তরুণীদের ছবি নিয়ে ‘অশ্লীলতা’

পুলিশ জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার জগাছার বাসিন্দা এক তরুণী ‘গুগল ইমেজ’-এ প্রথম তাঁর মুখ বসানো একটি অশ্লীল ছবি দেখতে পান। এর পরে গুগল ম্যাপেও একই ছবি নজরে আসে তাঁর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৭ ০১:২৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে একাধিক তরুণীর মুখ অশ্লীল ছবির সঙ্গে জুড়ে ভাইরাল করে দেওয়া হল। মারাত্মক এই সাইবার অপরাধের ঘটনা ঘটেছে হাওড়ার জগাছা থানা এলাকায়। বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে চার জন তরুণী একসঙ্গে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। কে বা কারা এই কাণ্ডে যুক্ত, সে বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার জগাছার বাসিন্দা এক তরুণী ‘গুগল ইমেজ’-এ প্রথম তাঁর মুখ বসানো একটি অশ্লীল ছবি দেখতে পান। এর পরে গুগল ম্যাপেও একই ছবি নজরে আসে তাঁর। একই ভাবে এই দু’টি নেটওয়ার্কে দেখতে পাওয়া যায় তাঁর কলেজের কয়েক জন বান্ধবীর একই রকম ছবি। এই ছবিগুলি দেখার পরে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে ওই তরুণীর। তিনি ঘটনাটি তাঁর বাবা-মাকে জানান। খবর যায় তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় ছাত্রনেতা সৌমিক মুখোপাধ্যায়ের কাছেও। এর পরে তাঁরই পরামর্শে ওই চার তরুণী জগাছা থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।

শুক্রবার জগাছার বাসিন্দা তৃণমূলের ওই ছাত্রনেতা সৌমিক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শুধু চার জন তরুণীর তরফে অভিযোগ দায়ের হলেও এই এলাকার কম করে ২৫ থেকে ২৮ জন মহিলার মুখ এই ভাবে অশ্লীল ছবির সঙ্গে সুপার ইম্পোজ করে বাজারে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশকে মঙ্গলবার ঘটনাটি জানানোর পরেও পুলিশ এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।’’

Advertisement

এ দিকে এই ভাবে নিজেদের মুখ বসানো অশ্লীল ছবি ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন অভিযোগকারিণী তরুণীরা ও তাঁদের পরিবারের লোক জন। এক তরুণী এ দিন বলেন, ‘‘এই ঘটার পরে আমরা মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছি। কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এই কাণ্ড করেছে বলে মনে হচ্ছে। তাকে গ্রেফতারের পাশাপাশি ওই সব ছবি যাতে মুছে দেওয়া যায়, সেটা গুগলকে জানাতে হবে।’’

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার এই চার তরুণী থানায় এই অভিযোগ দায়ের করার পরেই বিষয়টা হাওড়া সিটি পুলিশের সাইবার অপরাধ শাখাকে জানানো হয়েছে। ওই শাখাই তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের সন্দেহ, এলাকারই কোনও আলোকচিত্রী এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। কারণ যে সব ছাত্রীর ছবি ব্যবহার হয়েছে, তাঁদের এক জন জানিয়েছেন, তাঁর ছবি একমাত্র ওই আলোকচিত্রীর কাছেই ছিল। কারণ তিনিই তাঁর ছবি তুলেছিলেন। পুলিশ ওই ব্যক্তিকে খুঁজছে।

হাওড়া সিটি পুলিশের এসিপি (দক্ষিণ) গুলাম সারওয়ার বলেন, ‘‘যে বা যারা এই অপরাধ করেছে, তারা গুগল ম্যাপ ও গুগল ইমেজে গিয়ে কারও আইপি অ্যাড্রেস ব্যবহার করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। সেটা যে জগাছা এলাকা থেকেই হতে হবে, তার কোনও অর্থ নেই। আমরা তাই গুগলকে সরাকরি ভাবে মেল করে জানতে ছেয়েছি, কোন আই পি থেকে এই ছবিগুলি করা হয়েছে।’’

এসিপি (দক্ষিণ) জানান, ছবিগুলি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সুপার ইম্পোজ করে বসানো হয়েছে। এটা করার জন্য কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ হওয়া প্রয়োজন। তবে যে-ই এই কাণ্ড করুক, সে ধরা পড়বেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন