থাকার কথা ৮০ জনের। এখন সেখানে গাদাগাদি করে রয়েছে ২০৩ জন। স্থান, উলুবেড়িয়া মহকুমা উপ সংশোধনাগার। আর এমন অব্যবস্থার জন্য দায়ী, গত ২৪ দিন ধরে রাজ্য আইনজীবীদের কর্মবিরতি।
হাওড়া পুরসভার সামনে বিনা প্ররোচনায় আইনজীবীদের উপরে পুলিশের লাঠি চালানোর অভিযোগের প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে আইনজীবীরা কর্মবিরতি পালন করছেন। মহকুমা প্রশাসন সূত্রের খবর, অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালত এবং আমতা আদালতে ১৪ দিন, ২৪ দিন, ৪২ দিনের মেয়াদে বন্দিদের জন্য জামিনের আবেদন করেন তাঁদের আইনজীবীরা। আবেদনের ভিত্তিতে জামিন পেয়েও যান অনেকে। ফলে সংশোধানাগারে একদিকে যেমন বন্দিরা আসেন। তেমনই আবার অনেকে জামিন পেয়ে বেরিয়ে যান। কিন্তু আইনজীবীদের কর্মবিরতির জেরে কোনও মামলারই শুনানি হচ্ছে না। ফলে সংশোধনাগারে শুধু বন্দিরা ঢুকছেন। জামিন পেয়ে সেখান থেকে বেরোচ্ছেন না কেউই। উলুবেড়িয়া মহকুমা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, কর্মবিরতি চললেও অপরাধ তো আর কমেনি। পুলিশ নিয়মিত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে আনছে। কিন্তু জামিনের মামলার শুনানি হচ্ছে না। তার ফলে বাড়ছে বন্দির সংখ্যা।
উলুবেড়িয়া উপ সংশোধনাগারে ৮০ জন বন্দি থাকার বন্দোবস্ত রয়েছে। তবে সংখ্যাটা থাকে ১৫০-র কাছাকাছি। আর এই অচলাবস্থার জেরে শুক্রবার সেখানে বন্দি সংখ্যা ২০৩। উপ-সংশোধনাগারে রয়েছে চারটি ঘর। ৮০জনের ব্যবহৃত শৌচাগার ব্যবহার করছেন দু’শো জন। গরমের জন্য অতিরিক্ত পাখার ব্যবস্থা করতে হয়েছে বলে মহকুমা প্রশাসনের এক কর্তা জানান। ব্যবস্থা করতে হয়েছে বাড়তি খাবারেরও।
এর সঙ্গে যোগ হয়েছে নজরদারির সমস্যা। মহকুমা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, এমনিতেই সংশোধনাগারে রক্ষীর সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। তার উপরে বন্দির সংখ্যা বাড়ায় ঘুম ছুটেছে সংশোধনাগারের কর্তাদের। মহকুমা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছিলাম, যাতে কিছু বন্দিকে বদলি করা যায়। আমাদের জানিয়ে দেওয়া হয় সব সংশোধনাগারে এক অবস্থা।’’
উলুবেড়িয়া ক্রিমিন্যাল বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুদীপ ঘোষ বলেন, ‘‘বার কাউন্সিল জানিয়েছে আগামী ২১ মে পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে। আমরা বার কাউন্সিলের নির্দেশ মানতে বাধ্য।’’