স্বাগত: তারকেশ্বরে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: দীপঙ্কর দে।
দিন তিনেক আগেই ব্যারাকপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, কথায় কথায় নতুন হাসপাতাল আর নয়। বরং যে সরকারি হাসপাতালগুলি ইতিমধ্যে চালু রয়েছে সেগুলির সংস্কার ও পরিষেবা উন্নত করার দিকেই তাঁর সরকার এখন মন দিতে চায়। কিন্তু বৃহস্পতিবার হুগলিতে প্রশাসনিক সভার মঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী নতুন আরও একটি মেডিক্যাল কলেজ তৈরির ঘোষণা করলেন। সেটি হবে তারকেশ্বরে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘আমি চাই হুগলিতে একটি মেডিক্যাল কলেজ হোক। প্রফুল্ল সেনের নামে এটি হবে।’’
এর আগে ৫টি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ তৈরির ঘোষণা হয়েছিল যথাক্রমে কোচবিহার, রায়গঞ্জ, ডায়মন্ড হারবার, পুরুলিয়া এবং রামপুরহাটে। সেগুলির কোনওটির সবেমাত্র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়েছে, কোনওটির আবার সেটাও হয়নি। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে প্রস্তাবিত ভাঙড়, কার্শিয়াং, ধুবুলিয়া ও কোচবিহারের কাজও বিন্দুমাত্র এগোয়নি। তার উপর রয়েছে চিকিৎসক ও নার্সের অভাব। রাজ্যে ৪২টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল হচ্ছে। এত হাসপাতালের জন্য চিকিৎসক ও নার্স কী ভাবে জোগা়ড় হবে ভেবে কূলকিনারা পাচ্ছেন না স্বাস্থ্যকর্তারা। ব্যারাকপুরের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী আপাতত আর নতুন কোনও হাসপাতাল হবে না-বলায় তাঁরা কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিলেন। তার পরেই আবার তারকেশ্বরের মেডিক্যাল কলেজের ঘোষণায় ডাক্তার ও নার্সের ব্যবস্থা করা নিয়ে তাঁদের চিন্তা বেড়েছে।
তবে প্রশাসনিক সূত্রের খবর, তারকেশ্বরের গ্রামীণ হাসপাতাল নিয়ে মানুষের ক্ষোভ অনেক দিনের। তারকেশ্বর ছাড়াও পুড়শুড়া, খানাকুল, ধনেখালি বা পাশ্ববর্তী বর্ধমান জেলার জামালপুরের একাংশ এই হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। অভিযোগ, হাসপাতাল ভবনে রং হয়েছে কিন্তু পরিষেবার মান সে ভাবে আধুনিক হয়নি। অসুখ একটু জটিল হলেই রোগীকে শ্রীরামপুর বা কলকাতার হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রতিদিন গড়ে আড়াইশো থেকে তিনশো রোগী আসেন বহির্বিভাগে। অন্তর্বিভাগে শয্যার সংখ্যা ৬০টি। কিন্তু চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ৬ জন। নার্স ১৮ জন। বন্ধ্যাকরণ এবং সিজার বাদে অন্য কোনও অস্ত্রোপচার হয় না। হাত-পা ভাঙলেও অন্যত্র যেতে হয় চিকিৎসার জন্য। এই রকম অবস্থায় তারকেশ্বরে একটি হাসপাতাল প্রয়োজন ছিল বলে মনে করছেন অনেকেই।