কানে ফোন, ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু

সোমবার সকালে বালি স্টেশনে, কানে মোবাইল নিয়ে কথা বলতে বলতে প্ল্যাটফর্মের একেবারে ধারে চলে যাওয়ায় ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল এক যুবকের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৫৯
Share:

কানে মোবাইল নিয়ে রেল লাইন পারাপার কিংবা প্ল্যাটফর্মের একেবারে ধারে দাঁড়িয়ে কথা বলা বন্ধ করতে লাগাতার প্রচার চলছে স্টেশনে স্টেশনে। কিন্তু সেই বার্তা যে অনেকেরই কানে পৌঁছচ্ছে না, ফের তার প্রমাণ মিলল বালিতে। সোমবার সকালে বালি স্টেশনে, কানে মোবাইল নিয়ে কথা বলতে বলতে প্ল্যাটফর্মের একেবারে ধারে চলে যাওয়ায় ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল এক যুবকের।

Advertisement

রেল পুলিশ সূত্রের খবর, মৃত যুবকের নাম মেসবাহুল ইসলাম শেখ। তাঁর বয়স চব্বিশ বছর। তিনি বর্ধমানের মাধবডিহির বাসিন্দা। তবে কর্মসূত্রে কলকাতায় বসবাস করতেন। যুবকের সঙ্গে থাকা ভোটার কার্ড থেকেই তাঁর পরিচয় জানতে পারে পুলিশ। খবর পাঠানো হয় বাড়িতে।

রেল পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ পূর্ব রেলের হাওড়া মেন শাখার দুই নম্বর প্ল্যাটফর্মে সবে মাত্র ডাউন হাওড়া লোকাল আসার খবর হয়েছে। প্ল্যাটফর্ম তখন যাত্রীদের ভিড়ে ঠাসা। তখনই দেখা যায়, এক যুবক কানে মোবাইল নিয়ে কথা বলতে বলতে বারবার প্ল্যাটফর্মের ধারে পৌঁছে যাচ্ছেন। এর পরে স্টেশনে ট্রেন ঢোকার সময়ে বারবার করে হুইসল বাজাতে থাকলেও তা কানে যায়নি ওই যুবকের। প্ল্যাটফর্মে উপস্থিত যাত্রীরাও চেঁচিয়ে সতর্ক করার চেষ্টা করেন। কিন্তু মোবাইলে কথা বলতে ব্যস্ত থাকায় ততক্ষণে তিনি একেবারে দুই নম্বর প্ল্যাটফর্মের ধারে চলে যান। তার পরেই ট্রেনের ধাক্কায় তিনি প্ল্যাটফর্ম ও রেললাইনের মাঝের ফাঁকে পড়ে যান। ট্রেন থেকে নেমে আসেন চালক এবং গার্ড। এর পরে ট্রেনটিকে খুব ধীর গতিতে প্ল্যাটফর্ম থেকে বার করে নেওয়া হয়। তখন দেখা যায়, ওই যুবক রেললাইন ও প্ল্যাটফর্মের মাঝে পড়ে রয়েছেন। তাঁর নাক-মুখ-কান দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে। রেল পুলিশ ওই যুবককে উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

Advertisement

খবর পাওয়ার পর এ দিন তপসিয়া থেকে ওই যুবকের মেসো রিজাউল মল্লিক হাসপাতালে আসেন। তিনি জানান, কয়েক দিন পরেই ওই যুবকের বোনের বিয়ে ছিল। বিয়েতে দেনাপাওনা নিয়ে খুব চিন্তায় ছিলেন মেসবাহুল। তা নিয়ে আলোচনা করতে তিনি রবিবার রাতে তপসিয়াতে মাসির বাড়িও গিয়েছিলেন।

রিজাউল আরও জানান, মেসবাহুল কয়েক মাস ধরে হাওড়ার পিলখানায় দর্জির কাজ করছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘ওকে চিন্তা করতে বারণ করেছিলাম। বলেছিলাম আমরা আছি, সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু ও তপসিয়া থেকে হাওড়া না গিয়ে বালিতে কেন এসেছিল, তা বুঝতে পারছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন