টাকা পৌঁছতে দেরি, জরিমানা ডাকঘরকে

ডাকঘরের মাধ্যমে আত্মীয়ের কাছে টাকা পাঠিয়েছিলেন অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে টাকা পৌঁছয়নি। তার জেরে কম হয়রানিতে পড়তে হয়নি তাঁকে। এরপরই ওই শিক্ষক হুগলি জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হ‌ন।

Advertisement

প্রকাশ পাল

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৭ ০২:৪৫
Share:

ডাকঘরের মাধ্যমে আত্মীয়ের কাছে টাকা পাঠিয়েছিলেন অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে টাকা পৌঁছয়নি। তার জেরে কম হয়রানিতে পড়তে হয়নি তাঁকে। এরপরই ওই শিক্ষক হুগলি জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হ‌ন। ওই শিক্ষককে এ ভাবে নাকাল করার জন্য অবশেষে ডাকঘরকে জরিমানার নির্দেশ দিল আদালত। রায় শুনে শশধর পণ্ডা নামে ওই শিক্ষকও বেজায় খুশি।

Advertisement

শশধরবাবু হুগলি মহসিন কলেজের সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। ২০১৪ সালের মার্চ মাসে তিনি চুঁচুড়া মুখ্য ডাকঘর থেকে হাওড়ার শ্যামপুরে এক আত্মীয়কে ইলেকট্রনিক মানি অর্ডারের মাধ্যমে এক হাজার টাকা পাঠান। তিনি জানান, দু’-এক দিনের মধ্যেই ওই টাকা পৌঁছে যাওয়ার কথা। কিন্তু কয়েক দিন পরে ওই আত্মীয় শশধরবাবুকে জানান, টাকা পৌঁছয়নি। শশধরবাবু মুখ্য ডাকঘরে যোগাযোগ করেন। তাঁকে জানানো হয়, টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই প্রাপকের কাছে পৌঁছে যাবে। কিন্তু তা হয়নি। এরপর বারেবার ওই শিক্ষক ডাকঘর কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানান। কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিলেও সমাধান হয়নি।

উপায়ান্তর না দেখে ডাকঘরের উত্তর হুগলি ডিভিশনের সুপারিন্টেন্ডেন্টের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন শশধরবাবু। ডাকঘর কর্তৃপক্ষ তাতেও তেমন উচ্চবাচ্চ্য করেননি বলে তাঁর অভিযোগ। শশধরবাবু বলেন, ‘‘টাকাটা আমার ওই আত্মীয়ের দরকার ছিল। টাকা না পেয়ে তিনি আমাকে ভুল বোঝেন। তিনি আমাকে একটি চিঠিও পাঠান, যার বক্তব্য আমার পক্ষে সম্মানহানিকর। এত অসম্মানিত কোনও দিন হইনি। ওঁর সঙ্গে আমার সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়। ডাকঘরের গাফিলতিতেই এটা হয়।’’

Advertisement

অবশেষে মাস দু’য়েক পরে ওই টাকা প্রাপকের কাছে পৌঁছয়। তবে, মানসিক যন্ত্রণা এবং হয়রানির অভিযোগে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে ডাকঘর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওই শিক্ষক। দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে আদালতের পর্যবেক্ষণ, ডাকঘরের গাফিলতিতেই মানি অর্ডার পৌঁছতে অনেক দেরি হয়েছে। যার জেরে অবসরপ্রাপ্ত, বৃদ্ধ ওই শিক্ষককে অকারণে যথেষ্ট মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছে। ডাকঘরের কর্মীদের উপর কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ নিয়েও
প্রশ্ন ওঠে।

আদালতের সভাপতি বিশ্বনাথ দে এবং দুই সদস্য দেবী সেনগুপ্ত এবং সমরেশকুমার মিত্র ডাকঘর কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন, মানসিক যন্ত্রণা এবং হয়রানির জন্য শশধরবাবুকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে তিন হাজার টাকা দিতে হবে। মামলা চালানোর খরচ বাবদ আরও দু’হাজার টাকা দিতে হবে। এক মাসের মধ্যে ওই টাকা না দিলে প্রতিদিন‌ আরও ২০০ টাকা করে যোগ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে বাড়তি ২০০ টাকা ক্রেতা আইনি পরিষেবা তহবিলে জমা পড়বে। শশধরবাবু বলেন, ‘‘কমিশন নিয়ে তবেই ডাকঘর আমার টাকা পাঠানোর দায়িত্ব নিয়েছিল। কিন্তু যথাসময়ে পরিষেবা না দেওয়ার ফল ভুগতে হয় আমাকে। আদালতে রায়ে মানসিক শান্তি পেলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন