বিক্ষোভ: পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
সরকারি বিদ্যালয়ের চৌহদ্দিতে বেসরকারি স্কুল চালানো যাবে না—এই যুক্তিতে বেসরকারি শিশুদের স্কুল বন্ধের নির্দেশ দিল প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ।
বৈদ্যবাটি গভর্নমেন্ট কোয়ার্টারের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই ঘটনার জেরে মঙ্গলবার স্কুল চত্বরে শোরগোল পড়ে। প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান শিশুদের স্কুলটির অভিভাবকরা।
পুলিশ ও স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈদ্যবাটি গভর্নমেন্ট কোয়ার্টারে সরকারি শিশুকল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়টি তৈরি হয় ১৯৭৬ সালে। সেই সময় থেকেই শিশু শিক্ষা নিকেতন নামে বেসরকারি শিশু বিভাগটি চলত ওই স্কুলভবনেই। সকাল সাড়ে ৭টা থেকে পৌনে ১০টা পর্যন্ত চলত ওই বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন বিভাগ। আর সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টে পর্যন্ত চলত প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির ক্লাস।
সম্প্রতি কিন্ডারগার্টেন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষিকারা এসে দেখেন, স্কুল ভবনে অন্য তালা ঝোলান। প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, এখানে ‘অন্য স্কুল’ চলতে দেওয়া হবে না। বিষয়টি জেনে শিশু শিক্ষা নিকেতনের পড়ুয়াদের অভিভাবকরা স্কুলে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন।
মঙ্গলবার থেকে নতুন ক্লাসের পড়াশোনা শুরু হয়। কিন্তু স্কুল ভবনে তালা ঝোলানো থাকায় কিন্ডারগার্টেন বিভাগের পড়ুয়ারা স্কুলে ঢুকতে পারেনি। ক্ষিপ্ত অভিভাবকরা ছেলেমেয়েদের স্কুলের গেটের সামনেই পড়তে বসান। সকাল ১০টা নাগাদ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা এলে বিক্ষোভকারীরা তাঁদের ঢুকতে বাধা দেন বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান নির্মলেন্দু অধিকারী এবং এক আধিকারিক আসেন। নির্মলেন্দুবাবু জানিয়ে দেন, সরকারি স্কুল যেখানে চলে সেখানে অন্য বেসরকারি স্কুল চালানোর অনুমতি দেওয়ার প্রশ্ন নেই।
এরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিভাবকরা। চেয়ারম্যানের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ চলে। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের আধিকারিকরা জানান, শিশু বিভাগের যে পড়ুয়াদের বয়স পাঁচ বছর, তাদের ওই প্রাথমিক স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তার থেকে কম বয়সীদের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বা বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করাতে হবে।
অনেক অভিভাবকই অবশ্য বিষয়টি মানতে পারেননি। পাপিয়া সাহা নামে এক অভিভাবকের কথায়, ‘‘এটা অবিচার। অন্য জায়গা খোঁজার জন্য শিশু শিক্ষা নিকেতনের শিক্ষিকারা এক বছর সময় চেয়েছিলেন। সেটুকুও দেওয়া হল না।’’
নির্মলেন্দুবাবুর অবশ্য বক্তব্য, ‘‘সরকারি স্কুলের চৌহদ্দিতে টাকা নিয়ে অন্য কোনও স্কুল চালাতে দেওয়া হবে না। বিষয়টা জানতে পেরেই প্রাথমিক বিভাগের স্কুল কর্তৃপক্ষকে নোটিস দিয়েছিলাম। জেলার যত জায়গায় এ ভাবে বেসরকারি স্কুল চলে, সব বন্ধ করা হবে।’’