রাজেশ খুনে অধরা দুষ্কৃতী, পুলিশ তিমিরেই

চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার পীযূষ পাণ্ডে অবশ্য দ্রুত দুষ্কৃতীদের ধরার আশ্বাস দিয়েছেন। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ সব রকম ভাবে চেষ্টা করছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৭ ০১:২১
Share:

বিপাকে: সন্তান কোলে চন্দা। নিজস্ব চিত্র

মিলল না কোনও সূত্র। ব্যান্ডেলের টোটো-চালক রাজেশ মোহালির দেহ উদ্ধারের পর কেটে গিয়েছে গোটা একটা দিন। কিন্তু পুলিশ সেই তিমিরেই। কে বা কারা কেন তাঁকে খুন করল, সোমবার বিকেল পর্যন্ত এর কোনও উত্তর মিলল না।

Advertisement

মাসকয়েক ধরে হুগলির জেলা সদর চুঁচুড়া এবং সংলগ্ন এলাকায় দুষ্কতীদের দৌরাত্ম্য যে ভাবে বাড়ছে, তাতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন সাধারণ মানুষ। পুলিশ কমিশনারেট গড়ে লাভ কী হল, এই প্রশ্নও উঠেছে। রাজেশ-খুনে পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে না-পারায় ক্ষোভ বাড়ছে তাঁর পড়শিদের। স্বামীকে হারিয়ে ছোট দুই সন্তানকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন রাজেশের স্ত্রী চন্দা। পড়শিরা অবশ্য তাঁর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। চন্দারও প্রশ্ন, ‘‘কী ভাবে দিন কাটাব বুঝতে পারছি না। যারা আমার সর্বনাশ করল, তাদের পুলিশ কেন ধরতে পারছে না?’’

চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার পীযূষ পাণ্ডে অবশ্য দ্রুত দুষ্কৃতীদের ধরার আশ্বাস দিয়েছেন। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ সব রকম ভাবে চেষ্টা করছে। আশা করছি শীঘ্রই রহস্যের কিনারা হবে। দুষ্কৃতীরা ধরা পড়বে।’’

Advertisement

টোটো নিয়ে বেরিয়ে গত বুধবার নিখোঁজ হন ব্যান্ডেলের মানসপুর বস্তির বাসিন্দা রাজেশ। বৃহস্পতিবার সকালে চুঁচুড়ার পাঙ্খাটুলির কালীতলা থেকে রক্তের দাগ লাগা টোটোটি উদ্ধার করা গেলেও রাজেশের খোঁজ মেলেনি। রবিবার সকালে বাড়ির এক কিলোমিটারের মধ্যে দক্ষিণ নলডাঙা এলাকার একটি ডোবা থেকে রাজেশের দেহ মেলে। শরীরে ধারাল অস্ত্রের কোপ ছিল। খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।

পরোপকারী হিসেবে পরিচিত রাজেশকে কারা খুন করল এ নিয়ে জল্পনা শুরু হয় তখন থেকেই। এমনকী, বৃহস্পতিবার রাতে টোটোটি পাঙ্খাটুলিতে কী ভাবে এল, এ প্রশ্নেরও উত্তর মেলেনি। তদন্তকারীদের অনুমান, গত বুধবার রাত সাতটা থেকে আটটার মধ্যে খুন হন রাজেশ। কারণ, সাতটার আগে ব্যান্ডেলের লিচুতলার একটি অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। আর পাঙ্খাটুলিতে রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ চার জনকে ওই টোটোটি রেখে যেতে দেখেন স্থানীয়েরা।

জেলা সদরের বহু মানুষ মনে করছেন, স্থানীয় দুষ্কৃতীদের সাহায্য নিয়ে বহিরাগত দুষ্কৃতীরা অপকর্ম ঘটিয়ে চম্পট দিচ্ছে। সে কারণে পুলিশ তাদের নাগাল পাচ্ছে না। পুলিশ কমিশনারেটের কর্তাদের একাংশ পরিকাঠামোগত সমস্যার কথা বলছেন। তাঁদের মতে, এই জেলায় পুলিশ প্রশাসনে দু’টি ভাগ হয়ে গিয়েছে— কমিশনারেট এবং গ্রামীণ। কিন্তু পুলিশকর্মীর সংখ্যা সে ভাবে বাড়েনি। ফলে, রাস্তাঘাটে নজরদারি, রাতের টহল-সহ অনেক কাজ সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে করাতে হচ্ছে। অপরাধের তদন্তেও তাই দেরি হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন