হাসপাতালে: চন্দননগরের মেয়র রাম চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র
পুরী যাওয়ার পথে ওড়িশার জলেশ্বরে এক দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হলেন চন্দননগরের মেয়র রাম চক্রবর্তী ও তাঁর পরিবারের ১১ জন। মৃত্যু হয়েছে রামবাবুর গাড়ির চালক দেবার্ত মুখোপাধ্যায়ের (৪৪)। তিনি তৃণমূলের জয়হিন্দ বাহিনীর হুগলি জেলা সহ-সভাপতি ছিলেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চাকায় সমস্যা হওয়ায় রবিবার দুপুরে জলেশ্বরে রাস্তার ধারে রামবাবুর গাড়িটি দাঁড় করিয়ে তা পাল্টাচ্ছিলেন দেবার্ত। আর একটি গাড়িতেও রামবাবুর পরিবারের লোকজন ছিলেন। সেই গাড়িটিও সেখানে দাঁড়িয়ে পড়ে। সেই সময় ওড়িশাগামী একটি মাছ বোঝাই ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পর পর দু’টি গাড়িতেই ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই মারা যান চন্দননগরের চারমন্দিরতলার বাসিন্দা দেবার্ত। রামবাবু-সহ তাঁর পরিবারের লোকজনকে প্রথমে জলেশ্বর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বালেশ্বর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়। রামবাবুর মাথায় অস্ত্রোপচার হয়েছে। তাঁর হাত-পায়েও গুরুতর চোট লেগেছে বলে তাঁর পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে। নবান্নের তরফে ওড়িশা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। রাতে তাঁকে কলকাতায় আনা হয়েছে।
রামবাবুর ভাই লক্ষ্মণবাবুও দুর্ঘটনায় জখম হন। এ দিন বালেশ্বর হাসপাতাল থেকে ফোনে তিনি কোনও রকমে বলেন, ‘‘ট্রাকটা যে হুড়মুড়িয়ে চলে আসছে, বুঝতে পারিনি। আমরা বেশির ভাগই গাড়িতে ছিলাম। ধাক্কার পরে আর কিছু মনে নেই।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল পাঁচটা নাগাদ দু’টি গাড়িতে রামবাবু, তাঁর ভাই, পুত্রবধূ, ভ্রাতৃবধূ-সহ ১২ জন রওনা হন। ফেরার কথা ছিল চার-পাঁচ দিন পরে। জলেশ্বরে ওই ট্রাকটি প্রথমে রামবাবুর গাড়ির পিছনে দাঁড়িয়ে পড়া তাঁদের অন্য গাড়িটিকে ধাক্কা মারে। সেই গাড়িটি উল্টে যায়। তবে, ওই গাড়ির চালক কিছুটা দূরে থাকায় রক্ষা পেয়েছেন। এর পরেই ট্রাকটি ধাক্কা মারে রামবাবুর গাড়িতে। রামবাবুও গাড়িতেই ছিলেন। আহতদের চিৎকার শুনে স্থানীয়েরা তখনই ঘটনাস্থলে চলে আসেন। দুর্ঘটনায় খবর চন্দননগরে পৌঁছতেই খলিসানিতে মেয়রের বাড়ির সামনে ভিড় জমে। ওই বাড়িতে ছিলেন রামবাবুর ছেলে পিকাই। দুই মেয়র পারিষদ অনিমেষ বন্দ্যেপাধ্যায় এবং মুন্না অগ্রবালকে নিয়ে তিনি বিকেলে ওড়িশা রওনা হন। কৃষি বিপণন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত গোঘাটের বিধায়ক মানস মজুমদার-সহ ১০ জনকে ওড়িশা পাঠিয়েছেন।