রোজগারে টান পড়তেই খুনের চক্রান্ত, জেরায় দাবি দুষ্কৃতীদের

গত ২১ নভেম্বর রাতে বাড়ির কাছে রাস্তায় দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হয়েছিলেন ভদ্রেশ্বরের পুরপ্রধান, মনোজ উপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবদদাতা

ভদ্রেশ্বর শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৩৩
Share:

সামনে: চুঁচুড়া থানায় সংবাদমাধ্যমের সামনে হাজির করানো হয় ধৃতদের। ছবি: তাপস ঘোষ

রীতিমতো পরিকল্পনা করেই খুন করা হয়েছে ভদ্রেশ্বরের পুরপ্রধানকে। তদন্তকারীদের দাবি, বুধবার জেরার মুখে এই কথাই জানিয়েছে পুরপ্রধান খুনে ধৃতেরা।

Advertisement

গত ২১ নভেম্বর রাতে বাড়ির কাছে রাস্তায় দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হয়েছিলেন ভদ্রেশ্বরের পুরপ্রধান, মনোজ উপাধ্যায়। মঙ্গলবার রাত থেকেই পুলিশ দুষ্কৃতীদের সম্ভাব্য ডেরায় হানা দিলেও কাউকে ধরতে পারছিল না। সোমবার রাতে অবশেষে সাফল্য মেলে।

পুলিশের কাছে খবর ছিল, সাত দুষ্কৃতী উত্তরপ্রদেশের বারাণসীর একটি হোটেলে রয়েছে। ওই হোটেলের ঠিকানা জেনে সোমবার রাতেই সেখানে পৌঁছে যান তদন্তকারীরা। তাঁদের সঙ্গে ছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এটিএসের একটি বাহিনী। সেখানেই হাতেনাতে ধরা পড়ে
সাত জন।

Advertisement

পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতেরা জানায়, এক সময়ে তাঁদের সঙ্গে পুরপ্রধানের ভাল যোগাযোগ ছিল। তাদের সৎ পথে রোজগারের ব্যবস্থা করতে পুরপ্রধান স্থানীয় একটি জুটমিলে কাজের বরাতও পাইয়ে দেন। কিন্তু ওই যুবকদের কাজকর্মে ইদানিং পুরপ্রধান খুশি ছিলেন না। তাই গত কয়েক মাস ধরেই পুরপ্রধানের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় ওই যুবকদের। ২১ তারিখ পুরপ্রধানকে খুনের আগে পরিকল্পনা কষে নিয়েছিল তারা। তাই পুরপ্রধান খুনের পরই সবাই ভিন রাজ্যে গা ঢাকা দেয়। তবে ধৃতদের দাবি কতটা সত্যি, বা তাদের পিছনে অন্য কোনও বড় মাথা কাজ করছে কি না, বা ধৃতরা কাউকে আড়াল করছে কি না, সেই সব দিকও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

হুগলির এডিসিপি অতুল ভি-র নেতৃত্বে চন্দননগর কমিশনারেটের একটি দল দুষ্কৃতীদের পিছু নিয়েছিল। কিন্তু ঠিকানা বদল করায় বার বার ফসকে যাচ্ছিল তারা। শেষ পর্যন্ত পটনা হয়ে বারাণসী যাওয়ার পরই সোমবার পুলিশের জালে পড়ে অভিযুক্তরা। মঙ্গলবার ধৃতদের বারাণসী আদালতে তুলে ট্রান্সজিট রিমান্ডের আবেদন করা হয়। বিচারক আবেদন মঞ্জুর করেন। বুধবার দুপুরে বারাণসী থেকে সড়ক পথে হুগলিতে দুষ্কৃতীদের আনা হয়। উত্তরপ্রদেশের এটিএসের (অ্যান্টি টেরোরিস্ট স্কোয়াড) একটি দল চুঁচুড়া পর্যন্ত আগাগোড়া তাদের পাহারায় ছিল। আজ বৃহস্পতিবার তাদের চন্দননগরে এসিজেএমের আদালত তোলার কথা।

তদন্তকারী জানান, পুরপ্রধান খুনে এখনও পর্যন্ত আট জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে একজন পালিয়ে গিয়েছে। সে এই রাজ্যের কেউ নয়। সম্ভবত উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। ওই লোকটিই ধৃতদের বারাণসীতে থাকার ব্যবস্থা করেছিল। তাকে ধরতে তল্লাশি চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন