নেই: চিকিৎসক না থাকার সেই বিজ্ঞপ্তি। নিজস্ব চিত্র
এলাকায় জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু রবিবার এলাকার একমাত্র উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিজ্ঞপ্তি পড়ল, ‘‘আজ হাসপাতালে ডাক্তার নেই।’’ ঘটনাটি পান্ডুয়ার বৈঁচি বিএল মুখার্জি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির উপরে বৈঁচি, জামনা-সহ চার-পাঁচটি পঞ্চায়েতের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ নির্ভরশীল। সম্প্রতি ওই এলাকাগুলিতে জ্বরের প্রকোপ শুরু হয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ দিনই বন্ধ থাকে সেটি।
এ দিন মাথা-যন্ত্রণার সমস্যা নিয়ে টোটো ভাড়া করে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসেছিলেন বৈঁচি গ্রামের এক মহিলা। বাধ্য হয়ে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে পান্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে গেলেন তিনি। এই ভাবেই ফিরে গেলেন আরও অনেক রোগী। রবিবার সারা দিন কার্যত কোনও কাজই হল না এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এটি কোনও বিক্ষিপ্ত ঘটনা নয়। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বেশিরভাগ দিনই কোনও চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী থাকেন না। পরিষেবা মেলে না বলেই অভিযোগ।
উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখা গিয়েছে, রোগীদের শৌচাগার ঝুলে ভর্তি। জমে রয়েছে আবর্জনা। অবহেলায় পড়ে রয়েছে নতুন স্যালাইন। অথচ ওই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে পুরুষ ও মহিলা মিলিয়ে ১০টি শয্যা রয়েছে। খাতায়-কলমে দু’জন চিকিৎসক, তিনজন মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী ও একজন সাফাইকর্মী রয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে দু’জন চিকিৎসকই অনিয়মিত। মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীদেরও দেখা পাওয়া যায় না। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগী ভর্তি নেওয়া অনেক দিন ধরে বন্ধ।
দিনের পর দিন ধরে স্থানীয় বাসিন্দারা এখানে এসে চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ, জ্বর-সর্দি হলেও তাঁদের পান্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। অথচ বছর কয়েক আগেও এটি ভালোভাবে চলতো। রোগী ভর্তি থাকতো। বৈঁচি পঞ্চায়েতের সদস্য তথা পান্ডুয়া ব্লক যুব তৃণমূলের সভাপতি সঞ্জিত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, চিকিৎসার পরিকাঠামো থাকলেও চিকিৎসকদের অবহেলা জন্যই ওই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যেতে বসেছে।
পান্ডুয়া ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক শঙ্কর নারায়ণ সরকার বলেন, ‘‘ওই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির দশটি শয্যার জন্য দু’জন চিকিৎসক রয়েছে। এক জনকে আসছেন। অন্য জন আসছেন না। জেলার স্বাস্থ্য দফতরে বিষয়টি জানিয়েছি। আশা করছি এই সমস্যা বেশিদিন থাকবে না।’’