Panchla

পরিযায়ীদের কাজ দিতে পুরনো জব কার্ডে কোপ

সমিতির সহ-সভাপতি আব্দুল জলিল বলেন, ‘‘ব্লকে মোট তিন হাজার পরিযায়ী শ্রমিক এসেছেন। তাঁদের নতুন জব কার্ড দিতে হলে কিছু পুরনো জব কার্ড বাতিল না-করে উপায় নেই।’’

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২০ ০৫:০৭
Share:

প্রতীকী ছবি

করোনা আবহে গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে জোর দিয়েছে সরকার। পরিযায়ী শ্রমিকদেরও ওই কাজে লাগানোর নির্দেশ জারি হয়েছে। আর তা করতে গিয়ে বহু পুরনো জব কার্ড বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাঁচলা পঞ্চায়েত সমিতি। যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। প্রশ্ন তুলেছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা।

Advertisement

সমিতির সহ-সভাপতি আব্দুল জলিল বলেন, ‘‘ব্লকে মোট তিন হাজার পরিযায়ী শ্রমিক এসেছেন। তাঁদের নতুন জব কার্ড দিতে হলে কিছু পুরনো জব কার্ড বাতিল না-করে উপায় নেই।’’

কেন?

Advertisement

সমিতির কর্তাদের দাবি, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে পরিবারপ্রতি কাজের গড় দিন খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, কাজের গড় দিন বেশি হলে পরের বছরের বরাদ্দ বাড়ে। কাজের গড় দিন ঠিক হয় ব্লকে মোট যত জব কার্ড আছে, তার সংখ্যাকে কতদিন মোট কাজ হল তার সংখ্যা দিয়ে ভাগ করে। পাঁচলায় এখন যা জব কার্ড আছে, তার সঙ্গে পরিযায়ী শ্রমিকদের জব কার্ড যোগ হলে শেষ পর্যন্ত পরিবারপ্রতি কাজের গড় দিন কমে যাবে। সেই কারণেই তাঁরা পুরনো কিছু জব কার্ড বাতিল করতে চাইছেন। তা হলে জব কার্ডের মোট সংখ্যা খুব একটা বাড়বে না। পরিবারপ্রতি কাজের গড় দিনও ঠিক থাকবে।

জেলার অন্য ব্লকেও পরিযায়ী শ্রমিকেরা ফিরেছেন। তাঁরাও জব কার্ড পাচ্ছেন। কিন্তু ওই সব ব্লককে পাঁচলার পথে হাঁটতে হচ্ছে না। জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানান, কার্ড বাতিল করতে হলে নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করা যায়। তবে, এখন তার দরকার নেই। একটা সময়ে পরিবারপ্রতি কাজের গড় দিনের উপরে গুরুত্ব দেওয়া হত ঠিকই, তা নিয়ে বিভিন্ন ব্লকে প্রতিযোগিতাও হত। কিন্তু দু’বছর ধরে আর পরিবারপ্রতি কাজের দিনের গড়ের উপরে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। উল্টে এ বছর করোনার জন্য বলা হয়েছে, যত বেশি সম্ভব প্রকল্প করে পরিযায়ী শ্রমিক এবং অন্যদের লাগাতার কাজ দিতে। সেটাই বার বার বলা হচ্ছে।

আমতা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকান্ত পাল বলেন, ‘‘আমরা সেচ দফতরের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে ৪১টি জায়গায় নদীবাঁধে মাটি ফেলছি। এতে সদ্য কার্ড পাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকেরাও কাজ করছেন।’’ ডোমজুড় পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রেও জানানো হয়েছে, পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য তারা নতুন নতুন কাজের সুযোগ তৈরি করছে।

তা হলে পাঁচলা পঞ্চায়েত সমিতিকে পুরনো জব কার্ড বাতিল করতে হচ্ছে কেন?

সমিতির সহ-সভাপতির দাবি, তাঁরাও কাজের নতুন ক্ষেত্র তৈরি করছেন। মোট ২৮টি ক্ষেত্র চিহ্নিত করে জবকার্ডধারীদের দিয়ে কাজ করাচ্ছেন। যে সব জব কার্ড বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেগুলির অধিকাংশ নিষ্ক্রিয়। বাংলা আবাস যোজনা, গীতাঞ্জলি প্রভৃতি প্রকল্পে বাড়ি পাওয়ার জন্যই গ্রামবাসীদের একাংশ জব কার্ড নিয়েছিলেন। তাঁদেরই জব কার্ড বাতিল হচ্ছে। যে সব পুরনো জবকার্ডধারী নিয়মিত কাজ করছেন, তাঁদের একজনেরও কার্ড বাতিল করা হচ্ছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন