জমা-জল: এই অবস্থা পাল্টাবে, প্রশ্ন পুরবাসীর।ছবি: দীপঙ্কর দে
কোথাও কাঁচা রাস্তা পাকা হয়েছে। কোথাও ত্রিফলার নরম আলো বসেছে। কিন্তু নিকাশি ব্যবস্থার প্রশ্নে ভ্রু কুঁচকে ফেলছেন শহরের বাসিন্দারা।
প্রায় এক দশক হতে চলল, পঞ্চায়েত থেকে পুরসভায় উন্নীত হয়েছে ডানকুনি। কিন্তু শহরের বাসিন্দারা বলছেন, বর্ষা এলেই নোংরা জলে ভাসে এলাকা। মাত্রাছাড়া হয় মশার উপদ্রব। তার আগে এখনই মশার উপদ্রব যে ভাবে বাড়ছে, তাতে বর্ষার মরসুমে কী হবে তা নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন অনেকেই। মশা মোকাবিলায় পুরসভার হেলদোল নেই, অভিযোগ এমনটাই।
এ বছরের গোড়াতেই ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া রোধে পুরসভাগুলিকে অভিযান শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। উপ-পুরপ্রধান দেবাশিস মুখোপাধ্যায় দাবি করেছেন, মশাবাহিত রোগ যাতে না-ছড়ায় সে জন্য ইতিমধ্যেই পুরসভা উদ্যোগী হয়েছে। মশার লার্ভা মারার তেল ছড়ানোর কাজ শুরু হয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে বৈঠকও করা হয়েছে। মানুষকে সচেতন করতে প্রচার চালানো হবে। তবু সংশয় যাচ্ছে না শহরের বাসিন্দাদের।
গত বছর বর্ষার মরসুমে মশাবাহিত রোগের শিকার হয়েছিলেন অনেকেই। ফি-বছর স্টেশনপল্লি, তাঁতিপাড়া, কলোনি, পূর্বাশা, ডানকুনি হাউজিং-সহ বিভিন্ন জায়গায় জল দাঁড়িয়ে যায়। দক্ষিণ সুভাষপল্লির বাসিন্দা এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘বর্ষাকাল এলে দুর্বিষহ অবস্থা হয়।’’ প্রাক্তন সিপিএম কাউন্সিলর তথা দলের চণ্ডীতলা পাঁচ নম্বর লোকাল কমিটির সম্পাদক মানিক সরকার বলেন, ‘‘অপরিকল্পিত নিকাশি ব্যবস্থা বর্ষাকালে শহরকে ডুবিয়ে ছাড়ছে। সার্বিক ভাবে সুষ্ঠু নিকাশির পরিকল্পনা করা হোক। না হলে সমস্যা মিটবে না।’’ শহরকে ডোবানোর মূলে রয়েছে ডানকুনি খাল। মজা এই খালের ধারে প্রচুর খাটাল রয়েছে। সেই সব খাটাল এবং বিভিন্ন কল-কারখানার বর্জ্য পড়ে খালটির অবস্থা শোচনীয়। ফলে, নিকাশির পক্ষে সহায়ক হওয়া দূরঅস্ত্, এই খাল এখন মশা-মাছির আঁতুরঘর। বছর খানেক আগে পুরসভা খাল সংস্কারে উদ্যোগী হলেও তা কাজের কাজ কিছু হয়নি বলে অভিযোগ। উপ-পুরপ্রধানের দাবি, নিকাশি সমস্যা সমাধানে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নর্দমা তৈরির কাজ চলছে। বিভিন্ন জায়গায় হাইড্রেন তৈরি করা হচ্ছে। বর্ষার আগেই কাজ শেষ হবে। এ বার আর জল দাঁড়ানোর সমস্যা থাকবে না।
কিন্তু ডানকুনি খালের কী হবে?
পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, পুর-এলাকায় ডানকুনি খাল সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু অন্য জায়গায় তা হয়নি। ফলে, লাভ হয়নি। পুরসভার তরফে খাটাল-মালিকদের কাছে চিঠি দিয়ে আবেদন জানানো হয়েছে, তাঁরা যাতে গোবর-সহ যাবতীয় বর্জ্য অন্যত্র ফেলার ব্যবস্থা করেন।
তবু লাভ কতটা হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।