারখানাটি চালু হবে আগামী বছরের শেষে। প্রায় একই সময়ে চালু হয়ে যাবে তথ্যপ্রযুক্তি পার্কও।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে আইটিসির চেয়ারম্যান ওয়াই সি দেবেশ্বর মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘‘উলুবেড়িয়ার কারখানাটি আমরা আরও বড় করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু জমির অভাবে সম্প্রসারণ করা যাচ্ছে না।’’ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘জমি চাইলেই পাবেন। আমাদের জমি ব্যাঙ্ক আছে। তাতে ১ লক্ষ ৫ হাজার একর জমি মজুত আছে। শিল্পোদ্যোগীরা কারখানা করতে চাইলে জমির অভাব হবে না।’’ রাজারহাটে তাঁরা একটি হোটেল করবেন বলেও এ দিন জানিয়েছেন দেবেশ্বর।

Advertisement

তবে শিল্প গড়তে জমির জোগান নিয়ে নিজের অবস্থান থেকে না সরলেও শিল্প গড়তে এসে কোনও শিল্পপতি যাতে হেনস্থা না হন তা দেখতে দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রসঙ্গত মাস খানেক আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে জিন্দালদের সিমেন্ট কারখানার শিলান্যাস করতে এসে দলের নেতা-কর্মীদেরএ একই বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। বিভিন্ন সময়ে সিন্ডিকেট, তোলাবাজির নানা অভিযোগ উঠেছে তাঁরই দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। যা এ রাজ্যে শিল্পের প্রসারে বড় বাধা। আর তাই রাজ্যে শিল্পের সুস্থ পরিবেশ গড়তে বার বারই মুখ্যমন্ত্রীকে এমন বার্তা দিতে হচ্ছে বলে ওয়াকিবহাল মহলের মত।

তবে জমি ব্যাঙ্ক নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে সমস্যা যে খুব একটা মিটবে না তা নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে সংশয় প্রকশ করেন দেবেশ্বর। তিনি বলেন, ‘‘কারখানা সম্প্রসারণ তখনই লাভজনক হতে পারে যদি এক লপ্তে অনেকটা জমি পাওয়া যায়। কারণ খন্ড খন্ড করে জমি পেলে একেকটি ইউনিটের জন্য যে বিনিয়োগ করতে হবে তাতে শেষ পর্যন্ত প্রকল্পগুলি লাভজনক হবে কিনা সংশয় থেকে যায়। সেজন্যই উলুবেড়িয়ায় বর্তমান কারখানার কাছেই আমরা বাড়তি জমি চেয়েছিলাম।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যেহেতু বলেছেন তাই উলুবেড়িয়ার প্রকল্পের সম্প্রসারণে কারখানার কাছেই আমরা জমি চেয়ে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করব।’’

মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ভাষণে সাফ জানান, কারখানা চালাতে গিয়ে কেউ যদি বাধা দেন তা তিনি বরদাস্ত করবেন না। মঞ্চ থেকেই পাঁচলার বিধায়ক গুলশন মল্লিক, উলুবেড়িয়া দক্ষিণের বিধায়ক পুলক রায় এবং উলুবেড়িয়ার সাংসদ সুলতান আহমেদকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘‘আপনারা লক্ষ্য রাখবেন কোনও শিল্পপতিকে যেন উত্তক্ত্য করা না হয়। কেউ শিল্প গড়তে এলে সহযোগিতা করবেন। শিল্প হলে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হবে।’’ দলীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে তাঁর সতর্কবার্তা, ‘‘ব্যক্তিগত স্বার্থ নিয়ে শিল্পের মালিকদের কাছে আসবেন না। বৃহত্তর স্বার্থের কথা ভাববেন।’’ এ দিন তৃণমূলনেত্রীর সঙ্গে এসেছিলেন মুকুল রায়ও। যদিও তাঁকে মঞ্চে দেখা যায়নি। মঞ্চের নীচে অতিথিদের সঙ্গেই বসেছিলেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন