চন্দননগরে ভেস্তে গেল পুর-বৈঠক

এরপর এই বিষয়টি নিয়ে জট কাটাতে আসরে নামানো হয় জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল এবং চন্দননগরের মহকুমাশাসক সানা আকতারকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চন্দননগর শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৭ ০৪:৪১
Share:

প্রতিবাদ: পার্থ দত্তকে স্মারকলিপি রমেশ তিওয়ারির। নিজস্ব চিত্র

শেষ পর্যন্ত চন্দননগর পুরসভার ‘বিদ্রোহী’ দলীয় কাউন্সিলরদের নিয়ে জলঘোলা ঠেকাতে আসতে নামতে হল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি তথা সাংসদ সুব্রত বক্সীকে। তবু ওই পুরসভায় বোর্ড মিটিং ভেস্তে যাওয়া আটকানো গেল না।

Advertisement

বুধবার কলকাতায় ওই কাউন্সিলরদের নিয়ে রাত পর্যন্ত বৈঠক করেন সুব্রতবাবু। এ দিনই আবার ওই পুরসভার পূর্ব নির্ধারিত বোর্ড মিটিং ছিল। পুরসভার ৩৩ জন কাউন্সিলরকেই মিটিংয়ের চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ‘বিদ্রোহী’রা অনড় থাকায় পরিস্থিতি ঘোরালো ওঠে। সুব্রতবাবু সরাসরি জেলাশাসক সঞ্জয় বনশলকে ফোন করে মিটিং বন্ধ রাখার অনুরোধ করেন বলে দলীয় সূত্রের খবর। কিন্তু পুরবিধি অনুযায়ী, একবার বোর্ড মিটিং ডাকা হলে মেয়র তা সহজে বাতিল করতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে বিরোধীরা এর আইনি সুযোগ নিয়ে আদালতেও চলে যেতে পারে। মেয়র রাম চক্রবর্তী এ কথা দলীয় নেতৃত্বকে জানান।

এরপর এই বিষয়টি নিয়ে জট কাটাতে আসরে নামানো হয় জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল এবং চন্দননগরের মহকুমাশাসক সানা আকতারকে। পুরসভার চেয়ারম্যান, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জয়ন্ত দাসকে লিখিত ভাবে জানানো হয় জেলাশাসকের দফতরে উন্নয়ন সংলক্রান্ত একটি বৈঠক হবে। চন্দননগরের পুর কমিশনার অমিতাভ সরকারকে তখন বিষয় জানিয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। এরপরই এ দিনের নির্ধারিত বোর্ড মিটিং বাতিল করে জেলাশাসকের দফতরেওই বৈঠককে মেয়রকে লিখিত ভাবে উপস্থিত থাকতে বলা হয়।

Advertisement

কাজে তাঁদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না, এই অভিযোগ তুলে পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করে কিছুদিন আগেই মেয়রকে চিঠি দিয়েছিলেন চন্দনননগর পুরসভার ১২ জন প্রবীণ তৃণমূল কাউন্সিলর। তার পর থেকে এ নিয়ে বিস্তর জলঘোলা চলছিল। পুরসভার ৩৩ আসনের মধ্যে ২৩টি রয়েছে তৃণমূলের। এর মধ্যে ১৬ জন ‘বিদ্রোহী’ হয়ে ওঠায় পুরবোর্ড অনাস্থার মুখে পড়ার সম্ভাবনা দেখা গিয়েছে।

‘বিদ্রোহী’দের অভিযোগ, পুরো বিষয়টি জটিল করেছেন স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। ওই কাউন্সিলরদেরই এক জন বলেন, ‘‘আমরা ইন্দ্রনীলবাবুর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম। তিনি আমাদের বক্তব্য শোনেননি। অথচ, মমতাদি (মুখ্যমন্ত্রী) বলছেন দলের প্রবীণদের সম্মান ও গুরুত্ব দিতে।’’ এই বিষয়ে অবশ্য বার বার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও ইন্দ্রনীলবাবু ফোন ধরেননি। এসএমএসেরও উত্তর দেননি।

পুরবোর্ডে শাসকদলের এই টানাপড়েনকে রাজনৈতিক ভাবে কাজে লাগাতে আসরে নেমেছে সিপিএম। পুরসভার বিরোধী দলনেতা রমেশ তিওয়ারি এই ঘটনার প্রতিবাদে এবং চন্দননগরের পুর পরিষেবা নিয়ে নানা অভিযোগ তুলে পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) পার্থ দত্তকে একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন। এ বিষয়ে পার্থবাবু কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন