শিক্ষকেরা আসেননি। খেলায় মত্ত পড়ুয়ারা। গোঘাটে মোহন দাসের তোলা।
কয়েকজনকে দেখা গেল গাছতলায় ও পুকুর পাড়ে খেলতে। কয়েকজন আবার শিক্ষকের টেবিলে বা বেঞ্চে উঠে মাতামাতি করছে। আর ছাত্রছাত্রীদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন উপস্থিত একজন মাত্র শিক্ষক সঞ্জয় পান। তিনি এ-ঘর, ও-ঘর দৌড়াদৌড়ি করছেন। শনিবার এমনই চিত্র দেখা গেল গোঘাটের গোবিন্দপুর পশ্চিম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, এমনিতে সময়ে আসেন না শিক্ষকেরা। এ দিন আবার কাউকে কিছু না জানিয়ে হঠাৎ করেই স্কুলের বাকি চার শিক্ষক আসেননি। বিষয়টা নিয়ে স্কুল পরিদর্শকের কাছে অভিযোগও করেছেন গ্রামের মানুষেরা। প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শক সুব্রত কুণ্ডু বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই স্কুলে ৭৫ জন ছাত্রছাত্রী আছে। এ দিন হাজির ছিল ৫৭ জন। গ্রামবাসী মহম্মদ সেরিফ বলেন, ‘‘বেলা ১১টা নাগাদ দেখি ছেলেরা বাইরে পুকুর পাড়ে খেলছে। তাদের জিজ্ঞাসা করে জানতে পারি, ৫ জন শিক্ষকের একজনও আসেননি। ১১টা ১৫ মিনিট নাগাদ শিক্ষক সঞ্জয়বাবু এলেন। তিনি বললেন, তাঁর দেরি হয়ে গিয়েছে। অন্য শিক্ষকেরা কেউ আসবেন না তিনি জানতেন না।’’ স্কুলের এই ছন্নছাড়া পরিস্থিতি সামলতে গ্রামের দুই যুবক ক্লাসও নেন।
প্রসঙ্গত, মাস দশেক আগে স্কুলের প্রধান শিক্ষক অবসর নেওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে সহকারী শিক্ষক সুজিত ধাড়া দায়িত্ব নেন। এ দিন স্কুলের এই হাল নিয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বলেন, ‘‘আমার মেয়ের শরীর খারাপ। সহশিক্ষকদের বিষয়টি বলেও ছিলাম। তাঁদের মধ্যে একজন এলেও বাকিরা কেন এলেন না বুঝতে পারছি না। স্কুলে এই ঘটনার জন্য আমি গ্রামবাসীর কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।’’
সঞ্জয়বাবু বলেন, ‘‘ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এ দিন নাও আসতে পারেন বলে বলেছিলেন। কিন্তু অন্যরা যে আসবেন না আমার জানা ছিল না। একার পক্ষে স্কুল সামলাতে অসুবিধা হয়েছে।’’ গ্রাম শিক্ষা কমিটির সদস্য অবাইদুল রহমান বলেন, ‘‘স্কুলে পঠনপাঠনের পরিবেশ ফেরাতে আমরা চেষ্টা করছি।’’