ভোর চারটে নাগাদ ঘুম থেকে ওঠা অভ্যাস গৃহকর্তার। কিন্তু বুধবার তাঁর ঘুম ভেঙেছিল অনেক পরে। উঠে ঘরের অবস্থা দেখে হকচকিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ঘরের দু’টি আলমারি হাট করে খোলা। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে কাপড় জামা। দরজাও খোলা। কী হয়েছে বুঝতে পেরে স্ত্রীকে ডাকেন তিনি। তিনিও অঘোরে ঘুমোচ্ছিলেন। এর পর দু’জনে আলমারি খুলে দেখেন, লকারে রাখা নগদ ১ লক্ষ ২৬ হাজার টাকা সমেত সমস্ত সোনা ও রুপোর গয়না নিয়ে চম্পট দিয়েছে চোরের দল। কিন্তু তাঁরা কিছু টেরই পাননি।
বুধবার হাওড়ার দাশনগরের বালিটিকুরি বকুলতলার ঘটনা। বালির নিশ্চিন্দার পর গত দু’দিনের মধ্যে দাশনগর এলাকার পরপর তিনটি বাড়িতে প্রায় একই কায়দায় চুরি হওয়ায় উদ্বিগ্ন পুলিশ প্রশাসন। প্রথম চুরির ঘটনা ঘটে মঙ্গলবার। ওই রাতে রামকৃষ্ণ পল্লিতে পর পর দু’টি বাড়িতে চুরি হয়। এর আগে ৬ তারিখ নিশ্চিন্দা থানার উত্তর জয়পুর বিলে পরপর চারটি বাড়িতে একই ভাবে চোরের দল হানা দেয়। ঘরের মধ্যে স্প্রে করার পর লক্ষাধিক টাকার গয়না নিয়ে চম্পট চোরের দল।
পুলিশ জানায়, বকুলতলায় একতলা বাড়িতে থাকেন সমীরবাবু। ওই এলাকায় তাঁর চায়ের দোকান রয়েছে। তাই ভোরে তাঁর ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস। যদিও এ দিন তিনি এবং তাঁর স্ত্রী অনেক দেরিতে ঘুম থেকে ওঠেন। এ দিন সমীরবাবু বলেন, ‘‘চোরেরা মনে হয় কোনও ঘুমের ওষুধ স্প্রে করে দিয়েছিল। না হলে ঘরে ঢুকে দুটো আলমারি ও লকার ভেঙে লুঠপাট চালিয়েছে অথচ টেরই পাইনি। ঘটনায় আমরা আতঙ্কিত।’’
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের ধারণা, এটা একটা নির্দিষ্ট কোনও চক্রের কাজ। কারণ প্রতিটি ক্ষেত্রেই চোরের দল গ্রিল ভেঙে ঢুকে স্প্রে করে ঘুমের ওষুধ ছড়িয়ে নির্বিঘ্নে চুরি করে চম্পট দিয়েছে। কিন্তু সেই চক্রের হদিস না মেলায় স্বাভাবিক ভাবেই চিন্তিত হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দারা। হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান সুমিত কুমার বলেন, ‘‘একই কায়দায় চুরি হওয়ায় মনে হচ্ছে কোনও সংগঠিত দলের কাজ। আমরা খুব শীঘ্রই দলটাকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি।’’